পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাতিক বিবিধ প্রসঙ্গ—কলিকাতায় খান আবদুল গফফার খানের সম্বদ্ধন৷ ১৫৯ পূজায় পশুবলি দুর্গাপূজা ও কালীপূজা উপলক্ষ্যে অনেক পশুবলি হইবে আমরা বলির বিরোধী। স্বৰ্গীয় পণ্ডিত শল্লচন্দ্র শাস্ত্রী নিষ্ঠাবান শাস্ত্রজ্ঞ হিন্দুর দিক হইতে কয়েক বৎসর পূৰ্ব্বে ‘প্রবাণী’তে পশুবলি যে শাস্ত্রীয় বিধি অনুসারেও অত্যাবশ্যক নহে, তাহা দেখাইয়াছিলেন । বাবু রাজেন্দ্রপ্রসাদকে কংগ্রেস সভাপতি নির্ববাচন বোম্বাহয়ে কংগ্রেসের আগামী অধিবেশন হইবে । বিহারের কংগ্রেসনেতা বাবু রাজেন্দ্রপ্রসাদ তাহার সভাপতি নিৰ্ব্বাচিত হইয়াছেন । এই নির্বাচন ঠিক হইয়াছে । ইহার আগেই কোন অধিবেশনের সভাপতি ইহাকে করা উচিত ছিল । তিনি বিদ্বান ও কম্মিষ্ট ব্যক্তি। তিনি দখল ওকালতী ছাড়িয়া অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন, তথল ওকালতীতে র্তাহীর বেশ পসার ছিল এবা পসার ক্রমশ: ব'ড়িতেছিল । কলিক্রম তাহার হাইকেটের জজ হওয়া আশ্চর্য্যের বিস্ময় হইত না । অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় তাহার সাংসারিক অসুবিধা খুবই হইয়াছে । তাহীকে কারারুদ্ধও হইতে হঠয়ছিল। বিহারে ভূমিকম্পের পূৰ্ব্বেও তিনি জনহিতকর কাজে ব্যাপৃত থাকিতেন। ভূমিকম্পের পরে সে তিনি বিপন্নদের সহায়ক প্রধান কৰ্ম্মী হইয়া আছেন, ইহা সংবাদপত্রের পাঠকমাত্রেই জানেন । তিনি চরিত্রবান নম প্রকৃতির মানুষ । কলিকাতায় খান আবদুল গফফর খানের সম্বদ্ধনা কলিকাতার নাগরিকগণ টাউন হলে সমবেত হইয়া পান আবদুল গফফর খানের সম্বন্ধন দ্বারা গুণীর আদর করিয়াছেন । তিনি উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের রণদক্ষ পাঠানদের মধ্যে অহিংসাবাদ প্রচার করিয়া “সীমান্ত গান্ধী” আখ্যা পাইয়াছেন । টাউন হলে সম্বৰ্দ্ধনার উত্তরে তিনি বলেন, ভারতবর্ষ হিন্দু মুসলমান সকলেরই দেশ । ভারতবর্ষে যে-কেহ স্থায়ী ভাবে বাস করে, ইহ্ তাহারই দেশ, ইহা সত্য কথা । কিন্তু “আমার দেশ” বলিলে কে কি বুঝে, তাহার আলোচনাও, অন্ততঃ মনে মনে, সকলের করা উচিত, এবং আত্মপরীক্ষা করা উচিত। লোহার সিন্দুক ও তাহার মধ্যস্থিত টাকাগুলি আমার, রসগোল্লার হাড়িটি আমার, অর্থগ্র ও পেটুক লোক এরূপ বলিলে তাহার উক্তিতে “আমার” শব্দের মানে যাহা হয়, “আমার দেশের” “আমার’ শব্দের অর্থ কেবলমাত্র বা প্রধানতঃ তাহ হওয়া উচিত নয় । “আমার দেশ” বলিতে প্রকৃত দেশভক্ত লোক ইহা বুঝেন না, যে, ইহার ধন রত্ন খণ্ডুবিধাগুলি আমার, কিন্তু ইহার জন্য দুঃখভোগ ও আত্মোৎসর্গ করিবার অধিকার বা দায় অন্তের, ইহার সেবা করিবার ভার অষ্ঠের । বস্তুতঃ দেশের লোকদের সেবা ধে করিবে, দেশের নৈসৰ্গিক সম্পদ দেশের লোকদের কাজে মে লগাঙ্গবে, দেশকে নদর, স্বাস্থ্যকর, কার্যসৌকর্য্যময় যে করিবে ও রাখিবে, দেশ তাহার । খান অবতুল গফফর খানের এবং ঠাহীর মত অঙ্গ লোকদের ভারতবর্মকে “আমার দেশ” বলিবার অধিকার আছে । অল্পদিন পূৰ্ব্বে আলীগড় বিশ্বক"." : ছাত্রদের সভায় একটি বিতর্ক হয় । ছাত্রের মুসলমান। এক জন ছাত্র এই প্রস্তাব পেশ করেন, যে, “মুসলমানদের ভারতবষে থাকিবার অধিকার নাই” । ইহার সপক্ষে বক্তৃতা ছাত্রেরা করেন, বিপক্ষে বক্তৃতা বয়োবৃদ্ধ খেতাবধারী মুসলমানের করেন । শেষে ভোট লওয়ায় খুব বেশী ভোটের জোরে প্রস্তাবটি সভায় গৃহীত হয়। ইহার সপক্ষে যাহারা বক্তৃত। করেন, তাহদের প্রধান যুক্তি এই ছিল, নে, মুসলমান নেতার স্বfর্থপর এবং নিজেদের সাংসারিক সুবিধা দেখেন : দেশকে স্বাধীন করিবার চেষ্টা না-করিলে, তাহার কল্যাণচেষ্টা লা-করিলে সে-দেশের অধিবাসী হইবার অধিকার কাহারও নাই। এই শেষোক্ত কথাটি সত্য। কিন্তু আলীগড়ের ছাত্রদের বিতর্ক-সভায় যে প্রস্তাব গৃহীত হইয়াছে, তাহা সৰ্ব্বাংশে স্তায্য বলিয়া আমরা মনে করি না । কারণ, ভারতের সব মুসলমান-নেতা বা সব সাধারণ মুসলমান স্বার্থপর ও কেবল নিজ নিজ সাংসারিক সুবিধা দেখেন, ইহা সত্য নহে । তাঁহাদের মধ্যেও পরার্থপর ও দেশসেবক লোক আছেন । অঙ্গ দিকে হিন্দুদের মধ্যে স্বার্থপর ও স্বচুবিধা-লোলুপ নেতা ও সাধারণ লোকের অভাব নাই । সুতরাং মুসলমানদের অনেকের স্বার্থপরতার দোষে যদি ভারতবর্ষের সাত কোটি মুসলমানের কাহারও ভারতবর্ষে থাকিবার অধিকার নাই বলা হয়, তাহ হইলে এমন অন্ততঃ সাত কোটি হিন্দু খুজিয়া বাহির কর কঠিন হইবে না যাহাদেরও ভারতবর্ষে থাকিবীর অধিকার নাই । ভারতবর্ষের হিন্দু ও অহিন্দুদের মধ্যে একটি প্রভেদ উল্লেখযোগ্য। ভারতপ্রেমিক কোন হিন্দু তাহার হৃদয়ে কোন দেশকে ভারতবর্ষের চেয়ে উচ্চ স্থান দেন না, কিন্তু ভারতপ্রেমিক অহিন্দু তাহ দিতে পারেন। অবশ্য হিন্দু হইয়া জন্সিয়াও যে কেহই সুবিধালাভ বা অন্ত কারণুে