পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ ইত্যাদির জন্ত ভূষণ বিখ্যাত ছিল। কাগজ ও গালার কাজ এখনও সম্পূর্ণ তিরোহিত হয় নাই। সাডৈরের পটার ন্যায় সূক্ষ্ম পাটী বোধ হয় এখনও অন্য কোথাও প্রস্তুত হয় ন। সৈয়দপুরের প্রকাগু পাঙ্গী নৌকা দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় একটা দর্শনীয় বিষয় ছিল। আবুতোরাপ নিহত হইলে নবাব মুর্শিদকুলী খা উত্তেজিত হইয়া উঠিলেন। বক্স আলি খী নামক এক ব্যক্তি ভূষণায় ফৌজদার হইয়া আসিলেন। নিকটবৰ্ত্তী জমিদারদিগের উপর সীতারামকে দমন করিবার জন্ত আদেশ প্রেরিত হইল । নবাবের হুকুম -জমিদারের সীতারামের উপর বেঁকিয়া দাড়াইলেন । সংগ্রাম সিংহ, দয়ারাম প্রভৃতি হিন্দু সৈন্তাধ্যক্ষের বক্স আলির সঙ্গে আসিয়া সীতারাম-দমনে প্রবৃত্ত হইলেন । প্রথমে সীতারাম জয়লাভ করিলেন, কিন্তু তাহার ভূষণ-দুর্গ অবরুদ্ধ হইল। দয়ারাম মহম্মদপুরের দিকে ছুটিলেন । সীতারামের সেনাপতি মেনাহাম্ভীর গুপ্তহত্যার কথা এ অঞ্চলে স্বপ্রসিদ্ধ। ভূষণায় অবস্থান নিরাপদ নহে দেখিয়া সীতারাম মহম্মদপুরে পলায়নকরত: তাহার কতক পরিজন স্থানাস্তরিত করিলেন । শেষে যুদ্ধে আহত হইয়া বন্দী হইলেন। মুর্শিদাবাদে প্রেরিত হওয়ার পর তাহার মৃত্যু হয়। কিরূপে মৃত্যু হয় সে-সম্বন্ধে মতভেদ আছে। এই উপলক্ষে নাটোরের রামজীবন ও রঘুনন্দন বিশেষ ভাবে পুরস্কৃত হন; দয়ারামে ও জমিদারী লাভ ঘটে । রঘুনন্দন নবাব-সরকারে কার্য্য করিয়া বিশেষ প্রতিপত্তিশালী হইয়াছিলেন, তাহারই প্রভাবে ভূষণ জমিদারী তাহার ভ্রাতা রামজীবনের সহিত কন্দোবস্ত হয়। জমিদারীটি তখন প্রকাগু ছিল । অনেক পরগণ ইহার অস্কন্তু জ্ঞ ছিল। ১৭২২ খৃষ্টাব্দে মুর্শিদকুলী খাঁ নবাবের সময় যখন পূৰ্ব্বতন সরকারগুলির পরিবর্তে তেরটি চাকৃলার স্বষ্টি হয় তখন একটি চাকূল হইয়াছিল ভূষণ। প্রত্যেক চাকুলায় একজন করিয়া ফৌজদার ও তাহার অধীন নানা কৰ্ম্মচারী ছিলেন। সীতারামের পতনের পরও ভূষণায় ফৌজদার রহিলেন কিন্তু তাহার অধীনস্থ অনেক স্থান নাটোরের জমিদারীভুক্ত হইয় গেল। রামজীবন ধখন ভূষণ জমিদারীর সনন্দ প্রাপ্ত হন, তখন দিল্লীতে সম্রাটু ফাররোকৃশের। গনণা তাঁহারই মোহরাঙ্কিত ছিল । রঘুনন্দন হইতেই নাটোর জমিদারীর অত্যুদন্থ। সামান্ত ቁማሉ→ግ ভূষণ ఇళపి অবস্থা হইতে নিজের প্রতিভাবলে রঘুনন্দন বড় হইয়া উঠেন এবং ভ্রাতা রামজীবনের নামে বিস্তীর্ণ জমিদারী অর্জন করেন। দীঘাপাতিয়া রাজবংশের পূর্বপুরুষ প্রতিভাশালী দয়ারাম রায় ছিলেন রঘুনন্দনের দক্ষিণহস্তস্বরূপ, আর জমিদারী পরিচালনে সুদক্ষ ছিলেন রামজীবন । রামজীবন নাটোর জমিদারী বুদ্ধিই করিয়াছিলেন। ১৭৩৭ খৃষ্টাব্দে তাহার মৃত্যুর পর কিছুকাল দয়ারাম জমিদারীর কাজকৰ্ম্ম চালান, পরে রামজীবনের পৌত্র রামকান্ত বয়ঃপ্রাপ্ত হইলে তাহার উপরই জমিদারীর ভার পড়ে। তথনকার জমিদারী পরিচালন এখনকার মত ছিল না । জমিদারেরা পুলিসের তত্ত্বাবধান করিতেন, ফৌজদারী ও দেওয়ানী মোকদ্দমার বিচার করিতেন । রামকাস্ত বিষয়ুকার্য্য অপেক্ষ ধৰ্ম্মকাৰ্য্যেই অধিক অনুরাগী ছিলেন । অল্পবয়সে র্তাহার মৃত্যু হইলে জমিদারী তাহার পত্নী প্ৰাতঃস্মরণীয়। রাণী ভবানীর হস্তে আসে। রাণী যেমন বিষয়কৰ্ম্মে, তেমনি দেবাচৰ্চনা, দান-ধ্যানাদি কার্য্যে মনোযোগ দিতেন। কিন্তু ভূষণার জমিদারীকে ষে খাজনা যোগাইতে হুইত, তাহাতে তাহার স্তায় দানশীল রমণীর পক্ষে ইহার রক্ষা অনেক সময়েই ছুক্ষর হইয়া পড়িত । ইংরেজ শাসনের প্রথম আমলের কাগজপত্রে দেখা যায় ভূষণ জমিদারী রাজস্ব আদায়ের জন্য সময়ে সময়ে ইজারা দেওয়া হইত। তখন ভূষণায় আদালত ছিল এবং ইহা রাজসান্ধীর স্বপারভাইসরের তত্ত্বাবধানে চলিত। রাজসাহীর সুপারভাইসর থাকিতেন নাটোরে । তাহার উপরে ছিল মুর্শিদাবাদে রাজস্ব-কেন্সিল । ইংরেজ রাজত্ব আরম্ভের অল্পদিন পরই ( ১৭৭০-১৭৭১ খৃষ্টাব্দ ) ভূষণ হইতে আদালত উঠিয়া যায়, কিন্তু তখনও রাজসাহীর স্বপারভাইসরের এক সহকারী সাহেব ভুষণায় থাকিতেন। রাণী ভবানীর সময় রাজস্ব আদায়ের জন্য ভুষণার জমিদারী ষে-সকল ইজারাদারের হস্তে দেওয়া হইত তাহদের মধ্যে নড়াইলের জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাত কালীশঙ্কর রামের নাম উল্লেখযোগ্য । সরকারী কাগজপত্র হইতে মনে হয় ভূষণায় ষে অত্যধিক পরিমাণে কর ধার্ঘ্য হইয়াছিল তাঙ্কা পুনঃ পুন: ইজার বন্দোবস্ত সত্ত্বেও আদায় করা যাইত না। কালেক্টর নিয়োগের ব্যবস্থা হওয়ার পর ভূষণার জন্ত একজন অ্যালিষ্টাণ্ট কালেক্টর থাকিতেন। ক্রমে ১৭৯৩ খৃষ্টাব্দে ভূষণ যশোহর