পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ੋਂ ایلامیاییه রাজার মাথায় মণিমুক্ত-খচিত একটি মুকুট, অঙ্গে দামী লাল রেশমের উপর সোনার-কাজ-করা পোষাক। কোমরে একটি মুক্তার কোমরবন্ধ, তাতে একটি ছোরা ঝোলানো, মণিবন্ধে ও আঙ্গুলে হীরার গহনা । রাজা দর্শন দেবার একটু পরেই ফরাসী দূত ও তার পশ্চাতে আবে ঢুকূলেন। ম্যসিয় দ্য শোমো ঘরে ঢুকেই ফরাসী কায়দায় রাজাকে গভীর সম্মান জানালেন। আবের হাতে সোনার পাত্রে সেই চিঠিথান ছিল, কাজেই তাকে দাড়িয়েই থাকৃতে হ’ল। শোর্মে। দরবার-গৃহের মাঝামাঝি গিয়ে রাজাকে আর-একবার সম্মান জানিয়ে, রাজার সম্মুখে গিয়ে দাড়িয়ে তার বক্তৃত৷ শেষ করলেন। বক্তৃত শেষ হ’য়ে যাওয়ার পর তিনি টুপি খুলে ফেলে তার রাজার চিঠিভরা সেই পাত্ৰ হাতল ধরে রাজার দিকে বাড়িয়ে দিলেন । এই সময় একটা কাণ্ড হ’য়ে গেল। ফরাসীদূত সেই হাতলট উচু করে’ ধরলেন বটে, কিন্তু হাতলট ছোট হওয়ায় সেটা রাজার কাছে পৌছল না । শোমে। ইচ্ছা করলেই আর-একটু উচু হয়ে চিঠিখানা একেবারে রাজার কাছ অবধি এগিয়ে ধরতে পারতেন, কিন্তু তিনি হয়ত মনে করলেন যে, তা করলে তার সম্মানের হানি হবে, তাই তিনি কেবল তাতলট এগিয়ে ধরেই রইলেন। কনস্তঁাস তার কাছেই দাড়িয়ে ছিলেন, অবস্থা সঙ্গীন দেখে তিনি চীৎকার করে বললেন—“আরও একটু উচু করে ধরুন।" ইতিমধ্যে রাজf একটু ইতস্তত: করে’ তাসতে হাসতে জানলা দিয়ে ঝুকে পড়ে চতুর্দশ লুইয়ের । চিঠিখান তুলে নিলেন। শুামরাজ পার্টমেন্ট কাগজের সেই চিঠিখান তুলে নিয়ে কপাল অবধি হাতখানি তুলে চিঠির প্রতি সম্মান জানালেন। তার পর মধুরভাবে হাসতে হাসতে ফরাসী দূতকে বললেন যে, ফ্রান্সের সঙ্গে চিরশান্তি ও চতুর্দশ লুইয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করার চেয়ে উচ্চ বাসনা তার আর নেই। তিনি দূতকে ধন্যবাদ জানিয়ে বললেন যে, এই পত্রের উত্তর তিনি দূত মারফতে ফ্রান্সে পাঠিয়ে দেবেন। শোমোর পরে শোয়াজী রাজাকে সম্মান জানিয়ে রাজাকে লুই-প্রেরিত উপহারসম্ভার দিলেন। রাজ প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩s• ২৩শ ভাগ, ১ম খণ্ড র্তাকেও এজন্য . ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলেন। এর পরে সভাস্থল নীরব হ'ল। আবার তুৰ্য্যধ্বনি ও সেইরকম বাজ না বেজে উঠল। রাজা নিজে তার সম্মুখের পর্দা টেনে দিয়ে অন্তৰ্দ্ধান করলেন। ফরাসী দূত ও তার অমুচরবৃন্দ এর পরে শ্যামদেশের রাজধানীতে প্রায় তিন সপ্তাহ কাটিয়েছিলেন। এর পরে তারা রাজধানী থেকে কয়েক মাইল উত্তরে লোপবুরী নামক স্থানে গিয়েছিলেন। এই স্থানটিতে রাজার পল্লীনিবাস ছিল । রাজা বৎসরের মধ্যে সাত আট মাস কাল এই স্থানেই বাস করতেন। ফরাসী দূতদের বাস, আহার ও আমোদ-প্রমোদের জন্য শ্যামরাজ প্রচুর আয়োজন করেছিলেন। তাদের আগমন উপলক্ষে আতস্-বাজী, নাচ, গান, অভিনয় ইত্যাদি অনেক রকম ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এ ছাড়া তাদের বাঘের লড়াই দেখান এবং তাদের নিয়ে হাতী শিকারেও যাওয়া হয়েছিল। হাতী শিকার ব্যাপারটা ফরাসীদের চোথে যেমন নূতন তেমনই অদ্ভুত ঠেকেছিল। রাজার হুকুমে তারা মন্দিরের মধ্যে গিয়ে সোনার বুদ্ধমূৰ্ত্তি এবং রাজার বাড়ীর নানারকমের সোনার মৃত্তি দেখবারও স্বযোগ পেয়েছিলেন। সেথানকার দরিদ্র অধিবাসীদের সম্বন্ধে আবে লিখেছেন যে, তাদের বাড়ীতে পরিচ্ছন্নতা যেন মূৰ্ত্তিমন্ত হ’য়ে বিরাজ করছে। তাদের বাড়ীতে গেলে একপাল ছেলেপিলে এসে তোমাকে ঘিরে দাড়াবে ও গৃহ-কর্তা চা দিয়ে অতিথিকে অভ্যর্থনা করবে। এত আনন্দ, হুজুক ও গোলমালের মধ্যেও কিন্তু শোমে রাজাকে খৃষ্টধৰ্ম্মে দীক্ষিত করার কথা ভোলেননি । ফ্র-নারাই শোমোর প্রস্তাব শুনে অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে তার অসন্মতি জ্ঞাপন করে বললেন যে, তিনি যে ধৰ্ম্ম অবলম্বী, সে ধৰ্ম্ম দু-হাজার দুইশত উনত্রিশ বর্ষ কাল অপ্রতিহতভাবে এই রাজত্বে নিজের মহিমা প্রচার করে এসেছে। এই ধৰ্ম্ম ত্যাগ করে’ ফ্রান্সের রাজা কেন যে তাকে অন্য ধৰ্ম্ম অবলম্বন করতে অন্তরোধ করছেন তার মর্শ্ব তিনি বুঝতে পারলেন না। যাই হোক, শোমে। ফ্র-নারাইকে খৃষ্টধর্শ্বে দীক্ষিত করতে না পারলেও তিনি শ্যামের সঙ্গে