পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وقا8e এই লাইব্রেরীর নিত্য পাঠক । পুস্তকের নিকট তাহদের অবাধ গতি। জনৈক বিদুষী লাইব্রেরীয়ান সহাঙ্গমুখে পুস্তকাগারের এ-ধার ও-ধার গিয়া পাঠকদের সাহায্য করিতেছেন । পুস্তকের সংখ্যা এক সহশের বেশী নহে, তবে সেগুলি পাণ্টাইয় ঘন ঘন নুতন নূতন পুস্তক রাখা হয় । পুস্তকনির্বাচন-গুণে সকল শ্রেণীর লোকে সেখানে আকৃষ্ট হইয়া থাকে। প্রাতে ১০টা হইতে সন্ধ্যা ৬টা পৰ্য্যন্ত এই লাইব্রেরী খোল থাকে. যে-বংসর এই লাইব্রেরী প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয় সে বৎসরের পাঠকসংখ্যা ছিল পচিশ হাজার। এখন ক্রমেই পাঠকসংখ্যা বাড়িয়া চলিয়াছে। - Soso তাহার সভ্যগণ এই উদ্যান-লাইব্রেরীর কল্পনা করেন। তাহাদের নির্দেশে মত এই অভিনব লাইব্রেরী পরিচালিত হইতেছে। নাগরিক সভা কেবল লাইব্রেরীস্থানের বেতনের ব্যয় বহন করেন। এরূপ বৃহদাকার মহীরুহ সকল স্থানে দ্বল্লভ। মান্দ্রাজ আদিয়ার লাইব্রেরীর সন্নিকটে একটি বিরাট বৃক্ষ দেখিয় ছিলাম, তবে তাহ রৌদ্রবৃষ্টি উপেক্ষা করিতে পারে এরূপ ঘনপল্পবিত নহে। তাহার তলে থিমুসফিক্যাল কনভেন্সান হইয়াছিল। দুই সহস্ৰ লোক এই বৃক্ষতলে বসিয়াছিলেন। আমাদের দেশে বহু প্রাচীন কালে বৃক্ষতলে বসিয়া অধ্যাপন চলিত। বোলপুর শান্তিনিকেতন বিশ্বভারতীর অধ্যাপকগণকে লিসবন অবৈতনিক বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি সভা আছে। বৃক্ষতলে বসিয়া অধ্যাপন করিতে দেখিয়াছি । -ബ বাংলার অবনত ও অনুন্নত জাতি ঐরামানুজ কর বাংলা গবর্ণমেণ্ট কি নীতি ধরিয়া এই জাতিগুলিকে অবনত পয্যায়ভুক্ত করিয়াছেন ? বাংলার বাহিরে অষ্ঠাষ্ঠ প্রদেশের অবনত জাতির সহিত বাংলার অবনতপৰ্যায়ভুক্ত এই সকল জাতির সহিত তুলনাই হইতে পারে না। বাংলার অবনত পৰ্য্যায়ভুক্ত জাতিগুলি শিক্ষা আচার ব্যবহার ও সামাজিক পদমর্যাদায় অন্যান্ত প্রদেশের অবনত জাতির তুলনায় অনেক উচ্চে স্থান পাইবে। যাহার অস্পৃশ্ব অথবা যাচাদের জল আচরণীয় নছে, তাহাদিগকে যদি অবনত পৰ্যায়ভুক্ত করিতে হয় তাহা হইলে বাংলার কোন জাতিই অবনত পৰ্যায়ভুক্ত হয় না। বাংলায় বাউর, মাল, হাড়ী প্রভূতি জাতীয় স্ত্রীলোকের ধাত্রীর কাজ করিয়া থাকে। ব্রাহ্মণ প্রভৃতি উচ্চজাতীয় প্রস্তুতি যতদিন স্বতিকাগারে থাকে ততদিন বাড়ির কোন স্ত্রীলোক সুতিকাগারে প্রবেশ করে না। প্রস্তুতি এই সময়ে এই সকল নিম্নজাতীয় স্ত্রীলোকের আনীত জল পান করে ইহাদের স্পৃষ্ট অন্ন ভোজন করে। ধাত্রও স্থতিকাগারে শয়ন করে। এদেশে একটি প্রবাদ আছে, “আসতে বাউর, যেতে বাউী বাউর ব্যতীত গতি নাই।" অর্থাৎ জন্ম ও মরণ উভয় সময়েই বাউরীর সাহায্য আবশ্বক। জলপান করে। উচ্চ জাতির কুটুম্ব বাড়িতে তত্ত্ব পাঠাইতে হইলে বাগদী লোহার প্রভৃতি জাতি দধির ভার লইয়া যায়। তালিকাভুক্ত কয়েকটি জাতি বাংলার সর্বত্র জল আচরণীয় কয়েকটি জাতি স্থানবিশেষে জল আচরণীর। মেদিনীপুর ও হাওড়া জেলার মাহিষ্ক জাতি জল আচরণীয়, বাকুড়া ও হুগলী জেলায় জল আচরণীয় নহে । কুড়মী জাতি পশ্চিমবঙ্গে জল আচরণীয় নহে কিন্তু উত্তরবঙ্গে জল আচরণীয়। কতকগুলি জাতির ব্রাহ্মণে পৌরোহিত্য করেন। বাংলায় মাটির প্রতিম পূজা হয়। বাংলার বাহিরে ইহার প্রচলন কম । দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের সময় বাউর প্রভৃতি জাতি ইহা বহন করিয়া লইয়া যায়। প্রতিবৎসর দুর্গ ও কালী মন্দিরে পচর দিবার সময় এই সকল নিম্নজাতীয় লোকই নিযুক্ত হষ্টয় থাকে। দেবালয়েও তাহাদের অবাধ প্রবেশ। যারাগান ও কীৰ্ত্তনের সময় এই সকল নিম্নজাতীয় লোক ব্রাহ্মণাদি উচ্চজার্তায়ের মধ্যে আসরে নামিয়া অভিনয় করে। বৰ্ত্তমানে বাঁকুড়া জেলার প্রধান কীৰ্ত্তন গায়ক লোহার জাতীয়। কবির লড়াইয়ের সময়ও এই সকল নিম্ন জাতীয় কয়েক ব্যক্তি বেশ খ্যাতি লাভ করিয়াছিলেন । ডোম প্রভূতি জাতি ধৰ্ম্মরাজ ঠাকুরের পুজক। ব্রাহ্মণাদি জাতীয় স্ত্রীলোকেরা পর্যন্ত ধৰ্ম্মরাজ ঠাকুরের মানত ও ব্রত করিয়া ইহাদের বাড়িতে গিয়া ঠাকুরের পূজা দিয়া আসেন, পূজকেরাই পূজা করিয়া থাকে, ব্রাহ্মণে করেন না; অর্থাৎ ব্রাহ্মণেরও এই সকল জাতির পৌরোহিত্য মানিয়া লন । উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালগ্নে হেড পণ্ডিতের পদটি ব্রহ্মণ পণ্ডিতের একচেটিয়া। বর্তমানে কপু জাতীয় জনৈক শিক্ষক সরকারী উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয়ে হেড পণ্ডিতের কার্ষা করিতেছেন। বাংলা দেশে ব্রাহ্মণের সংখ্যা ১৪,৪৭,৬৯১ ইহার মধ্যে ৪,৬৯,৬৮৮ জন ছাপ্পল্পটি থাকে বিভক্ত। এই শ্রেণীর মধ্যে এমন কয়েকটি শ্রেণী আছে যাহাঁদের জল সৎ শূদ্রেরা পান করে না। তাহা হইলে ইহারাও কি অবনত পৰ্য্যায়ভুক্ত হইবেন ? বৈদিক শ্রেণীর ব্রাহ্মণেরা অস্ত ব্ৰাহ্মণের অন্ন ভোজন করেন না। আবার উচ্চশ্রেণীর ব্রাহ্মণের সহিত বর্ণ ব্রাহ্মণের বৈবাহিক আদান প্রদান চলিতেছে। কয়েক বৎসর পুলে ব্রাহ্মণের সৎশুদের বাটতে বিবাহ শ্ৰাদ্ধাদি উপলক্ষে লুচি সন্দেশ গুড় ভোজন করিতেন ; অন্ন কি লবণ মিশ্রিত তরকারী থাইতেন না। বর্তমানে ব্রাহ্মণের সৎশুদের বাটতে কাৰ্যোপলক্ষে অবাধে আল্লাদি আহাৰ্য্য ভোজন করিতেছেন। আবার উচ্চশ্রেণীর ব্রাহ্মণেরাও এই সকল অবনত পৰ্যায়ভুক্ত কোন জাতির বাটতে গিয়া নিজে পাক করিয়া অাদি ভোজন করিয়া থাকেন। বাংলায় অবনত জাতির তালিকা প্রস্তুত করিতে হইলে হয় সকল জাতিকেই বাদ দিতে হইবে নতুবা ব্রাহ্মণ হইতে সকল জাতিকেই এই তালিকাভুক্ত করিতে হইবে।