পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९छै न९को ] করিবার কৃষ্ট করা বৃথা। আমরাও অষ্টায়রূপে সামঞ্জস্য করিবার চেষ্টা করিব না। অামাজিগের আলোচ্য ৰিষয় “উপনিয়দের ব্ৰহ্মবাদ’ । আমরা সাম্প্রদায়িকতার অতীত হইয় এবং ঐতিহাসিক প্রণালী অবলম্বন করিয়া ৰিভিন্ন ঋষির ব্ৰহ্মবাদ ব্যাখ্যা করিবার চেষ্টা করিব । যাজ্ঞবল্ক্যের মত অনেকে মনে করেন, উপনিষৎসমূহের মধ্যে বৃহদtরণ্যক উপনিষৎই সৰ্ব্বাপেক্ষ প্রাচীন। যাজ্ঞবল্ক্য এই উপনিষদের প্রধান ঋষি। তিনি ব্ৰহ্ম-বিষয়ে যে তত্ত্ব প্রকাশ করিয়াছেন তাহা অতি স্বক্ষ ও জ্ঞানগর্ভ। সৰ্ব্বপ্রথমে তাহারই মতামত আলোচনা করা যাউক । মৈত্রেয়ী-ব্রাহ্মণ (ट्रश: 8I¢ ; २॥8) মৈত্ৰেয়ী যাজ্ঞবল্ক্যের অন্যতর পত্নী। বাণপ্ৰস্থাশ্রম অৰলম্বন করিবার সময়ে যাজ্ঞবল্ক্য মৈত্রেয়ীকে যে উপদেশ দিয়াছিলেন, তাহা উপনিষদের দুইটা স্থলে ( ৪৫ ; ২৪ ) বর্ণিত আছে। এই দুইটা অংশেরই নাম "মৈত্রেয়ীব্রাহ্মণ" । উভয় ব্রাহ্মণেই ভাষা অধিকাংশ স্থলেই এক ; দুই-একটি স্থলে যে পার্থক্য আছে, তাহা গুরুতর নহে । আত্মাই ব্ৰহ্ম এই ব্ৰাহ্মণে আত্মাকেই ব্ৰহ্ম বলা হইয়াছে। উপনিষদের যুগে ‘ব্ৰহ্ম’ ও আত্মা শব্দ কি অর্থে ব্যবহৃত হুইত আমরা পূৰ্ব্বে দুইটা প্রবন্ধে তাহার আলোচনা করিয়াছি। ংক্ষেপে বলা যাইতে পারে যে, অধিকাংশ স্থলেই ‘ব্ৰহ্ম’ শব্দ গুণবাচক। যিনি সৰ্ব্বমূলাধার, যাহা হইতে এই সমুদায় উৎপন্ন হইয়াছে, উৎপন্ন হইয়া যাহাতে প্রতিষ্ঠিত রহিয়াছে, এবং যাহাতে এই সমুদায় লয় প্রাপ্ত হয়, তাহাক্সেই ব্ৰহ্ম বলা হইয়াছে। এখানে প্রশ্ন—কোন বস্তু ব্ৰহ্ম ? তিনি কে, যিনি স্বষ্টি স্থিতি ও প্রলয়ের কারণ ? যাজ্ঞবল্ক্য বলেন, আত্মাই সেই বস্তু ; আত্মাই স্থষ্টি স্থিতি ও প্রলম্বের কারণ ; অর্থাৎ আত্মাই ব্ৰহ্ম।

  • অtয় এক আমরা সচরাচর জীবাত্মা ও পরমাত্মার মধ্যে পার্থক্য করিয়া থাকি ; কিন্তু যাজ্ঞবল্ক্য এপ্রকায় কোন পার্থক্য

উপনিষদের ব্ৰহ্ম لأنه لما করেন নাই । তিনি সৰ্ব্বত্রই "আত্মা” শব্দের ব্যবহার করিয়াছেন। তাহার উপদেশ বিশ্লেষণ করিলে মনে হয়, কোন স্থলে “আত্মা’ শব্দের অর্থ "জীবাত্মা’ এবং কোন স্থলে অর্থ ‘পরমাত্মা । ইহার সামঞ্জস্ত করিতে গিয়া ব্যাখ্যাকর্তৃগণ বিষম বিপদে পড়িয়াছেন এবং নানা মতের উদ্ভাবন করিয়াছেন। কিন্তু ইহার প্রকৃত অর্থ অতি সরল। আত্মা একই ; কোন স্থলে আমরা বলি জীবাত্মা, কোন স্থলে বলি পরমাত্মা। কিন্তু উভয় স্থলেই আত্মা এক ভিন্ন দুই নহে । আবার আমরা বলি মানব বহু, এবং এক-এক মানবে এক-এক আত্মা । ধাজ্ঞবল্ক্য বলেন, মানব ৰূহ হইতে পারে, কিন্তু আত্মা একই । ভিন্ন ভিন্ন মানবে যে আত্মা দেখিতে পাই তাহা বহু নহে ; একই আত্মা বহু মানবে প্রকাশিত হইয়াছে। কি প্রকারে এক আত্মা বহু রূপে প্রকাশিত হইল বা প্রকাশিত হইতে পারে, যাজ্ঞবল্ক্য তাহার বিচার করেন নাই। তিনি বুঝিয়াছিলেন এবং সেইজন্য বলিয়াছেন যে, আত্মা একই এবং এই আত্মাই ব্রহ্ম। মৈত্রেয়ী-ব্রাহ্মণে তিনি এই আত্ম-তত্ব বিষয়ে যাহা বলিয়াছেন, তাহ নিম্নে ব্যাথাত হইল। আত্ম-প্রীতি যাজ্ঞবল্ক্য সৰ্ব্বপ্রথমেই বলিলেন, যে, জগতে বহু বস্তু মানবের প্রিয় হয়। পতি জায় পুত্র বিত্ত পশু ব্ৰাহ্মণ ক্ষত্র স্বৰ্গাদিলোক দেবগণ বেদসমূহ ভূতসমূহ এবং সৰ্ব্ব বস্তুকেই মাচুর্য ভালবাসে । এস্থলে ঋষির মনে এই প্রকার প্রশ্ন উত্থাপিত হইয়াছিল—মানুষ এই সমুদায়কে কেন ভালবাসে ? আত্মপ্রীতির জন্যই কি এসমুদায়কে ভালবাসে ? অথবা মানুষ আপনাকে সম্পূর্ণরূপে ভুলিয়া গিয়া, সম্পূর্ণরূপে আত্মপ্রতিনিরপেক্ষ হইয়া, কেবল বিশ্বপ্রীতি দ্বারা প্রণোদিত হইয়াই জগৎকে প্রীতি করে ? আত্মপ্রীতি কি ইহার কারণ ? কিংবা ইহার কারণ বিশ্বপ্রীতি ? ঋষি নিজেই ইহার উত্তরও দিয়াছেন। মানুষ অপরের প্রতি প্রীতিবশত: অপরকে ভালবাসে না, আত্ম-প্রীতির জন্যই অপরকে প্রীতি করে । মুলে আছে “আত্মন: কামাঞ্চ”। ইহার অর্থ "আত্মকামের জন্য অর্থাৎ আত্ম-প্রীতির জন্য’। সচরাচর