পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভটচাষ ধীরে ধীরে ঘাড় নাড়িয়া বলিলেন—উহু—সে হয় না বউ। প্রাণ ধরে সে আমি বলতে পারব না। উ-ক ! বিমল ক্রতপদে মাস্থের ঘরে গিয়া প্রবেশ করিল। তাহার কাঠের হাতবাক্সট থাকিত সম্মুখেই একটা জলচৌকীর উপর। সেটাকে আনিয়া সে উঠানের উপর আছাড় মারিয়া ফেলিয়া দিল । পাথরের টালি দিয়া বাধানে উঠানে আছাড় থাইয়া বাক্সট চৌচির হইয়া ফাটিয়া গেল। ভিতরের জিনিষপত্র চতুর্দিকে ছড়াইয়া পড়িল। রিঙে-গাথা গোছা দুই চাবি তাহার মধ্য হইতে কুড়াইয়া লইয়া বিমল উন্মত্ত্বের মত মন্দিরের দিকে চলিয় গেল । একটা মানুষ যখন উন্মত্ত হইয়া উঠে তখন অপর সকলে হইয়া যায় যেন মূক-পঙ্গু বাড়ির সমস্ত লোক বিমলের উন্মত্ততায় মূক-পঙ্গুর মত দাড়াইয়া রহিল। কিছুক্ষণ পর বিমল আঁচলে করিয়া একরাশি অলঙ্কার আনিয়া বাগল স্বর্ণকারের সম্মুখে ঢালিয়া দিল । বলিল—ওজন কর । মুক-পঙ্গু ভটচায অলঙ্কারগুলির দিকে তাকাইয়। ঝর ঝর করিয়া কাদিয়া ফেলিলেন । তার পর ঝাপ দিয়া উপুড় হইয়া পড়িলেন অলঙ্কাররাশির উপর। বুকের মধ্যে চাপিয়া ধরিয়৷ চীৎকার করিয়া উঠিলেন—না-না—এ দেব না, দিতে পারব না। আমার-এ আমার ! বিমল রূঢ়ভাবে হাতে ধরিয়া সবলে ভটচযকে টানিয়া সরাইয়া ফেলিয়া দিল । সঙ্গে সঙ্গে আর একটা প্রলয় ঘটিয়া গেল যেন । সহসা ভটচাধ পাথরের উঠানে মাথা ঠকিতে জারম্ভ করিলেন উন্মত্তের মত । – এই নে—এই নে—তবে এই নে । এই নে—এই নে । আঘাতের পরিমাণ বোধ নাই— জীবনের মমতা নাই— উন্মত্ত বিকারগ্রস্ত যেন ! ফিনকি দিয়া রক্ত পড়িতেছিল। সে রক্তে ভটচাষের দেহ ভাসিয়া গেল—খানিকটা মাটি রক্তাক্ত इझेज़ फेटैिल । ৰিমলের মা চীৎকার করিয়া কাদিক্ষ উঠলেন। ছুটিয়া আসিয়া ভটচাষকে জড়াইয়া ধরিয়া ডাকিলেন-ঠাকুরপো ! ঠাকুরপো ! — هم ভটচায বলিয়া উঠিলেন—না—না—পারব না—পারব না আমি দিতে । . . . স্থা বিমলের দিকে চাহিয়া বলিলেন-বাৰ ৰিমল ।

    • పెరి3ు

লজাসরম ভুলিয়া গিয়া স্ত্রী জাসিয়া বলিল—ওগো ! খুকী গুপাশে দাড়াইয়া ভয়ে কাদিতেছিল । নায়েব দাড়াইয়াছিল পাথরের মূৰ্ত্তির মত । বিমলেরও উন্মত্ততা ছুটিয়া গিয়াছিল। বিপুল স্ত্রণাবিমিশ্রবৃষ্টিতে সে চাহিয়াছিল ঐ লোভজর্জর বুদ্ধের দিকে । সে বেশ বুঝিল, বৃদ্ধের সর্বাঙ্গের ঐ লোল-কুঞ্চন—ও জরা নয়—লোভজর্জরত । সে স্থান ত্যাগ করিতে করিতে বলিল—নেঃ-নিয়ে যা। ইচ্ছে হয় ত বাড়িও নিম্নে যা ওগুলো । কাছারীবাড়িতে গিয়া সে উঠিল। কিছুক্ষণ পর দেখিল বাগল স্বর্ণকার আবার চলিয়াছে অন্দরের দিকে । সে বুঝিয়াছিল—তবু জিজ্ঞাসা করিল—কি রে বাগল ? —আজ্ঞে তুলসী পাচপাতা। 못 못 못 বিমল ভাবিয়ছিল এই ঘটনার পর সে এগানে বাস করিবে কি করিয়া। তাহার দারুণ পরাজয়ের বার্তা লেখা রহিল ওই লোভী ব্রাহ্মণটার ললাটে। নিত্য দুইটি বেলা ঐ লিপিঅঙ্কিত ললাট লইয় তাহারই সন্মুখ দিম। তাহারই বাড়িতে যাইবে আসিবে—সে তাহা কেমন করিয়া সহ করিবে ? কিন্তু নিরুপায়ে মানুষকে সব সহ করিতে হয়—ধীরে ধীরে সব সহ হইয়া যায়ও । বিমলেরও সহ্য হইল । যেমন পৃথিবী চলিতেছিল তেমনি চলিয়াছে । কিন্তু আক্রোশ বিমলের গেল না । মনে মনে সে সুযোগ সন্ধান করিয়া চলিল। বহুকষ্টে কৌশলে তুলসীপাতার ওজন সে কিছু কমাইল। শুভদিন না দেখিয়া সে আর যায় না । মামলা-মকৰ্দমার সংবাদ গোপনে থাকে । বাড়িতে মেয়েদের কানে আর তোলে মা । কিন্তু তবুও বাগলের আসা-যাওয়ার বিরাম নাই। তাহার মুখে দ্বিতীয় কথাও নাই। —বাগল-কিরে ? —আজে—তুলসীপত্র। বিমল মনে মনে গর্জায়। খুকীট পর্যাঙ্ক যত বড় হইতেছে তত তাহার ঐ লোভী ব্রাহ্মণটার উপর ভক্তির প্রাবল্য দেখা যাইতেছে । দিবারাত্রি সে এখন মন্দিরে আছে। ফুলতোল মালাগাথার ভার নাকি কৃপা করিয়া বুদ্ধ তাঙ্গকে ছাড়িয় দিয়াছে। এক এক সময় মনে হয় যাকৃ গে যাহা করিতেছে সে করুক, উহার আর কয় দিন ? পৰ্ব্বক্ষণেই সে অস্থির হইয়