পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ممرا নহে। প্রশ্ন উঠিল এই হিলিয়ম্ পরমাণুগুলি আসে কোথ৷ হইতে । রাদারফোর্ডের বিশ্বাস যে পরমাণুর কোষমধ্যেই (অ্যাটােমিক নিউক্লিয়াসেই)এই হিলিয়ম্ পরমাণুগুলি অবস্থান করে এবং ইহারাই পরমাণুর সমগ্র ভারের জন্য দায়ী । তড়িৎসংযুক্ত এই হিলিয়ম্ পরমাণুগুলিকে বলা হয় প্রোটন। সুতরাং দেখা যাইতেছে যে পরমাণুর অন্তঃস্থিত প্রোটন ও ইলেকট্রন যথাক্রমে সংযোগ ও বিয়োগতড়িৎ বহন করে। পরস্থ প্রোটন ইলেকট্রন অপেক্ষ। প্রায়ু ছয় সহস্র গুণ অধিক ভারী। সুতরাং মনে করিতে পারি যে পরমাণুর ভfর নির্ভর করে সংযোগ-তড়িংযুক্ত কণিকাগুলির উপর, কারণ প্রোটনের তুলনায় ইলেক্ট্রনগুলির ভার যৎসামান্ত। ইহা হইতেই দেখা যাইতেছে, রাদারফোর্ডের এই পরমাণুবাদ স্বীকার করিয়া লইলে রেডিয়ম্ জাতীয় বিশ্লেষণ স্বচার ভাবে ব্যাখ্যা করা যাইতে পারে। রাদারফোর্ডকে ও র্তাঙ্গীর এক ভূতপূৰ্ব্ব বিদেশী শিষ্কোর নিকট আংশিক পরাজয় স্বীকার করিতে হইয়াছে। গত বৈশাখ সংখ্যার প্রবাসীতে কোপেনহেগেন-নিবাসী অধ্যাপক নীলস্ বোরের অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দিবার চেষ্টা করা হইয়াছে । বোরের আণবিক মতবাদই বৰ্ত্তমান সময়ে শ্রেষ্ঠ পরমাণুবাদ বলিয়া স্বীকৃত হয়। মুখে । বিষয়—বাংলা দেশেও এই নুতন বিষয়ের গবেষণা আরম্ভ হইয়াছে এবং খ্যাতনাম দুই-একজন বাঙ্গালী বৈজ্ঞানিকের এই বিষয়ের গবেষণা বিদেশে সাদরে গৃহীত श्हेब्रएक्क । পরমাণুর প্রকৃতির আর-এক নুতন আলোক প্রদান করিয়াছেন দুইজন বিখ্যাত ইংরেজ বৈজ্ঞানিক সডি এবং অ্যাস্টন। অনেকের স্মরণ থাকিতে পারে যে বৰ্ত্তমান বর্ষে অ্যাস্টন রসায়ন শাস্বে নোবেল পুরস্কার পাইয়াছেন। বৃদ্ধ বৈজ্ঞানিক সার জে জে টমসনের অনুরোধে অ্যাস্টন পরীক্ষামূলক গবেষণার সাহায্যে প্রমাণ করিয়াছেন কোনোএকটি মূল পদার্থের পরমাণুগুলির সকলেই যে সমভরবিশিষ্ট এমন নহে ; ফলতঃ স্থলবিশেষে একই প্রকারের পরমাণুর মধ্যে ক্রম বিভাগ থাকিতে পারে। দৃষ্টান্ত প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড স্বরূপ বলা যাইতে পারে যে, সাধারণ রাসায়নিক প্রক্রিয়ার সাহায্যে সীসকের আণবিক ভার নির্ণয় করিলে দেখা যায় যে সীসক-পরমাণু হাইড্রোজেন-পরমাণু অপেক্ষ দুই শত সাত গুণ ভারী অর্থাৎ সীসকের আপেক্ষিক আণবিক ভার ২০৭ । কিন্তু ইহা হইতে প্রমাণিত হয় না যে সকল সীসক পরমাণুগুলিরই ভার এই সংখ্যা দ্বারা নির্দিষ্ট হইতে পারে। এই পর্যন্ত বলা যাইতে পারে যে, সাধারণ সীসকের পরমাণুর ভার গড়ে দুইশত সাত । বস্তুতপক্ষে এরূপ মনে করিবার যথেষ্ট কারণ বর্তমান সে বস্বতে দুই বা ততোধিকরূপ পরমাণু বিদ্যমান থাকে। স্বতবাং দেখা যাইতেছে ড্যালটনের পরমাণুবাদ যাহার মতে মূল পদার্থের সমস্ত পরমাণুই সমভার-বিশিষ্ট ও সমধৰ্ম্মী এবং যাহা প্রায় একশত বৎসর ধরিয়৷ বৈজ্ঞানকের নতমস্তকে মানিয়া লইয়াছেন—তাহার মধ্যেও গলদ বাহির হষ্টয়া পড়িয়াছে । রসায়নশাস্ত্রে অনভিজ্ঞ লোকে জিজ্ঞাস করিতে পারেন, এই নিত্য পরিবর্তনশীল আণবিক মতবাদ লইয়। রাসায়নিক পরীক্ষামূলক গবেষণা চলে কেমন করিয়া ! উত্তরে বলা যাইতে পারে যে ড্যালটনের মতবাদ বৃদ্ধ হইয় পড়িলেও এখনও সম্পূর্ণ কাৰ্য্যের অনুপযুক্ত হইয়া পড়ে নাই—নূতনের মোতে রাসায়নিক পুরাতনকে নিৰ্ম্মমভাবে পরিত্যাগ করেন নাই। নূতন আবিষ্কারের ঔজ্জল্যে আমরা ভুলিতে পারি না যে রসায়নের সেই শৈশবযুগে যদি বার্জিলিয়ম, ড্যাল্টন, ক্যানিজেরো না থাকিতেন তবে আধুনিক যুগের এসকল “চমকপ্রদ” আবিষ্কার সম্ভবপর হুইত না । অৰ্দ্ধ বা এক শতাব্দীর পরে এইসকল নিব আবিষ্কার, যাহা লইয়। আধুনিক যুগের বৈজ্ঞানিকগণ গৌরব অন্তভব করিতেছেন, সম্ভবতঃ ভ্ৰমাত্মক প্রতিপন্ন হইবে—মুতরাং বৈজ্ঞানিক যদি গত শতাব্দীর প্রথমভাগের আবিক্রিয়াগুলিকে মূল্যহীন বলিয়া নাসিক সঙ্কচিত করেন তবে এক শতাব্দী পরে তাহাল নিজের অবস্থা কি দাড়াইবে তাহ ভাবিয়া দেখিতে হুইবে । ঐ স্থবোধকুমার মজুমদার