পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●ाUद{ যখন খাওয়া শেষ হয় তিনি তখন র্তাহার পাত তুলিয়া চলিয়া যান। পাতে কেহ কিছু ফেলেন না । আমার খাওয়া শেষ হইয়াছে দেখিয়া একটি মেয়ে আমার পাত তুলিতে আসিলেন। আমি তাহাকে বলিলাম, আমি ত এখন আর আপনাদের অতিথি না ; আমি আপনাদেরই একজন।" মেয়েটি আর কোন পীড়াপীড়ি না করিয়া চলিয়া গেলেন । একটা মোটা লোহার নলের মধ্যে মধ্যে দশ-বারটা ট্যাপ, বসান আছে। তাঁহাতেই যে যার থালা বাটি মুখ ধোয় । সেই জল শাকসব্জীর ক্ষেতে গিয়া পড়ে। আমার পাশের কলে মহাত্মাজীর স্ত্রী তার থালা বাটি ধুইতেছিলেন। আমি তাহাকে নমস্কার করাতে তিনি যেন জিজ্ঞাস্বগৃষ্টিতে আমার দিকে চাহিয়া রহিলেন । আমি বলিলাম, “আমি শাস্তিনিকেতন হইতে আসিয়াছি।” তিনি স্নেহশীলার দ্যায় জিজ্ঞাসা করিলেন, “সেখানে সব ডাল ত ?” আমি বলিলাম,--“সকলেই ভাল ।” মিঃ রেণল্ডস্ খালি গায় খালি পায় ও এক হাফপ্যান্ট পরিয়া ছিলেন। থালা বাটি ধুইয়া তিনি ঘরে চলিয়া গেলেন। দুপুরের আহারের পর একটা পৰ্য্যন্ত যে যার ঘরে বিশ্রাম বা পড়াশুনা করে। একটা হইতে পাচটা পৰ্য্যস্ত র্তাতঘরে কাজ চলে। সেখানে তুলার পাজ হইতে কাপড় বুন। পৰ্য্যন্ত সব কাজই হয়। সে সময় জাতীয় সপ্তাহ ছিল বলিয়া খন্দরের জন্ত সকলেই সময় দিত বেশী, অনেকে অন্ত কাজও করিত। অহিংস সংগ্রামের জন্ত ক্লাস সব বন্ধ ছিল । বেল ৬টার সময় রাত্রির আহারের ঘণ্টা পড়িত। নিয়ম পদ্ধতি সব দুপুরের মতই। কেবল ভাতের স্থানে খিচুড়ী হইত, তাতেও কোন মসলা ছিল না। স্বধ্য অস্তের পর উপাসনার ঘণ্টা পড়ে। আশ্রমবাসী সকলেই একে একে প্রার্থনার স্থানে সমবেত হইলেন । বালুর উপর এক দিকে বলিয়া গেলেন মেয়েরা, অন্ত দিকে বসিলেন ছেলেরা। নীচে দিয়া সবরমতী নদী বহিয়া চলিয়াছে, চারিদিকে গাছপালায় ঢাকা, উপরে নক্ষত্ৰখচিত নিৰ্ম্মল আকাশ । একটি অধ্যাপক তানপুরায় স্বর দিয়া ভজন ধরিলেন, “রঘুপতি রাষৰ রাজারাম পতিত পাৰল সীতারাম।" जबङ्गबर्डौ Woë2 সকলে মিলিয়া সমস্বরে বার কয়েক গাহিবার ও অন্ত সৰ স্তোত্র পাঠ করিবার পর আশ্রমের কাজকৰ্ম্ম সম্বন্ধে আলোচনা হইতে লাগিল। আলোচনা সব গুজরাটীতে হুইতেছিল বলিয়। বুঝিতে পারিলাম না। কিন্তু আমার মনে ছেলেবেল महच्चाहौद्र शश्न হইতে রামায়ণ মহাভারতের গল্প শুনিয় মুনি ঋষিদের আশ্রমের যে একটি ছবি ছিল, তাহা যেন জীবনে এক্ট প্রথম উপলব্ধি করিতে লাগিলাম এষ্ট প্রার্থনার স্বানে। মহাত্মা গান্ধীও সকাল সন্ধ্যায় সকলকে লষ্টয়৷ এই বালুর উপর বসিয়৷ উপাসনা করেন। উপাসনার পর রাত্রি ৯টা পৰ্য্যস্ত কেউ কেউ গান, গল্প, দেশের আলোচনা ও ধর্মের আলোচন ইত্যাদি করিম। কাটায়। সমস্ত দিনের পর সেই সময়টুকুষ্ট যেন চুটি । পরদিন নারায়ণ দাস গান্ধীকে বললাম, আমাকেও কিছু কাজ দিন। আমি ত বৰ্ত্তমানে আপনাদের অতিথি নই। তিনি একটু হাসিয়া বলিলেন, “আচ্ছ তা হবে।” পর দিন আমার কাজ পড়িল আশ্রম পরিষ্কারের। আমি, রণছোড় শেঠ, রেণল্ডস এক বাড়ির ভিন্ন ভিন্ন ঘরে থার্কিতাম। আমিও তাদের সঙ্গে কাজে লাগিয়া গেলাম। একটা সক বাশের ডগায় ছড়ান ভাবে নারিকেল পাতার সক কাঠি বাধা থাকে। একস্থানে ধাড়াইয় তিন-চার হাত দূরের আবর্জন সব টানিয়া আনিয়া এক স্থানে জড় করা হয়, পরে সবগুলি গর্ভে ফেলিয়া আগুন লাগাইয়া দেওয়া হইত। এই ভাবে ধারা ৰে ঘরে থাকেন আশ-পাশের জায়গা সব গুৱাই পরিষ্কার করেন। নেহাৎ দূৰ্বাঘালশূন্ত বালুময় মরুভূমি বলিয়া, নতুবা এত মূত্রে আশ্রম কত না স্বন্দর দেখাইত ।