পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ ভারতীয় সংস্কৃতির গোড়ার কথা trఫీసీ থাকিবেই। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষ সকল দেশেই আছে, অথচ ভজন্য পরিচ্ছদ, আবাস, আহার ইত্যাদি পৃথিবী জুড়িয় এক নয় । ইহাদের পার্থক্য অসামান্ত । দেশ-কাল-পাত্রে এই সমস্যার রূপের বিশেষ হের-ফের হইয়াছে । চিন্তার ক্ষেত্রে ইহা আরও বেশী সত্য । বিভিন্ন দেশের প্রশ্ন হইয়াছে বিভিন্ন – সমাধানও বিভিন্ন । বাহা জীবনের বৈচিত্র্য অপেক্ষা অস্তজীবনের বৈষম্য এত অধিক তীব্র যে কল্পনাট করা যায় না, তাই অস্তজীবনের এই বৈষম্য বা ব্যক্তিত্বের প্রভাবেই একটি বিশেষ জাতির বিশিষ্ট সংস্কৃতি টিকিয়া থাকিতে পারে । পৃথিবীর সকল প্রাচীন সভ্যতার পরিচয় আজ ইতিহাসের পৃষ্ঠায় খুজিয়া বাহির করিতে হয় । অধুনা প্রত্নতত্ত্ববিদ পণ্ডিতেরা নুতন সভ্যতার মধ্যে প্রাচীন সভ্যতার কোন কোন রেশ আবিষ্কার করিতেছেন । কিন্তু সাধারণ মানুষের নিকট তাঃ রে প্রাত্যহিক জীবনে ইজিপ্ট, বাবিলোনিয়া, আসিরিয়া ব। মাম্বা-সভ্যতা মৃত । এমন কি গ্রীস-রোমও যেন প্রত্নগিারে স্থান পাইয়াছে । ইহাদের সভ্যত। মাচুষের প্রতিদিনকার জীবনে মরিয়া গিয়াছে। আজ অতীতের বক্ষের কঙ্কাল— পঞ্চৱ দেখি, দেখিয়া বিস্মিত হই, উচ্ছসিত প্রশংসাও করি।-- সে-প্রশংসা এমন কি কাবের আকার ও পাইতে পারে, তাহ কোন শিল্পীর অকুপ্রেরণাও ধোগাইতে পারে, কিন্তু মানুষের জীবনে তাহার স্থান ও সার্থকতা কোথায় ? সকল প্রাচীন সভ্যতার মধ্যে মাত্র একটি বাচিয়া আছে । সেই অদ্বিতীয় গৌরবের স্থান ভারতীয় সভ্যতার । (চৈনিক সভ্যতা বলিতে যাহ। বুঝি তাহ ভারতীয় সভ্যভার একটি বিশিষ্ট পরিণতি, অন্য দেশে, অন্য জাতির সংমিশ্রণে এক বিচিত্র রূপ । ) অন্য দেশে অন্ত যে সভ্যত উদ্ভূত হইয়াছিল তন্মধ্যে এমন প্রেরণা ছিল না, এমন গভীরতা ছিল না যাহার ব্যাপকতা এত বেশী । সে-সকল সভ্যতার সমস্ত ছিল সাময়িক, তাহাদের চিস্তা বৰ্ত্তমানকে অতিক্রম করিতে পারে নাই। সেখানে পরের সভ্যত নূতন কথা লইয়া আসিয়াছে, পরের চিস্ত। পূতন আলোক লইয়। আসিমাছে, সেই নুতন বাণীকে বাধা দিবার মত শক্তি পুরাতনের ছিল না। সে সমস্ত পুরাতন শভ্যতা ছিল মাত্র পাথরের— ইটের সভ্যতা—সেনাবাহিনীর সভ্যতা। বাহ জীবনের বহু প্রয়োজনের, সুখ-স্বাচ্ছন্দোর, আরামের বন্দোবস্ত র্তাহারা করিয়াছেন, কিন্তু অস্তজীবনের গুঢ় সমস্যার - সত্যকার জীবন-সমস্যার কোন বাণী সে সকল সভ্যতায় নাই। প্রাণহীন এ-রকম বস্তু-সভ্যতা রাচিতে পারে না। ভারতীয় সভ্যতার প্রাণস্পন্দন ছিল বলিয়াই সে বঁাচিয়াছে । ইঙ্গকে “আধ্যাত্মিক’ বলিয়া কোন বিজ্ঞ পণ্ডিত অধরপ্রাস্তে একঢ় বিদ্রুপের হাসি হাসিয়াছেন । ইহার বস্তু-সভ্যতার অংশ কতট। তাহা এখানে বিচায নমু। কিন্তু এ-টুকু বুঝিতে হইবে যে, ইহা বিশেষ করিম আধ্যাত্মিক বলিয়াই বাচিয়াছে । মাত্র এই সভ্যতারই আত্মা আছে—তাই সে মরে নাই । ভারতের চিন্তা পৃথিবীর বস্তুতেই নিঃশেষ হইয়া যায় নাই । বস্তুর আশ্রয় যাহা, বস্তুর অতীত যাহা তাহারই সন্ধান সে পাইমুছে । ভারত রূপের মধ্যে অরূপের সাধন করিয়াছে । নশ্বর ভঙ্গুরকে অতিক্রম করিয়া ভারতের সাধন হইতেছে শাশ্বত নিত্যের । এষ্ট জগতের প্রশ্নের সন্ধানে তাহার ধাত্রা । ত মৃতের পথ পাইমু! সে চলিয়াছে । ভারতে জীবন অতি দীর্ঘ সাধনী— অবিদ্য হইতে মুক্তির সাধন।. বিদ্যার আবির্ভাবের সাধন । ভ রত বয়ে লেখা-পড়া ও সংস্কৃতি কোন দিন এক বস্তু বলিয়া বিবেচিত হয় নাই । সংস্কৃতি ভারতের অস্তরের বস্তু, অক্ষর-পরিচয়ে সাহিত্য-ভান কোন দিন তাহার জ্ঞাপক ছিল না । এ-দেশে বিদ্যা কখনও academic ব্যাপার বলিয়’ গৃহীত হয় নাই । বিদ্যা তাহার অস্তরের সামগ্ৰী । দর্শনও কোনদিন বুদ্ধির পরিচয়জ্ঞাপক মাত্র হয় মাহ- ইহা ছিল ভারতবাসীর প্রাণস্বরূপ । দর্শন ও ধৰ্ম্ম কোন সময়ে এদেশে জুটি পৃথক্ বিষয় বলিয়া বিবেচিত হয় নাই । ধৰ্ম্মের গোড়ার কথাটি হুইয়াছে সৰ্ব্ববস্তুর মধ্যে একটি অখণ্ড যোগ : সৰ্ব্ববস্তু একটি অখণ্ড পূর্ণত্বের প্রকাশ মাত্র । তাহার macrocosu ও সৰ্ব্ববিদ্যাই ধৰ্ম্মের মধ্যে বলিয়া স্বীকুভ হইয়াছে । চতুঃষষ্টি শিল্পকলাও ধৰ্ম্মের বাহন হইয়াছে শিল্পকল। গ্রস্থেরও তাই নাম হইয়াছে – শাস্ত্র । ধৰ্ম্মের মত ব্যাপক শব্দ ভারতীয় ভাষায় আর নাই। ধৰ্ম্ম সকলের মধ্যে অমুস্থত রহিমাছে সকলকে ব্যাপিমু রহিয়াছে বলিয়। এ-দেশে কোন বিদ্য! watertight compartment-do মত হয় নাই । সর্বববিদ্যার শেষবাণী ধৰ্ম্ম ; তাহাদের মধ্যে microcosm