পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Webs o i) ఏOBO দাদা বলিল,—“কিন্তু তুই এ-সকল রিভলুশনারি আইডিয়া ( বিপ্লবজনক ভাব) ছড়িয়ে ঘরে ঘরে বিদ্রোহ ও অশান্তির স্বটি করবি না কি ?” আমি বলিলাম,—“ভয় নাই, দাদা, তোমার বউ আন্ধক । তাকে আমি এ-সকল কথা শেখাব না । সে তোমার শ্রীচরণের দাসী হয়ে থাকবে।” দাদা হাসিয়া বলিল,—“আজকালকার দিনে কেউ কারও দাসী হয় না, পূৰ্ব্বেও ছিল না। গৃহিণী সচিবঃ সখী মিথ – মনে আছে ত?” আমি বলিলাম,-“সে-সকল প্রাচীন আদর্শ ( ideal ) ত ভালই ছিল, তখন নারী আপনার আত্মসম্মান বজায় রেখে চলতে পারত। তাহার বিরুদ্ধে আমার কিছু বলবার নেই। সেকালের আদর্শ ছিল, যত্ৰ নাৰ্যস্ত পূজান্তে রমস্তে তত্র দেবতাঃ। স্বতরাং দিবাকর শর্শ্ব যে বলছেন, নৈতিক হিসাবেও নারী পুরুষের চেয়ে অপরুষ্ট, সেটা সত্য ও শাস্ত্রীয় নয়। কারণ, যার নৈতিক হীনতা আছে, সে কেমন করে পূজা হতে পারে –আচ্ছা দাদা, তুমি যদি অনুমতি দাও তবে আমি তোমার জন্যে একটি বউ পছন্দ করে আনি ।” দাদা বলিল,—“দূর হ, পোড়ারমুখী। নিজে বিয়ে করবিনে, আমাকে ভজাবার চেষ্টা । তোর মতন একটি বলশেভিক পেয়েছিল বুঝি ?” আমি হাসিয়া বলিলাম,—“দাদা, তোমার রাগ না আমার লক্ষ্মী। তবে আজই মাকে বলি যে দাদার বিয়েতে মত হয়েছে ।” দাদা বলিল,--“আমার পরীক্ষা নিকটে, এখন ওসব কথা শুনতে চাইনে " দাদা এই বলিয়া চলিয়া যাইবার পরও দিবাকর শর্মার কতকগুলা কথা আমার মনে খোচ দিতে লাগিল । পাশ্চাত্য দেশসকলে বিবাহের হ্রাসের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক পাপ বৃদ্ধির কথা ভারত-প্রভায় লেখা হুইয়াছে। কিন্তু আমাদের দেশে বিবাহ করিতে সবাই, বিশেষতঃ নারীরা, ত বাধা ; তাহা সত্ত্বেও এ দেশেও ত ঐ পাপ রহিয়াছে এবং হয়ত বাড়িতেছে, এবং তাছার জন্ত পুরুষরা কম দামী নয়, বরং বেশী। এ-সৰ কথা কি দিবাকর শর্ণার মনে ছিল না? আর পাশ্চাত্য দেশে উচ্চ-শিক্ষিতারা অনেকেই বিবাহ করেন না, লেখা হইয়াছে। সে বিষয়েও দিবাক্ষর শর্ণার জ্ঞান খুব আধুনিক নয়। এই সেদিন ইণ্ডিয়া স্থাও দি ওয়ালর্ড মাসিকে একজন বিশেষ অভিজ্ঞ মার্কিন-মহিলা লিখিয়াছেন, ১৯৯৯ খ্ৰীষ্টাব্দের জাগে পৰ্য্যন্ত অৰ্দ্ধেকের চেয়ে কম আমেরিকার মহিলা গ্রাজুয়েটর বিবাহ করিতেন এবং গড়ে তাহদের একটি করিয়া সন্তান হইত ; কিন্তু গত কয় বৎসরের সংখ্যা বিশ্লেষণ করিয়া দেখা গিয়াছে, যে, শতকরা প্রায় ৭৫ জন এখন বিবাহ করেন এবং গড়ে তাহদের দুই-তিনটি করিয়া সস্তান হয়। তিনি আরও লিথিয়াছেন, যে, আমেরিকার নারীকলেজসমূহ এখন ছাত্রীদিগকে বিশেষ ভাবে গাহৰ্ষ্য জীবনের জন্য শিক্ষা দিবার ব্যবস্থা করিতেছেন, কিন্তু সবাইকেই বিবাহ করিতেই হইবে, এমন কথা তাহারা বলেন না । \$2, দাদার বিবাহের জন্য অনেক দিন হইতেই মা অনুযোগ করিতেছিলেন। দাদা কেবলই বলিত, “ম, আইবুড়ে বোন ঘরে থাকতে আমার বিয়ের জন্য এত ব্যস্ত হয়েছ কেন ? আগে নীরুর বিয়ে দাও দেখিনি ?” ম৷ বলিতেন, “মেম্বের ত ধতুৰ্ভঙ্গ পণ, সে বি-এ পাস না করে বিয়ে করবে না-- কিন্তু বাছা, আমার বয়স ত কমছে না, বাড়ছেই, আমি যে আর একলা সংসারের ঝক্কি সামলাতে পারছি নে। আমার শেষ কালে একটু স্থখ যদি হয়, তা ত তোরা হতে দিবি নে ?” এই বলিয়া মা একদিন চোখের জল ফেলিলেন । মায়ের চোখের জল দেখিয়া আমি দাদার পিছনে লাগিলাম। অবশেষে দাদা বলিল, “আচ্ছা ভাল একটা মেয়ে খুঁজে দ্যাখ_r” আমি —“অর্থাৎ সে-মেয়ে রূপে লক্ষ্মী ও গুণে সরস্বতী হবে ? এই ত?” দাদা বলিল, “আমি তোর মত বিদুষী চাইনে।” আমি বলিলাম, “তোমার ভয় নেই, দাদা ; আমি এমন একটি মেয়ে খুজে আনবে যে, সে তোমার শ্রীচরণে দাসশ্বত লিখে দেবে।” বেথুন স্কুলের প্রাইজের দিন প্রমীলা নামে একটি মেয়েকে দেখিয়া সকলেই আকৃষ্ট হইয়াছিল। সে দ্বিতীয় শ্রেণীতে প্রথম হইয়া মাটিক শ্রেণীতে উঠিছিল। যেমন দেখিতে স্বন্দরী, তেমনই খুব উৎকৃষ্ট আবৃত্তি করিয়াছিল। তবে গানে আর একটি কালে মেয়েই সকলের সেরা হইয়াছিল। ইহা