পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२झ न९था1 ] ইতে যে বৃষ্টিমান ছিল ; এখন এই বিজ্ঞানের দিনে, তাহাই দুই চারি স্থানে স্থাপিত আছে। পূর্বে ধ্বজারোপণ দ্বারা প্রবহদিক্ নির পিত হইত। এখন তাহাও দেখিতে পাই না। বৰ্দ্ধমান, মেদিনীপুর, পুরুলিয়াতে আবহলক্ষণ লিখিত হইতেছে, বাঁকুড়াতেও হইত, কিন্তু, স্বল্পব্যয় বঁাচাইবার অভিপ্রায়ে গভমেণ্ট, আবহলিখন উঠাইয়৷ দিয়াছেন, বাঁকুড়া ই ন কিছুই বলে নাই। সারস্বত সমাজ থাকিলে উঠিয়া যাইত কি ? মনে রাখিবেন, বহু, বৎসরের এবং বহু স্থানের আবহলক্ষণ না পাইলে বিচার চলিতে পারে না । বাঁকুড়ার ভূমি প্রাচীন, মধ্য ও পূর্ববঙ্গের ন্যায় আধুনিক হে। ভূবিদ্যার ভাষায় বাকুড়া তৃতীয় যুগের, স্থানে স্থানে দ্বিতীয় যুগেরও চিহ্ন আছে। মধ্য ও দক্ষিণ ভারত এই রূপ প্রাচীন। কত কাল গিয়াছে, কত বৃষ্টি বাত্য বহিয়া গিয়াছে, কত ‘নৃতন নদীনালার স্থষ্টি হইয়াছে, কত পুরাতন পাহাড় সমভূমি হইয়া গিয়াছে। শনিলে আশ্চর্য বোধ হয়, বাঁকুড়া শহরের পশ্চিমভাগ দিয়া বন্য বহিয়া যাইত, অনতিদূরে কোচপাথরের পাহাড় ছিল, তাহার খণ্ডসকল এখানে ওখানে, কোথাও বা রাশি রাশি, সঞ্চিত রহিয়াছে। এইরূপ দেখিতে দেখিতে পাথর্যা কয়লা আবিষ্ক ত হইয়াছে। পূর্বকালে পাথর্যা কয়লা জানা ছিল না, কিন্তু, সিংহভূমির খনিজ আকর সব অজানা ছিল না । লোহার জাতি আকর হইতে লৌহ পৃথক্ করিত ; টাটা কোম্পানীর লৌহ আবিষ্কার নূতন কথা নহে। সিংহভূমি, তুঙ্গভূমি, শেখর-ভূমি, ধবলভূমি, বীরভূমি, বরাহভূমি প্রভৃতি নাম হইতে বুঝি এই স্থান দিয়া আর্যগণের যাতায়াত ছিল । তাহারা কলাকমকরিতেন না, কিন্তু ধাতু ও রত্ব পরীক্ষা করিতেন। সেকালে যাহা ছিল, এই নব্যশিক্ষণব দিনে তাহাও যে দেখিতে পাই না । বাকুড়ায় একটা বড় কলেজ, তিন চারিটা ইফুল আছে । শিক্ষিত রাজকমচারী আছেন, শতাধিক উকীল আছেন । শতাধিক দৈনিক সংবাদপত্র প্রচারিত হয়, অন্ততঃ দুইশত পাঠক আছেন। অথচ সাধারণ গ্রন্থশালা নাই | সঙ্গীত বাঁকুড়া সারস্বত সমাজের উদবোধন-পত্ৰ . এইসবে অস্তত: ৭০।৭৫ জন শিক্ষক আছেন। . Հ8 9 . به محاصه حس حصاحبه بحر احمراهحصاحبه চর্চা কিছু আছে, কিন্তু, কাব্য ও পুরাণ ও ইতিহাস পাঠের প্রয়াস কই ? বহু নগরে গ্রন্থশালা নাই, কিন্তু, সেটা উপস্থিত প্রশ্নের উত্তর হইতে পারে না । সাহিত্যচর্চ ব্যতীত কেমন করিয়া চিত্ত সরস থাকিতে পারে, কেমন করিয়া মানসিক পুষ্টি লাভ হইতে পারে? আমরা ভাত খাইয়া বঁচিয়া নাই ; বাচিয়া আছি আমাদের সাহিত্যের প্রভাবে । কে আমাদের ধম ও নীতি, আচার ও ব্যবহার বাধিয়া দিয়াছে ? কে হতাশের সাত্বনা, উনমাৰ্গগামীর সংযম, তাপক্লিষ্টের শান্তি, দুঃখাতের আশ}, সঞ্চার করে ? নিরক্ষর পুর্থী পড়িতে পারে না, কিন্তু, আমাদের প্রাচীন ও নবীন সাহিত্যের রস হইতে বঞ্চিত নহে ৷ মানবজাতি মাত্রেই সাহিত্যের রসে জীবিত আছে । যখনই সে মানবু হইয়! জন্মিয়াছে, তখনই তাহার অতীতের স্মৃতি, ভবিষ্যতের ভাবনাও জুটিয়াছে। এই যে স্মৃতি, সে স্মৃতি স্ব স্ব চরিতস্থতি নহে, জাতিচরিত-স্মৃতি । বাঙ্গালীর জাতি-স্মৃতি বাঙ্গালীর নিত্য ধৰ্ম। ইতর প্রাণীর অতীতের স্মৃতি, ভবিষ্যতের চিন্তা নাই । তাহারা এক সহজ স্মৃতিবশে চলে । আমরা মানুষ হইয়া জন্মিয়া সহজস্থতি ব্যতীত আর-এক স্মৃতির বশে জীবনযাত্র নির্বাহ করিতেছি । সে স্মৃতি, জাতিস্মৃতি। বাঙ্গালীর জাতিস্থতি ইংরেজের নাই, ইংরেজের স্মৃতি বাঙ্গালীর নাই। এইবপ, হিন্দুস্থানী মারোআড়িী মরাঠা প্রভৃতির স্মৃতি বাঙ্গালীয় নয়। যত জাতি তত স্মৃতি । কিংবা স্মৃতি দ্বারাই জাতিভেদ ঘটে। সাহিত্য আর কিছু নয়, জাতিস্মৃতির বাহ্যপ্রকাশ । আমরা মানব, কাজেই মানবধমৰ্ম্মতি আমরা পাইয়াছি ; ভারতীয় বলিয়। ভারতীয় স্মৃতি এবং বাঙ্গালী বলিয়া বাঙ্গালী-স্মৃতি পাইয়াছি । লৌকিক আচারে, সামাজিক ব্যবহারে সে স্মৃতি আমাদের পথপ্রদর্শক । ভারতীয়স্কৃতি, আর্যস্মৃতি সংস্কৃত ভাষায় লিখিত আছে । অতএব সংস্কৃত ভাষা ন জানিলে নয় । মুখের বিষয়, বহু সংস্কৃতগ্রস্থ বাঙ্গালাভাষায় অহবাদিত হইয়াছে। আমরা বাঙ্গালাভাষা দ্বারা সংস্কৃতসাহিত্যের মম অবগত হইতে পারি। কিন্তু, এতদ্বারা সংস্কৃতসাহিত্যের রসগ্রহণ সম্যক হইতে পারে না । এই হেতু সারস্বতসমাজের