পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8&ー。 দু-একবার যখন দেখা হয় তখন বলি-মালতী, এস না কেন ? মালতী বলে সে আসবে। তার পর এক ঘণ্টা, দু-ঘণ্টা কেটে যায়, ও আসে না । আমার রাগ হয়, অভিমান হয়। ও যদি আমার জন্তে একটুও ভাবত, তাহলে কি আর না-এসে পারত। ওর কাছে কাজই বড়, আমি কেউ নই। কিন্তু হয়ত অপ্রত্যাশিত ভাবে হঠাৎ মালতী এসে পড়ে। প্রায়ই আসে বিকেলের দিকে এমন কি সন্ধ্যার সময়। চুলটি টানন্টান ক’রে বেঁধে, পান থেয়ে ফুল্ল ওষ্ঠাধর রাঙা ক’য়ে হাসিমুখে আমার দাওয়ার সামনে এসে বলে—কি করছেন ? —এস মালতী, সারাদিন দেখি নি যে ? —আপনার কেবল—সারাদিন দেখি নি, আর এই তথন ডাকলুম এলে না কেন, আর কেন আস না—এই-সব বাজে কথা। আসি কখন ? দেখছেন ত। খেয়ে উঠেছি এই ত ঘণ্টাখানেক আগে । কাজ ছিল । —কি কাজ ছিল আমি আর জানি নে মালতী ? উদ্ধব-বাবাজীর কোণের ঘরে মেজেতে চেটাই পেতে বসে তোমার সেই কবিতার বই লিখছিলে—আমি দেখি নি বুঝি ? —বেশ দেখেছেন ত দেখেছেন। আমুন বিষ্ণুমন্দিরে সন্ধা দেখিয়ে আমি-একা ভয় করে । বাস্তবিকই আমি ওকে একমনে বই লিখতে দেখেছিলাম। প্রায়ই দেখি। মালতী ঠিক পাগল, আচ্ছ, পাষণ্ডদলনের অনুকরণে লেখা ওর বই কে পড়বে যে রাত নেই দিন নেই বই লিখছে ! ওর মুখ দেখলে আমার কষ্ট হয়। ওই এক খেয়াল ওর। মালতীর সঙ্গে বিষ্ণুমন্দিরে গেলাম। মালতীর এই এক গুণ, ও যখন মেশে, তখন মেশে নিঃসঙ্কোচে, উদার ভাবে । সে-সম্বন্ধে কোনো বাধা বা সংস্কার ও মনে না । কেন এই সন্ধ্যাতে আমার সঙ্গে একা যাবে পুকুরপাড়ের বিষ্ণুমন্দিরে—এসব সঙ্কোচ নেই ওর । মন্দিরের পথে যেতে যেতে মনে হ’ল মালতীকে পেয়ে আমার এই বর্ষাসন্ধ্যাটি সার্থক হ’ল । ওকে ছেড়ে আর কিছু চাই নে। কাঞ্চনফুলতলায় গিয়ে বললাম-সে গানটা গাঁও না, সেদিন গাইছিলে শুণগুণ করে ! voor salk). ఎ98S মালতী ছেলেমানুষের মত ভঙ্গিতে বললে—উদ্ধব-জ্যাঠা যে শুনতে পাবেন ? —তা পাবেন, পাবেন । —তবে আমুন পুকুরের ঘাটে গিয়ে বসি । মালতীর মুখে গানটা বেশ লাগে—দু-তিন বার গুনলাম । আমার নয়নে কৃষ্ণ নয়নতার হৃদয়ে মোর রাধা-প্যারী আমার বুকের কোমল ছায়ায় লুকিয়ে খেলে বনবিহারী গান শেষ হ’লে বললাম—শোন একটা কথা বলি মালতী, তুমি এস না কেন ? তোমাকে না-দেখলে আমার বড় কষ্ট হয় । আজ সারাদিন বসেছিলুম ঘরের দাওয়ায়, এমন বর্ষ গেল—তুমি চৌষটিবার আমার ঘরের সামনে দিয়ে যাও, একবার ত এলে পারতে ? তোমার সে-সব নেই। শুধু কাজ আর কাজ । এই যে তোমাকে পেয়েছি, আর আমার যেন সব ভুল হয়ে গিয়েছে—সতি্যু বলছি মালতী । মালতী মুখ নীচু করে হাসি-হাসি মুখে চুপ ক’রে রইল। আমি বললাম—হাসলে চলবে না মালতী ! কথার আমার উত্তর দাও । তুমি কি ভাবে আমি তোমার এখানে পড়ে আছি খেতে পাই নে বলে তাই ? তা নয়। —কে বলেছে আপনাকে ঘে মা-খেতে পেয়ে এখানে আছেন ? বলেছি আমি আপনাকে নাকি ? —ঘাক ওসব বাজে কথা । আমার কথার উত্তর দাও । মালতী আবার ছেলেমানুষী আরম্ভ করলে। মুখ নীচু করে হাটুর কাছে ঠেকিয়ে মৃদু মৃদু হাসিমুখে হাত দিয়ে সানের ওপর কি আঁকজোক কাটতে লাগল, কখনই ওর কাছে আমার কথার সোজা জবাব পেলাম না। এক দিন বেড়াতে গিয়ে বাধের ওপর বসে আমার অবস্থাটা ভেবে দেখলুম। আমি এমন জড়িয়ে পড়েছি যে নড়বার সাধা নেই এতটুকু। ও আমার জীবনের সবকিছু ভূলিয়ে দিয়েছে—কি উদ্দেশ্যে এই দু-বছর পথে পথে ঘুরেছি সে উদেশ্ব এখন হয়ে পড়েছে গৌণ। এখন মালতীই সব, মালতীই আমার বিশ্বের কেন্দ্র, ও যখন আসে তখন * জীবনে আর কিছু চাইবার থাকে না, ও যেদিন আসে, যেদিন হেসে কথা বলে-আমার মত মুর্থী লোক সেদিন জগতে আর কেউ খাকে ম4, মাঠের ওপর স্থৰ্য্যাগু সেদিন o নতুন রঙে রঙীন হয়, বিচালিবোখাই গাড়ীগুলো খা