পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা] ছিলেন না। আমাদের হিন্দু বিধবাদের ন্যায় আচারনিষ্ঠা জগতে আর কোন জাতির মধ্যে নেই বললে অত্যুক্তি হবে না। বিধৰ্ম্মের প্রতি বিদ্বেষ তাদের মধ্যে যত প্রবল, হিন্দু পুরুষদের মধ্যে ততটা নয় । তথাপি এই হিন্দু বিধবাদের মধ্যে যারা স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় ধৰ্ম্মাস্তর গ্রহণ করেন, তাদের প্রগাঢ় নিষ্ঠা ও চিরাগত রীতিনীতি ও অভ্যাসগুলির আমূল পরিবর্তনের জন্য ত বেশী দিন আবশুক হয় না। এতেই দেখা যায় যে এ-সকল বাহ আচার ও বিধি-নিষেধের বন্ধন যতটা অচলপ্রতিষ্ঠ ও দুরতিক্রম্য বলে আমরা মনে করি, সেগুলি বাস্তবিক ততটা নয়, সেগুলি ঝেড়ে ফেলতে কেবল মানসিক ভাবের ঈষৎ পরিবর্তন আবশ্যক মাত্র। বলা বাহুল্য, আমি সদাচারের কথা বলছি না, অর্থ-শূন্ত ও অনিষ্টকর প্রথাগুলির কথাই বলছি। যদি অন্তোন্তের প্রতি সন্দেহটা কিঞ্চিৎ খৰ্ব্ব করে নিয়ে, ধৰ্ম্মের অন্তরঙ্গ সাধনগুলি যার যার নিজস্ব রেখে, অনাবশ্ব্যক বহিরঙ্গ সম্বন্ধে বন্ধনটা কতকটা শিথিল করে? দিয়ে, বিসস্বাদী মনটাকে একটুখানি পরস্পরাভিমুখী করে দেওয়া যায়, তা হ’লে বাহাকুষ্ঠানের পার্থক্যগুলি আমাদের মধ্যে যে দুর্ভেদ্য প্রাচীর গঠন করে রেখেছে, সেটাকে ভূমিসাৎ করতে বেশী বেগ পেতে হয় না। এটা বেশ দেখতে পাওয়া যায় যে, আমাদের সমাজে একবার একটা কিছু চালিয়ে নিতে পারলে সেটা বেশ চলে যায়। আভিজাত্যগৰ্ব্বিত রাজপুত-মহিলাদের মোগল-অস্তঃপুরে প্রবেশপ্রথাটা বেশ দাড়িয়ে গিয়েছিল ; শ্ৰীযুত চিত্তরঞ্জন দাশ অসবর্ণ বিবাহ করেও এবং নিজের পরিবারে চালিয়েও দেশবন্ধুর সম্মানিত পদে আসীন , অনেক নিমজাতি উপবীতী হয়েছে বলে তাদের হিন্দুত্বের দাবী অগ্রাহ হয় না ; কালাপানি পার হলে আজকাল আর জাতি যায় না –কেবল একটা গভীর inertia বা জড়তার অচলায়তন আমাদের পথ জুড়ে রয়েছে। যদি দেশের কতকগুলি শিক্ষিত ভদ্রলোক একসঙ্গে সেটাকে আমাদের লক্ষ্য 886: একটা ধাক্কা দিতে সাহস পান, তা হলে হিন্দুস্থানীর দাবী সম্পূর্ণ বজায় রেখেই পংক্তিভোজন ও বিবাহক্ষেত্রে সাম্যনীতি অবলম্বন করে প্রকৃত জাতি-সংগঠনের সহায়তা করতে পারেন। এ কথাগুলি বলার বিশেষ আবশ্যক হয়েছে এজন্য যে, এখন আর হিন্দু মুসলমান একান্ত পৃথক থেকে স্বরাজ্যের কল্পনা করলে চলবে না। মহম্মদ ঘোরী ও মহম্মদ গজনবীর পূৰ্ব্বে সম্রাট হর্ষবর্ধনের যুগে, সে কল্পনা সম্ভবপর ছিল, যদিও তখন ভারতে বৌদ্ধসমস্যা একেবারে বিলুপ্ত হয়নি। ভারত জুড়ে এখন হিন্দু-মুসলমান পাশাপাশি বাস করছে, এখন একে অন্তকে অতিক্রম করে' রাষ্ট্রগঠনের স্বপ্ন দেখলে তাকে বাতুল ব্যতীত আর কিছু বলা চলে না।* সুতরাং ধৰ্ম্মসম্বন্ধে পার্থক্য থাকলেও অন্যান্ত সভ্য জাতির ন্যায়, সামাজিক হিসাবে হিন্দুমুসলমানকে এক হতে হবে। যদি হিন্দু-মুসলমান উভয়ে মিলিত হয়ে, ধৰ্ম্মগত স্বরাজ্যের ব্যর্থ কল্পনায় কাল অতিবাহিত না করে’, “এই ভারতের মহামানবের সাগরতীরে” “যে বিশাল প্রাণ” জন্মলাভ করবে, তার অস্থপ্রেরণায় এক বিরাট ভারতীয় জাতি গঠনে প্রস্তুত হয়ে সৰ্ব্ব প্রকার অস্বাভাবিক মানবরচিত কৃত্রিম বাধাবিঘ্নগুলি দূর করার সমবেত চেষ্টায় একাগ্রভাবে মনোনিবেশ করেন, তবেই প্রতিকূল রাজশক্তির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় স্বরাজ্যলাভ সম্ভবপর হবে ; নতুবা জাতীয় একতা যে অর্থশূন্ত প্রলাপে মাত্ৰ পৰ্য্যবসিত হবে, এর থেকে অধিকতর স্বতঃসিদ্ধ কথা আর কিছু আমার জানা নেই । ] ^^.*Aూ.^_~~్క^^^. “দর্শক”

  • কংগ্রেসের বিগত অধিবেশনের সভাপতি মৌলানা মহম্মদ আলী এইরূপ কথা বলেছেন । তিনি বলেছেন :~~"One thing is certain and it is this, that neither can the Hindus exterminate Musalmans today, nor can the Musalmans get rid of the Hindus", *estfä owcow worsicaä অধিবেশনের পূৰ্ব্বে অগ্রহায়ণ মাসে উপরের কথাগুলি লিখেছিলেন।