পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] কর্তৃক ছিপি-আঁাটা বোতলের মতন খালের মধ্যে আটকে গেল—বার নদীতে যেয়ে যুদ্ধ দেবার ক্ষমতা তাদের আদৌ রইল না। তবুও তাদের বিক্রমে রোজারিও অনেকক্ষণ পৰ্য্যন্ত কিছু করে উঠতে পাৰ্বলে না। কীৰ্ত্তি রায়ের নৌ-বহর দুৰ্ব্বল ছিল না, কীৰ্ত্তি রায়ের গড় থেকে পর্তুগীজ, জলদস্থ্যদের অডিড সদ্বীপ খুব দূরে নয়, কাজেই কীৰ্ত্তি রায়কে নৌ-বহর স্বদূঢ় করে’ গড়তে হয়েছিল। বড় নদীর বিশাল জলরাশি জুড়ে অবসন্ন স্বৰ্য্যরশ্মি যখন রক্ত-শয়ন পাত লে,রোজারিওর কামানের মুখে গড়ের পশ্চিম দিক্‌ট। তখন একেবারে হুম্ড়ি খেয়ে পড়েছে। নরনারায়ণ রায় দেখলেন প্রায় ত্রিশখান কোষ জখম অবস্থায় খালের মুখে পড়ে, কীৰ্ত্তি রায়ের গড়ের কামানগুলো সব চুপ, নদীর দু’পাড় ঘিরে সন্ধ্যা নেমে আসছে, উৰ্দ্ধে নিস্তব্ধ নীল আকাশে কেবলমাত্র এক ঝাক শকুনি কীৰ্ত্তি রায়েব গড়ের ওপর চক্রাকারে ঘুরছিল - - - - - - হঠাৎ বিজয়োম্মত্ত নরনারায়ণ রায়ের চোখের সম্মুখে বন্ধুপত্নীর বিদায়ের রাতের সন্ধ্যার পদ্মের মতন বিষাদভরা মান মুখখানি, কাতর মিনতিপূর্ণ সেই চোখ দুটি মনে পড় ল—তীব্র অনুশোচনায় তার মন তখনি ভরে উঠল ...তিনি করেছেন কি ! এইরকম করে কি তিনি তার স্নেহময়ী প্রাণদাত্রীর শেষ অনুরোধ রাখতে এসেছেন ? নরনারায়ণ রায় হুকুম জারি করলেন কীত্তি রায়ের পরিবারের এক প্রাণীর ৪ যেন প্রাণহানি না হয় । একটু পরেই সংবাদ এল, গড়ের মধ্যে কেউ নাই । নরনারায়ণ রায় বিস্মিত হলেন । তিনি তখনি নিজে গড়ের মধ্যে ঢুকূলেন। তিনি এবং গঞ্জালেস গড়ের সমস্ত অংশ তন্ন তন্ন করে খুজলেন—দেখলেন সত্যই কেউ নেই। পর্তুগীজ, বহরের লোকের গড়ের মধ্যে লুটপাট করতে গিয়ে দেখলে মূল্যবান দ্রব্যাদি বড় কিছু নেই। পরদিন দ্বিপ্রহর পর্য্যন্ত লুটপাট চলল.কীৰ্ত্তি রায়ের পরিবারের এক প্রাণীরও সন্ধান পাওয়া গেল না । অপরাহ্লে কেবলমাত্র দুথান স্বলুপ খালের মুখে পাহার রেখে নরনারায়ণ রায় ফিরে চলে গেলেন । এই ঘটনার দিন কয়েক পরে পর্তুগীজ, জলদস্থ্যর Saー2 অভিশপ্ত چNDR SS SSAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSAS SS *m. দল লুটপাট করে চলে গেলে কীৰ্ত্তি রায়ের গড়ের এক কৰ্ম্মচারী গড়ের মধ্যে প্রবেশ করে। আক্রমণের দিন সকালেই এ লোকটি গড় থেকে আরও অনেকের সঙ্গে পালিয়েছিল। একটা বড় থামের আড়ালে সে দেখতে পায় একজন আহত মুমুঘু লোক তাকে ডেকে কি বলবার চেষ্টা করছে। কাছে গিয়ে সে লোকটাকে দিলে— লোকটি কীৰ্ত্তি রায়ের পরিবারের এক বিশ্বস্ত পুরোনে কৰ্ম্মচারী। তার মৃত্যুকালীন অস্পষ্ট বাক্যে আগম্বুক কৰ্ম্মচারিটি মোটামুটি যা বুঝলে, তাতেই তার কপাল ঘেমে উঠল। সে বুঝলে কীৰ্ত্তি রায় তার পরিবারবর্গ এবং ধনরত্ব নিয়ে মাটিব নীচের এক গুপগৃহে আশ্রয় নিয়েছেন এবং এই লোকটিই একমাত্র তার সন্ধান জানে। তখনকার আমলে এই গুপ্তগুহ গুলি প্রায় সকল বাড়ীতেই থাকৃত এবং এর ব্যবস্থা এমন ছিল যে বাইরে থেকে কেউ এগুলো না খুলে দিলে তা থেকে বেরুবার উপায় ছিল না। কোথায় সে মাটির নীচের ঘর তা স্পষ্ট করে বলবার আগেই আহত লোকটা মার গেল। বহু অনুসন্ধানেও গড়ের কোন অংশে সে গুপ্ত গৃহ ছিল তা কেউ সন্ধান করতে পারলে না। এইরকমে কীৰ্ত্তি রায় ও তার পরিবারবর্গ অনাহারে তিলে তিলে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে গড়ের যে কোন নিভূত ভূগর্ভ কক্ষে মৃত্যুমুখে পতিত হলেন তার আর কোন সন্ধান হ’ল না—সেই বিরাটু প্রাসাদ-দুর্গের পর্বত-প্রমা মাটিপাথরের চাপে হতভাগ্যদের শাদা হাড়গুলো :ে কোন বায়ুশূন্ত অন্ধকার ভূকক্ষে তিলে তিলে গুড়ে হচ্ছে, কেউ তার সন্ধান পৰ্য্যস্ত জানে না । ওই ছোট খালটা প্রকৃতপক্ষে সন্দ্বীপ চ্যানেলের একট খাড়ি । খাড়ির ধার থেকে একটুখানি গেলে গভী অরণ্যের ভিতর কীৰ্ত্তি রায়ের গড়ের বিশাল ধ্বংসস্ত, এখনও বৰ্ত্তমান আছে। খাল থেকে কিছু দূরে অরণ্যে মধ্যে দুই সার প্রাচীন বকুল গাছ দেখা যায়, এখন এ বকু গাছের সারের মধ্যে ছর্ভেদ্য জঙ্গল আর শূলে কাটার বন, তখন এখানে রাজপথ ছিল । আর খানিকট গেলে একটা বড় দীঘি চোখে পড়বে। তারই দক্ষি, কুঁচো ইটের জঙ্গলাবৃত স্তুপে অৰ্ধ-প্রেথিত হাঙ্গর-মুঃে