পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ দৃষ্টি-প্রদীপ هسپst ওটা ছুয়ে না কেউ করে না । সব ঘরে যাই, সব বিছানাতেই বসি—সবাই আদরযত্ন করে, পছন্দ করে। এখন বয়েস হমেচে বুঝতে পেরেচি আটঘরাম যতটা বাধার্বাধি, এসব শহর-বাজারে অত নেই এদের । কষ্ট হয় মার জন্যে, সীতার জন্যে—তারা এখনও জ্যাঠাইমার কঠিন শাসনের বাধনে আবদ্ধ হয়ে ক্রীতদাসীর মত উদয়াপ্ত খাটচে। দাদার জন্তেও কষ্ট হয় । লে লেখাপড়া শিখলে না—চাকুরী করবে ংসারের দুঃখ ঘুচোবে বলে –কিন্তু চাকুরী পায় না, ঘুরে ঘুরে বেড়ায়, আজ বারে টাকা মাইনের চাকুরী করে, কাল জবাব হয়ে যায়, আবার আর এক জায়গায় ষোল টাকা মাইনের চাকরি জোটায়। এত সামান্য মাইনেতে বিদেশে খেতে পড়ে কোন মাসে পাচ টাকা, কোন মাসে তিন টাকার বেশী মাকে পাঠাতে পারে না, তাতে কি দুঃখ যুচবে ? অথচ না শিখলে লেখাপড়, না করতে পারলে কিছু । কলেজের ছুটির পরে গঙ্গার ধারে একখানা বেঞ্চির ওপর বসে এইসব কথাই ভাবছিলাম। মাঝে মাঝে ভয়ানক হচ্ছে হয় আবার একবার চা-বাগানের দিকে যাই, আর একবার হিমালম্ন দেখি। কতকাল রডোড়েগুন ফুল দেখি নি, পাইন-বন দেখি নি, কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখি নি—সে রকম শীত আর পাইনি কোনদিন,—এদের সবাইকে দেখাতে ইচ্ছে হয় সে দেশ । স্কুলে যখন প্রবন্ধ লিখতে দিত, আমি হিমালয় নিয়ে লিপতাম —আমার লেখ সকলের চেয়ে ভাল হ’ত--কারণ বাল্যের স্বল্প-মাধানে সে ওক পাইনের যন, ঝর্ণা, তুষারমণ্ডিত কাঞ্চনজঙ্ঘ, কুমাস, মেঘ আমার কাছে পুরনো হবে না কোন দিন, তাদের কথা লিখতে গেলে নতুনতর ভাব ও ভাষা কোথা থেকে এসে জোটে, মনে হয় আরও লিখি, এখনও সব বলা হয় নি। লেখা আপরে ভাল বললেও আমার মন তৃপ্ত হ’ত না, মনে হ’ত যা দেখেচি তার অতি ক্ষুদ্র ভগ্নাংশও অঁাকতে পারলাম না—অপরে ভাল বললে কি হবে, তারা ত আর দেখেনি ? ওপারে বারাকপুরের সাদা বাড়িগুলো যেন সবুজের সমুদ্রে ডুবে আছে। ঠিক যেন চা-ঝোপের আড়ালে ম্যানেজার সাহেবের কুঠী-লাল টালির ছাদ থাকলেই একেবারে চাবাগান । এই দিকে চেয়েই ত রোজ বিকেলে আমার মনে ইম্ব বাল্যের চা-বাগানের সেই দিনগুলো ।

  • আমার শুনতে ভাল লাগে ।

বাড়ি ফিরে গেলাম সন্ধ্যার পরে । চাকরকে ডেকে বললাম, “লুলু আলো দিয়ে যা।” আলো দেওয়ার পরে হঠাৎ আমার নজরে পড়ল দেওয়ালের গায়ের আমার ছুটে প্রিশ্ন ছবি, পৰ্ব্বতে উপদেশদানরত খৃষ্ট, আর একটা সাধু জন,— নোনা ধ’রে নষ্ট হয়ে যাচ্চে । ছবি দুটো সরিয়ে পুতচি এমন সময়ে ভবেশ এল । ভবেশ সেকেণ্ড ইম্বারে পড়ে, খুব বুদ্ধিমান ছেলে, স্কলারসিপ নিম্নে পাস করেচে—প্রথম দিনেই কলেজে এর সঙ্গে আলাপ হয় । ভবেশ এসেই বললে—ও কি হচ্ছে ? নোন। ধ’রে যাচ্চিল ? ভালই হচ্চিল—-ও-সব ছৰি রেথে লাভ ঘরে ? ভবেশের দৈনন্দিন কাজ রোজ এসে আমার কাছে খৃষ্টান ধৰ্ম্মের নিন্দ করা। আমাকে ও খৃষ্টান ধৰ্ম্মের কবল থেকে উদ্ধার ক’রে নাকি হিন্দু করবেই। আজও সে আরম্ভ করলে, বাইবেলট। নিতস্ত বাজে, আজগুবি গল্প ৷ খৃষ্টান ইউরোপ এই সেদিনও রক্তে সারা নিয়া ভাসিয়ে দিলে গ্রেট ওয়ারে । কিসে তুমি ভুলেচ? রোজ যাও পিকারিং সাহেবের কাছে ধৰ্ম্মের উপদেশ নিতে । ওরা ত তোমাকে খৃষ্টান করতে পারলে বাচে। তা ছাড়া আজ হিন্দুদের বলবৃদ্ধি করা আমাদের সবারই কৰ্ত্তব্য—এটা কি তোমার মনে হয় না ? আমি বললাম--তুমি ভুল বুঝেচ ভবেশ, তোমাকে এক দিনও বোঝাতে পারলাম না যে আমি খৃষ্টান নই ; খৃষ্টান ধৰ্ম্ম কি জিনিষ আমি জানি নে- জানবার কৌতুহল হয় তাই পিকারিং সাহেবের কাছে জানতে যাই । আমি ধীশুখৃষ্টের ভক্ত, তাকে আমি মহাপুরুষ বলে মনে করি। র্তার কথা তার জীবন আমাকে মুগ্ধ করে। এতে দোষ কিসের আমি ত বুঝি নে । —ও বটে ! বুদ্ধ, চৈতন্য, কৃষ্ণ, রামকৃষ্ণ এরা সব ভেসে গেলেন—যীশুখৃষ্ট হ’ল তোমার দেবতা ! এরা কিলে ছোট তোমার যীশুর কাছে জিজ্ঞেস করি ? —-কে বলেচে র্তার। ছোট ? ছোট কি বড় সে কথা উঠচে ত না এখানে ? আমি তাদের কথা বেশী জানি নে । যতটুকু জানি তাতে র্তাদের শ্রদ্ধা করি। কিন্তু এও ত হয় কেউ এক জনকে বেশী ভালবাসে, আর এক জনকে কম ভালবাসে ? . –তুমি যতই রোঝাওজিতেন, আগর ও ভাল লাগে না।