পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- শ্রাবণ" শীঘলরাণী šný. প্রবল নিঃশ্বাসে মুখের ওপরের জাবনার কুটাকাটিগুল সুধার শাড়ীর উপর উড়িয় সাটিয়া যাইতে লাগিল । খানিকক্ষণ জিবের আঁচড় সহ্য করিয়া সুধী সুড়সুড়িতে ঘাড়টা কুঞ্চিত করিয়া বলিল—“ওরে থামূ, বাছুর চেটে তোর যা জিব হয়েচে, আমার এক পরদ। চামড় উঠে গেল---দেধ কাও, আবার খোকাকে চাটতে যায় {’ হাসিয়া দু-পা পিছাইয়া গেল । শু্যামলী বাগ্রভাবে একবার দড়িতে টান দিয়া ঘাড়টা নাড়িয়া উঠিল, সঙ্গে সঙ্গে বাহিরে বাছুরটার উপর নজর পড়ায় “স্তা-পি করিয়া ডাক দিয়া উঠিল এবং বাছুরটা ছুটয় আসিলে কিছুক্ষণ আগন্তুকদের ভুলিয়, সপ্রেমে তাহার গ'-টা ঘন ঘন এক চোট চটিয় দিয়া আবার সুস্থির হইয়া দাড়াইল । সুধা চোখমুখ কৌতুকে বোঝই করিয়া বাছুরের সৌন্দর্য্য ব্যাখ্যান করিতে যাইতেছিল, দু-একটা কথা বলি দিদির দিকে চাহিতেই থমকিয় গেল । দিদি ডানহাতের তর্জণীটা গালে চাপিয়া, নিতান্ত বিস্ময়ে ঘাড় কাৎ করিয়া দঁাড়।ইরা ছিল ; বলিল—“দেখ,লি শৈলী, কাগুটা ’ শৈল এমন কিছু কাও দেখিতে পায় নাই যাহাতে দিদির এতটা ভাবান্তর হইতে পারে । প্রশ্ন করিতে; যাইতেছিল, তাহার পূৰ্ব্বেই হুধ যুরু করিয়া দিল— “দেথলি না ঠেকারটা ?—চটিতে দিলামীন তাই স্পষ্ট বুঝিয় দিলে—তোমার খোক আচে, আমার নেই ? এই দেখ-কেমন ডাকলে, কেমন কোলে টেনে নিয়ে চাটতে লাগল --- ইলো শামলী, গেরস্তকে এতদিনেও একটা নই-বাছুর দেওয়ার মুরোদ হ’ল না, উল্টে আমার সঙ্গে টেক দিতে এলি ! মুয়ে আগুন, ব্যাট-বাছুরের আবার শুমের কি ল ?--কি কাজে লাগবে ? কদিনই বা কাছে ধ’রে রাখতে পরিধি ? আমার এই সোনার-চাদের সঙ্গে তুলনা হ’ল কিল|•••• বৌদিদি আর মা আসিয়া উপস্থিত হইলেন । বৌদিদি হাসিন্ধু! বলিল—“কি কথা হচ্চে:গে পুরনো সইয়ের সঙ্গে ?” দিদির কথাবাৰ্ত্ত শুনিবার পর শৈল শুমলীর ব্যবহারে দিদির চেয়েও ক্ষুব্ধ ও বিস্মরাস্থিত হইয়া গিয়াছিল, বড় বড় চোৰ করির আরম্ভ করিল—“বললে পেত্যয় যাষে মা মা, দিদির কোলে , থোকাকে দেধে শামসী ঠেকার ক’রে---* কোন ফাঁকতালে হঠাৎ ছেলেবেলার সুধা আসিয়া তাহার মুক সর্থীর সঙ্গে মুখর আলাপ জমাইয়া তুলিয়াছিল, সরমের স্পর্শে আবার অন্তহিত হইয় গেল । নদীর মধ্যে হঠাৎ যেন ঝরণার উচ্ছলতা আসিয়া পড়িয়াছিল -•• শৈলকে ধমক দিয়া সুধা বলিল—“হ্যাঃ, গরুর নাকি আবার ঠেকার হয় –পাগলের মত যা তা ব’কিস্ নিঃ ੋਕੀ !” -- শু্যামলীর কাওর চেয়ে দিদির কাও আরও দুৰ্ব্বোধ্য বলিয়। বোধ হইল ; শৈল অপ্রতিভ হইয় হ’া করিয়া দিদির মুখের দিকে চাহিয়া রহিল । সুধা মাকে কহিল—“বলছিলাম মা, শামূলীর শেষে ব্যাটা-বাছুর হ’ল ? নই’ হ’লে নিয়ে যেতম আমি । শ্বশুর কি ভাল একটা নাকি ওষুধ জানেন, খাওয়ালে নাকি নই-বাছুর হতেই হবে---হাসচ বৌদি, কিন্তু একেবারে নাকি পরীক্ষিত, নড়াচড় হবার জো নেই।” মও না হাসিয় পারিলেন না, বলিলেন—“তিন বার ত?"নকি’ বললি, অথচ নড়াচড়ও হবার জো নেই; শ্বশুর তোর ভারি গুণী ত t” সুধা লজ্জায় যাও’—বলিয়া মুখ ফিরাইল । ভাজ বলিল—“তার চেয়ে তুমি শামূলীকে নিয়ে যাওনা ঠাকুরবি, ঠাকুর-জামায়েরও পণ রক্ষ হয়------” সুধা ঘাড় নীচু করিয়া বাড়ির দিকে প। বাড়াইয়। বলিল—“না বাবু, আমি চললাম, শ্বাশুড়ী-বউয়ে একজোট হ’য়ে আমার পেছনে লাগলেন সব ।” সে একটা আলাদা কাহিনী, বিবাহের সঙ্গে অচ্ছেদ্য, ভাবে জড়ান। যতই বড় হইতেছে তাহার লজ্জাট সুখকে ততই যেন অভিভূত করিয়া ফেলিতেছে । শৰ্দ্দার বিবাহ-সংক্রস্ত বিল লইয়া সারা দেশটায় সামাল সামাল রব পড়িঞ্জ গেন্স; লোকে বলিল— কালাপাহাড় এবার কলম হাতে করিয়া আবিভূতি হইয়াছে । সে আজ প্রায় চার-পাঁচ বৎসরের