পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] സഫ് സസ "\. . . . . . -- -- -- সাঁওতাল জাতি 888) সাঁওতাল জাতি আধ্য ও অনার্ধ্যজাতির সমন্বয়েই ভারতের জাতীয়তার কৃষ্টি । সেই অনাৰ্য্যজাতিরই একটা শাখা হচ্ছে এই সাওতাল জাতি। এদের বাসস্থান হচ্ছে সাওতাল পরগণা, মানভূম, সিংতুম, ময়ুরভঞ্জ প্রভৃতি স্থানে। এইসব পাৰ্ব্বত্যপ্রদেশের গভীর শালবনের মাঝেই এর নিজেদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গ্রামগুলি রচনা করেছে। হস্তী, ব্যাঘ্ৰ, ভল্লুকের দম্ভ উপেক্ষা করে’ এর তাদের সঙ্গে এক জায়গায় বাস করছে। অসীম সাহসে এরা পাহাড়ের গভীর জঙ্গল চযে’ বেড়াচ্ছে, পাথরের বুক চিরে' এরা নিজেদের আহাৰ্য্য তৈরী করছে। আমরা এদের এখনও অসভ্য জংলী বলেই জানি, কারণ আমাদের মত সভ্যতার আলোক এরা এখনও পায়নি। এদের গ্রামগুলি ঘনশ্রাম শালবনের মাঝে মাঝে, দূর থেকে দেখায় যেন এক-একখানি চমৎকার ছবি । গ্রামগুলি খুব ছোট ছোট, প্রায় বিশ-ত্রিশ ঘরের বেশী লোক কোন গ্রামেই নেই। তার মাঝে ছোট ছোট কুটীরগুলি লাল, কাল, সাদা প্রভৃতি রঙে রঙান। সেই কুটারগুলি এত ছোট যে তাতে যে মাস্থ্য বাস করতে পারে, ত। ধারণ হয় না। ঘরগুলি, উঠানমুদ্ধ অতি পরিষ্কার, ঝরঝর তরুতর করচে। কোথাও আবর্জনার লেশমাত্র নেই। এদের প্রত্যেক পরবেই এরা ঘরদুয়ার মাটি দিয়ে লেপে পরিষ্কার করে। আর খড় পুড়িয়ে কাল রং, লাল সাদা মাটি দিয়ে লাল সাদা রং করে তারা ঘরগুলিচে রঙায় । জংলী হ’লেও এদের সৌন্দর্য্যজ্ঞান কম নয় । এদের গায়ের রং গাঢ় কৃষ্ণবর্ণ, শরীরের উচ্চত মাঝারি ধরণের। এরা সত্যবাদী, সরল, অকপট, কষ্টসহিষ্ণু। সারাদিনের পরিশ্রমে এর যা পায় তাই দিয়েই সংসারযাত্রানিৰ্ব্বাহ করে, পরের দ্রব্য অপহরণ ক’রে এরা খাবার সংস্থান করতে চায় না। ভবিষ্যতের ভাবনা এদের কল্পনায় আসে না, কোন গতিকে দৈনিক আহাৰ্য্য জুটুলেই এরা আর কিছু চায় না। এদের অভাব-অভিযোগও বিশেষ নেই, কারণ সভ্যতার স্পশ এরা এখনও পায়নি, ত ো যাদের মধ্যে সভ্যতা ঢুকেছে তারাই বিগড়ে গেছে। এরা অসভ্যজাতি হ’লেও শান্তিপ্রিয়, কলহবিবাদের মধ্যে এর বড় থাকৃতে চায় না। এর শাসন মেনে চলে। গবর্ণমেণ্ট কে এদের জন্য কিছু কিছু পৃথক আইন তৈরী করতে হয়েছে। ময়ূরভঞ্জের সাওতালরা দেখেছি রাজকৰ্ম্মচারীদের খুব ভয় করে, কারণ পুলিসের অত্যাচার সেখানে বড় বেশী । সেখানকার প্রথা অমুসারে রাজার কাজে তাদের বেগার দিতে হয়, তাকে বলে ‘বেঠিয়া । সারাদিন না গেয়ে খাটুবে । দিনাস্তে যদি একটা পয়সা পেলে ত খুব । এ রকম নিরীহ হ'লেও কিন্তু রাগলে তাদের জ্ঞান থাকে না, তখন কাউকে হত্য করতে তাদের মোটেই বাধে না । এদের মধ্যে পর্দার ব্যবস্থা নাই, স্ত্রীস্বাধীনতা প্রবল। ঠিক পাশ্চাত্য স্বাধীনত না হ’লেও তার চেয়ে কিছু কমও নয়। এর মেয়ে-পুরুষ উভয়েই পাটে । আমার মনে হয় পুরুষদের চাইতে বেশী খাটুতে পারে মেযের । মেয়ের দেখতে স্বন্দর না হ’লে ৪ মুশী। গায়ের গাঢ় কৃষ্ণ রংট। বাদ দিলে এর যে-কোন দেশের স্বন্দরীর সঙ্গে তুলনীয় হ’তে পারে। এদের গড়ন অতি চমৎকার - নিটোল, নধর, কটিদেশ ক্ষীণ, বক্ষঃস্থল প্রশস্ত। বোধ হয় এত থাটে বলেই এত সুন্দর এদের গড়ন । মেয়েদের মধ্যে পাতলা খুব কমই দেখতে পাওয়া যায়। এদের পরিধানে এক মোট ছোট কাপড়, হাটুর নীচে নামে না ; আর গায়ে ঢাকা দিবfর জন্যে আর-একখানা ছোট কাপড়। মাথায় এর কাপড় দেয় না। এদের চুল "বাধা-মাঝে সিথি কেটে চুলের গোছা পেছনে ঘুরিয়ে চুলের মধ্যে গুজে রাখে। এইজন্তেই বোধ হয় চুলগুলি একহাতের বেশী বড় হয় না। তা না হ'লেও চুলগুলি যেমনি ঘন তেমনি কৃষ্ণবর্ণ। ফুল এরা অত্যন্ত ভালবাসে, ফুল পেলেই খোপায় গুজে রাখে। ফুল-অভাবে গাছের