পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

వీని83 Sh8 করেন । ননকের “জপঞ্জী" হইল শিখধৰ্ম্মের সার ও মুলহুত্র। ইহা প্রত্যক শিখ-ভক্তের প্রভাতে নিতাস্মরণীয়। গুরু গোবিন্দের “জাপজী” হইল ৰিধতার সক্ষত্র নাম । গুরু গোবিনা বিধাতার যে-সব বীরত্বস্থচক নাম বিশেষ ভাবে চালাইয়াছেন তাহার মধ্যে কয়েকটি বেশ ভাবিয়া দেখিবার মত —অকাল, সৰ্ব্বকাল, মহানুকাল, অসিধ্বজ, অসিকেতু, থালকেতু, অসিপাণি, সৰ্ব্বলোহ (লৌহময় ), মহানলোহ ইত্যাদি। গ্রন্থসাহেবে গুরু নানক, অঙ্গদ, অমরদাস, রামদাস, অৰ্জুনের বাণী ছিল । কৰ্ত্তারপুরে যে মূল আদি গ্রন্থসাহেব আছে তাহীতে নবম গুরু তেগ বাহাদুরের কোন পদ নাই । গুরু গোবিন্ধ দমদমার মঠের গ্রন্থসাহেবে তেগ বাহাদুরের পদাবলীর স্থান করিয়া দেন, গোইনাৱাল ও খাদুরের মাঝামাঞ্চি একটি স্থানের নাম পরে হয় “দমদমা ।” গুরু অমরদাস তাহার গুরুপদ গ্রহণের পুৰ্ব্বে প্রতিদিন প্রভাতে গোইশাৱলি ও থাকুরের মধ্যে যতিয়াতের মাঝে ঐখানে একটু বিশ্রাম করিতেন ও জপঞ্জী পাঠ করিতেন ! “দমদমা” শব্দের অর্থই হইল একটু বিশ্রাম অর্থাৎ দম লইবার স্থান । সেইখানে পরে এক শিধমঠ প্রস্তুত হয় । গুরু গোবিন্দেরও একটি শ্লোক গ্রন্থসাহেবের মধ্যে গৃহীত হয় । গ্রন্থসাহেবের মধ্যে শিখধৰ্ম্মের বাহিরের এই কয় জন ভক্তের পদ গৃহীত হইয়াছে :-জয়দেব, নামদেব, ত্রি:লাচন, পরমানন্দ, সধন, বেণী, রামানন, ধনূনা, পীপ, সৈন, কবীর, রবিদাস, সুরদাস, ফরীদ ও ভীখন । ফরীদ ও ভীখন এই দুই জন মুসলমান-বংশীয় ভক্ত। পুর্বেই বলা হইয়াছে, ভাই বল্লার সংগ্রহ মীরা বাঈরও একটি পদ আছে ও সারংগ রাগে স্থরদাসের দুইটি পুরা পদ আছে । আদি গ্রন্থসাহেবে স্থরদাসের একটি পুরা পদ ও একটি পংক্তি মাত্র আছে। ভাই বল্লো তাহার সংগ্রহে সেই পংক্তিযুক্ত পদটি পূর্ণ করিয়া দিয়াছেন । গুরু অৰ্জুন নিঙ্গের মুখে আদি গ্রন্থসাহেবের পদগুলি লিখাইলেও নিজেকে ভগবানের দিক হইতে প্রত্যাদিষ্ট মনে করিয়া এই পদগুলি সংগ্ৰহ করাইয়াছেন যখন সম্রাট জহি জীর এই গ্রন্থসাহেব হইতে মুসলমান ধর্শের বিরুদ্ধে উচ্চবিত বাণীগুলি তুলিয়া দিতে বলেন তখন গুরু জর্জুন বলিলেন তাহ অসম্ভব। কারণ এই গ্রন্থ কাহারও পক্ষে বা বিপক্ষে বা কোনো উদ্দেশু করিয়া রচিত নহে, ইহা পরম সত্যের সহজ প্রকাশ । কাজেই ইহাতে হাত দেওয়ার অর্থ ধৰ্ম্মের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীচরণ । গুরু অৰ্জুনকে এই জন্ত অশেষবিধ নির্যাতন সহিয়া প্রাণ দিতে হয় । তবু তিনি তাহাতে এক চুলও বিচলিত হন নাই। ১৬০৬ খ্ৰীষ্টাব্দের জ্যৈষ্ঠ শুক্লাচতুর্থীতে তিনি প্রাণত্যাগ করেন । “দবীন্তান-ইমজাহিব"-প্রণেতা মুহসিন ফানীর মতে গুরু অৰ্জুনের প্রাণদণ্ডর অন্ত কারণ ছিল । জাহাঙ্গীরের প্রতিপক্ষ খুসরুকে এক সময় সাহায্য করিয়াছিলেন বলিয়া গুরু অৰ্জুনকে এই দণ্ড গ্রহণ করিতে হয় । অথচ অর্জুন খুসরু-ক অতিথি ভাবেই সাহায্য করিয়াছিলেন । তাহা না করাও র্তাহার পক্ষে শিখধৰ্ম্মের বিরুদ্ধ হইত । অধিগ্রন্থসাহেবের সংগ্রহ ও রচনা-প্রণালী সম্বন্ধে শিখদের এত দূর নিষ্ঠা যে তাহারা ইহার কিছুমাত্র পরিবর্তন সহ করিতে পারেন না । ভাই মণি সিংহ যখন গুরু গোবিন্দের আজ্ঞানুসারে তাহার গ্রন্থসাহেব সংগ্রহ করেন তখন তিনি অনুভব করিয়াছিলেন যে রাগ অনুসারে পদগুলির বিভাগ না হইয়া যদি গুরু অনুসারে বিভাগ হয় তবে অনেক দিকে সুবিধা হয় । সেই ভাবে তিনি করিয়াও তুলিয়াছিলেন । কিন্তু তাহাতে সমস্ত শিখমণ্ডলী এমন বিরুদ্ধ হইয়া উঠিলেন যে মণি সংহ সকলের কাছে বিনীত ক্ষমা ভিক্ষা করিযু পরিশেষে সেই সব সম্পূর্ণ ভাবে নষ্ট করিতে বাধ্য হন । গ্ৰন্থসাহেবের মধ্যে কোথাও কোন ছেদ বা বিচ্ছেদ নাই। অক্ষরের পর অক্ষর সমান ভাবে চলিয়া গিয়াছে। ইহা বদলাইয়া শব্দগুলি পদবিভাগশত বসাইলে সুবিধা হয়, কিন্তু উপায় নাই। এই সব শাখোজনা ঠিক মত না পড়িলে অর্থ এক হইতে আর হইয়া যায়। একবার এক শিখকে এই রূপ ভুল ভাবে পড়িতে দেখিয় গুরু গোবিন্দ গ্রন্থর পাঠ লম্বন্ধে বিশেষ সাবধান হইবার বানস্থ। করেন । “গ্রথী” বলিঙ্গ মিশেষ এক শ্রেণীর লোকেই গ্রন্থ পড়িতে পারেন । কিন্তু তাহাতেও যে কত ভুল হয় তাহা একটু খোজ করিলেই দেখা যায়। এখন কোথাও কোথাও গ্রন্থসাহেব বর্তমান কালের উপযোগী করিয়া মুক্তি