পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] রাজপথ thసెన

বিমলা বলিল, “য়ুম ভাঙিলে আমি প্রায়ই দেখি– মেজদিদি জেগে আছেন। জিজ্ঞাসা করলে বলেন, अब्जर्भ হচ্ছে। তা ছাড়া,—” কথাটা বলিতে গিষা বিমলা থামিয়া গেল। প্রশ্নের বহির্ভূত কোনও কথা ন৷ বলাই উচিত বলিয়া তাইণর মনে হইল । জয়ন্তী কিন্তু সাগ্রহে প্রশ্ন করিলেন,“তা ছাড়া কি ?” তথন স্তুগত্যা বিমলা বলিল, “তা ছাড়া, প্রত্যহ শোবার আগে আর ঘুম ভাঙার পর দক্ষিণমূথে হয়ে হাত জোড করে মেজদিদি অনেকক্ষণ প্ৰণাম করেন।” সবিস্ময়ে জয়ন্তী বলিলেন, “প্রণাম করে ? কাকে প্রণাম করে ?” প্রশ্ন করিয়াই কিন্তু জয়ন্তীর মনে সঙ্গস একটা কথা বিদ্যুতের মত ফুরিত হইল। তাহার পর সঙ্গে-সঙ্গেই তৎসংলগ্ন আর-একটা কথা মনে হওয়ায় নিজ অহমানের সত্যাসত্য নিরূপণের জন্য প্রশ্ন করিলেন, “তুমি ত আগে উত্তর দিকে মাথা কবে শুতে, দক্ষিণদিকে মাথা করে কবে থেকে শুচ্ছ !” বিমলা বলিল, “মেজদিদি এঘরে শুতে আরম্ভ করে" পৰ্য্যন্ত । প্রথম দিনেই মেজদিদি বালিশ উত্তরদিক থেকে দক্ষিণদিকে করে দিয়েছিলেন ।” জয়ন্তী আর কোনও কথা জিজ্ঞাসা করিলেন না । দক্ষিণ মুখ হইয়া স্থমিত্র। যে আলিপুর জেলে অৱস্থিত স্বরেশ্বরকে প্রণাম কবে এবং উত্তর দিকে মাথা করিয়া শয়ন না করিবার উদ্দেশ্য স্বরেশ্বরের দিকে পদ প্রসারিত করিয়া শয়ন না করা, তদ্বিষয়ে তাহার আর কোনও সংশয় রহিল” না । ভারাক্রান্তচিত্তে জয়ন্তী গৃহকৰ্ম্মে লিপ হইলেন । সমস্তদিন ঘুরিতে-ফিরিতে জয়ন্তী স্বমিত্রাকে লক্ষ্য করিলেন। যতবার যতভাবে তাহাকে দেখিলেন,তুতবারই মনে হইল—পূর্বের সে স্থমিত্রা আর নাই ; মনে হইল তাহার হাস্তদীপ্ত মুখ মণ্ডল বিষাদের স্বল্প ছায়া পডিয়াছে। চক্ষের উজ্জল ঘনকৃষ্ণ তারকা মান হইয়া আসিয়াছে এবং তট হইতে জলস্রোতের মত, সমস্ত দেহ হইতে স্বাস্থ্য এবং সৌষ্ঠব দূরে সরিয়া যাইতে আরম্ভ করিয়াছে ! স্থমিত্রার স্তব্ধ গভীর আকৃতি নিরীক্ষণ করিয়া জয়ন্তী সন্ত্রস্ত হইলেন, স্বামত্রার হাস্য-করুণ মূৰ্ত্তি দেখিয়া জয়ন্তীর চক্ষে জল আসিল ! তাহার পর কিছুক্ষণ ধরিয়া জয়ন্তীর হৃদয়ে ক্রোধ, অভিমান, সঙ্কোচ, দার্ট প্রভৃতি বিভিন্ন মনোবৃত্তিৰ সহিত মাতৃ-স্নেহের দ্বন্দ্ব চলিল। অবশেষে বহু বাধা এবং দ্বিধা অতিক্রম করিয়া মাতৃ-স্নেহই জয় লাভ করিল। বৈকালে গা ধুঙ্গয় স্থমিত্র। স্নান-ঘর হইতে বাহির হইতেই জয়ন্ত্ৰী তাহাকে নিজ কক্ষে ডাকিয়া ব্লষ্টয়া গেলেন । কক্ষে প্রবেশ করিয়া ঔংস্নক্যের সহিত স্থমিত্রা বলিল, “কি মা ।” জয়ন্তী স্নেহভরে স্বমিত্রার পৃষ্ঠে হাত বুলাইতে বুলাইতে বলিলেন, “এমন ৰোগা হ’য়ে যাচ্ছিস্ কেন স্থমিত্ৰা ।” মাতার কথা শুনিয়া স্বমিত্রা হাসিয়া ফেলিল ; বলিল, “এই কথা মা ! আমি মনে করছিলাম কত বড় কথাই না শুনব !” তাহার পর নিজের দেহের উপর একবার দৃষ্টি বুলাষ্টয়া বলিল, “রোগা হ’য়ে যাচ্ছি। কই আমি ত কিছু বুঝতে পারিনে ৷” “আমি যে বুঝতে পারছি! রাত্রে ঘুম হয় না কেন ? বল দেখি ?” স্থমিত্রা হাসিয়া বলিল, “যুম হবে না কেন ? ঘুম হ’তে দেরি হয় । সনিৰ্ব্বন্ধে জয়ন্তী বলিলেন, “কেন দেরী হয় সেই কথাই ত জিজ্ঞাসা করছি। শোন স্বমিত্ৰা ! আমি তোর মা, আমার কাছে কোনা কথা লুকোস্লে ! বাপের সঙ্গে দেশোদ্ধারের পরামর্শ করতে হয় করিস, কিন্তু স্থখদুঃখের কথাটা তোর মার জন্যেই রাথিস্ ! তুই সত্যি করে বল, কেন তুই এমন শুকিয়ে যাচ্ছিল। এই শীতের রাত্রে গরমই বা তোর কেন হয়, আর ঘুমই বা, কেন হয় ন। আমাকে খুলে বল ! মিথ্যে কথা বলিস্নে।” সুমিত্রা বলিল, “মিথ্যা কেন বলুন মা ? মিথ্যা কথা কখন ত তোমার কাছে বলিনি।” “তবে বল।” • একট চুপ করিয়া থাকিয়া তাঙ্গর পর মুখ তুলিয়া চাহিয়া স্মিতমুখে স্বমিত্রা বলিল, “f দিনের বেলা কাজে