পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন হুইয়াছে। ১৮৭৪ খৃষ্টাব্দের নবেম্বর মাসে সন্দ্বীপের তটে একটি ছোট ‘ররকোয়াল’ আসিয়া পড়িয়ছিল । বঙ্গোপসাগরে গ্রীনলাণ্ডের তিমির মত দস্তহীন তিমিও বাস করে । ইহার নাম “বেলিন তিমি । ১৮৫১ খৃষ্টাব্দে আরাকান প্রদেশের নিকটবৰ্ত্তী আমহষ্টি দ্বীপে ৮৪ ফুট দীর্ঘ একটি ‘বেলিন তিমির মৃতদেহ আসিয়া পড়িয়ছিল। কলিকাতার যাদুঘরে ঐ তিমির নিম্ন-চোয়ালের অস্থি দুইখানি একটি দ্বারের দুই পাঙ্গে রক্ষিত হইয়াছে । অস্থি দুইখানির আকার তিমির বিশাল কলেবরের বিষয় কিঞ্চিৎ অনুমান করা যাইতে পারে। এখানকার যাদুঘরে ক্ষুদ্র ‘বেলিন তিমির একটি সম্পূর্ণ কঙ্কালও রক্ষিত হইয়াছে । এই তিমিটি ব্রহ্মদেশের থেৰুচ নামক স্থানে আসিয়া পড়িয়ছিল । ইহার হস্তাঙ্গুলির সংখ্যা চারিটি। আরব-সমুদ্র, মালাবার এবং সিংহলের উপকূলেও ‘বেলিন তিমিকে দেখিতে দেখিলেই ঐ পাওয়া যায় । সম্প্রতি বোম্বাইয়ের কোলাবা-পয়েন্টের তটে একটি পঞ্চাশ ফুট দীর্ঘ বেলিন তিমির মৃতদেহ আসিয়া পড়িয়াছিল। মস্তক ব্যতীত তি*িদেহের অবশিষ্ট অংশ সমুদ্রের জলে নিমজ্জিত ছিল। দুই-তিন দিন এই ভাবে জলের মধ্যে পড়িয়া থাকায় উহার পুচ্ছের অধিকাংশ অংশ নষ্ট হইয়া গিয়াছিল । তিমিটি মুখ ব্যাদান করিয়া পৃষ্ঠোপরি শয়ান থাকায় উহার বৃহৎ মুখগহবরের আয়তনাদির কতক পরিচয় পাওয়া গিয়াছিল। ইহার মুখগহবর এরূপ বৃহৎ ছিল যে, তাহার মধ্যে ছয় জন মানুষ অনায়াসে চলিয়া যাইতে পারিত। কিছুকাল পূৰ্ব্বে সিন্ধুদেশের উপকুলে আর একটি তিমির মৃতদেহ ভাসিয়া আসিয়াছিল- উহার মস্তক প্রায় ১৭ ফুট ৮ ইঞ্চির অধিক দীর্ঘ ছিল । তিমিটির মস্তকের অস্থিখানি করাচী শহরের যাদুঘরে রক্ষিত আছে। নীল তিমি নাম হইলেও ইহাদের বর্ণ আদৌ নীল নহে । সাধারণ তিমিদের মত ইহাদের পৃষ্ঠের বর্ণ কালো এবং উদরের বর্ণ শ্বেত । বিশেষত্বের মধ্যে ইহাদের চোয়ালের নিম্নভাগ হইতে উদরের মাঝামাঝি কতকগুলি পৃথিৰীৱ ৰুছত্তম জন্তু ده سی ঘোর লাল বর্ণের ডোর’ অঙ্কিত্ব থাকিতে দেখা যায়ঃ গ্রীনলাণ্ডের তিমির মত ক্ষুদ্র শদ্ভূকাদি ভক্ষণ না করিয়া নীল তিমির হেরিং, ম্যাকেরেল প্রভৃতি সামুদ্রিক মঞ্চস্ত ধরিয়া ভক্ষণ করে । উত্তর-সমুদ্রে আর এক জাতীয় শ্বেত বর্ণের ক্ষুদ্র fতাশ দেখিতে পাওয়া যায়। ইহাদের আর একটি নাম 'বেলুগ । ইহার বারো হতে যোল ফুট অবধি দীর্থ হইয়া থাকে। গ্রীনলাগুের চারি ধারে. সেণ্ট-লরেন্স উপসাগর ও সেণ্টলরেন্স নদীতে ইহাদিগকে দলবদ্ধ হইয়া বিচরণ করিতে দেখা যায় । তিমির এরূপ প্রকাও প্রাণী হইলেও তিন-চারি ফুট দীর্ঘ শুশুকও তিমির গোষ্ঠীভূত জীব । নীল তিমি ব্যতীত অপর তিমিদের মস্তক উহাদের দেহের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ স্থান অধিকার করিয়া থাকে । তৈলতিমির মস্তক অনেক সময় উহাঁদের দেহের প্রায় অৰ্দ্ধাংশ অধিকার করিয়া থাকে । এইরূপ প্রকাও মস্তকে মস্তিষ্কের আকারও খুব বুহৎ হইয়া থাকে । ইহাদের মস্তিষ্ক দেখিতে গোলাকার ও তাহার উপর অনেক খাজকাটা থাকিতে দেখ? যায়। এইরূপ প্রকাগু মস্তকে মুখগহবরটিও অত্যন্ত বিশাল । মুখগহবর এরূপ বুহৎ হইলও তৈলতিমি ব্যতীত অপর তিমির গলনলা অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ। বৃহৎ গ্রীনলাও-তিমির গলনলা এরূপ ক্ষুদ্র যে, তাহীর মধ্যে ছেলেদের বাহুও প্রবেশ করান স্বায় না। এই কারণে ইহারা সমুদ্রের ক্ষুদ্র গেড়ী গুগলী, শামুক, কটল ফিশ’, ‘স্কেট মাছ’, ক্ষুদ্র চিংড়ী এবং পোকামাকড় ব্যতীত আর কিছুই ভক্ষণ করিতে পারে নয় ৯ তিমির মুখগহবর যেরূপ বৃহৎ ইহার জিহাও সেইরূপ প্রকাও । এই জিহবা সাধারণতঃ আঠার ফুট দীর্ঘ ও দশ ফুট প্রশস্ত ছহয় থাকে । ইহাঙ্গের জিহব নিম্ন-চোয়ালের