পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Hss్చ এই প্রসঙ্গে বলা আবঙ্গক মনে করিতেছি, যে, প্রবাসীসম্পাদকের তত্ত্বাবধানে চিনির কারখানা প্রতিষ্ঠিত হইতেছে বলিয়া যে বিজ্ঞাপন খবরের কাগজে বাহির হইতেছে, তাহ মিথ্যা। প্রবাসী-সম্পাদক কোন চিনির কারখানার পৃষ্ঠপোষক, তত্ত্বাবধায়ক, মালিক বা অংশীদার নহেন। বাংলা দেশের লোকসংখ্য। প্রদেশগুলির মধ্যে অধিকতম বলিয়া এখানে স্নতি কাপড়ের কাটতিও খুব বেশী। ইংলণ্ডে কাপাস হয় না, জাপানে কাপাস হয় না। অথচ কার্পাসের স্বতা ও স্বতি কাপড় প্রস্তুত করিয়া ইংলণ্ড ধনী হইয়াছে, এখন ঐ ব্যবসায়ে জাপান ইংলণ্ডকেও পরাস্ত করিতেছে । বাংলা দেশে আগে ভাল কাপাস হইত, এখন বাহ হয় তাহ নিকৃষ্ট রকমের ও পরিমাণে অল্প । কিন্তু ভাল কাপাস এখনও হইতে পারে, পরিমাণেও বেশী হইতে পারে। বাংলা গবন্মেণ্ট ও বাঙালীরা এ-বিষয়ে যথেষ্ট মন দিতেছেন না । বিশ্বভারতীয় শ্রীনিকেতন ভাল কার্পাসের চাষের পরীক্ষা করিতেছেন। বাংলা দেশে যত কাপড়ের কল হইয়াছে, তার চেয়ে আরও অনেক বেশী হওয়া উচিত। এখানে একটা কথা উঠতে পারে, যে, কাপড়ের কল বাড়াইলে তাহার মজুর ত বেশীর ভাগ বঙ্গের বাহির হইতে আসিবে, স্বতরাং তাহাতে বঙ্গের সাধারণ লোকদের—অধিকাংশ লোকদের—-কি লাভ ? ইহার উত্তরে বলা যাইতে পারে, যে, কলের মজুর স্থানীয় লোকদের মধ্য হইতে সংগ্ৰহ করিবার বিশেষ চেষ্টা করিতে হইবে । সে-চেষ্টা যদি সফল না হয়, তাহ হইলে বাঙালী জনসাধারণ কাপড়ের কল স্থাপন দ্বারা লাভবান না হইলেও মূলধনী বাঙালীরা ত লাভবান হইবে। এখন যে বাঙালী জনসাধারণ ও বাঙালী মূলধনী কেহই কাপড়-উৎপাদন কাৰ্য্য হইতে বিশেষ লাভ পাইতেছে না। কাপড়ের কলের শ্রমিক কেবল যে অশিক্ষিত জনগণের মধ্য হইতে সংগ্রহ করা যায়, এমন নয়। ইংলণ্ডের, জাপানের, এবং অন্যান্য সভ্য দেশের কারখানার শ্রমিকরা লেখাপড়া জানা লোক । আমাদের দেশের লেখাপড়া-জান লোকদেরও এই কাজে যাওয়া উচিত এবং কলের মালিকদেরও তাহাদিগকে লওয়া উচিত। সাধারণ কেরানীর আয় অপেক্ষা কলের শ্রমিকের রোজগার সব স্থলে কম নয়। কলকারখানার পরিচালকরা শ্রমিকদের সহিত ভজ ব্যবহার করিলে শিক্ষিত বেকার SనOBO ভদ্রলোকদের শ্রমিক হুইবার অনিচ্ছা ক্রমশঃ কমিবে } ভদ্রব্যবহার এখন কোথাও হয় না, এমন নয়। সম্মিলিত স্বরাজসংগ্রামের সর্ত আগের একটি নিবন্ধিকায় বলিয়াছি, হিন্দু-মুসলমান প্রভৃতি সব সম্প্রদায় একমত হুইয়া একত্র স্বরাঞ্জলাভচেষ্টা না করিলে স্বরাজ লব্ধ হইতেই পারে না, এইরূপ মতপ্রচারে অনিষ্ট হইয়াছে। কি অনিষ্ট, তাহ সুবিদিত। বিস্তর মুসলমান ভাবিয়াছেন, হিন্দুদের যখন স্বরাজলাভের গরজ এত বেশী, তখন তাদের কাছ থেকে যত বেশী সম্ভব সুবিধা আদায় করিয়া লইয়া তবে স্বরাজসংগ্রামে সম্মতি দেওয়া যাইবে ; স্বরাজলাভের চেষ্টাটা প্রধানতঃ হিন্দুরা করিবে, সুবিধাটা যথাসম্ভব বেশী আদায় করিবে মুসলমানেরা। এইরূপ মনোভাবের দৃষ্টান্ত পুনশ্চ কয়েক দিন আগেও পাওয়া গিয়াছে। খান বাহাদুর হাফিজ হিদায়ং হুসেন একজন নামজাদ ব্যক্তি । তিনি বিলাতী জয়েন্ট পালেমেন্টারী কমিটিতে সাক্ষ্য দিবেন। তিনি কানপুর হইতে হিন্দুদিগকে জানাইয়াছেন, যে, ব্রিটিশ প্রধান মন্ত্রীর সাম্প্রদায়িক ভাগবাটোয়ার পত্রে মুসলমানদের যেসব দাবি মধুর হয় নাই, হিন্দুরা যদি সেগুলিতে রাজী হয়, তাহা হইলে তিনি ও অন্যান্য মুসলমান সাক্ষীর জয়েন্ট পালেমেণ্টারী কমিটিতে হিন্দুদের সঙ্গে একযোগে “জাতীয় দাবিসমূহ (ন্যাশান্তাল ডিমাওল) পেশ করিবেন। হিন্দুদের প্রতি কি অনুগ্রহ ! চট্টগ্রামের হিন্দুদের নূতন দুঃখ চট্টগ্রামের হিন্দুদের কয়েক বৎসর ধরিয়া যে লাঞ্ছনা ও দুঃখ ভোগের অধ্যায় আরম্ভ হইয়াছে তাহা এখনও শেষ হয় নাই। বিপ্লবী বলিয়া অভিযুক্ত কয়েক ব্যক্তি নিরুদ্ধেশ থাকায় চট্টগ্রামের হিন্দুদের অনেক হাজার টাকা পাইকারী জরিমানা হয়। তাহার পর উহাদের কয়েক জন ধৃত হইয়াছে বটে, কিন্তু তাহা পুলিস ও সৈনিকদের দ্বারা, বেসরকারী হিন্দুদের সাহায্যে নহে। এখনও কয়েক জন ধৃত হইতে বাকী আছে। গবন্মের্ণ নিয়ম করিয়াছেন, ১২ হইতে ২৫ বৎসর বয়স্ক প্রত্যেক হিন্দুকে লাল নীল সাদা এই তিন রকম রঙের কোন এক রকম তাস সৰ্ব্বদা সঙ্গে রাখিতে