পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] ভ্রাতা-ভগিনী উভয়ে দ্বিতলের একটা ঘরে উপস্থিত হইল। প্রবেশ-দ্বারে চৌকাঠের মাথায় সাদা খন্দরের জমিতে লাল সুতা দিয়া বড় বড় করিয়া লেখা “পড়ে থাকা পিছে, মরে থাকা মিছে।” ঘরে প্রবেশ করিয়াই চোগে পড়ে ঠিক তেমনি আর-একটি মন্ত্র, “আবার তোরা মানুষ হ’।” ঘরের মধ্যে পাঁচখানি চরকা, খান পনেরো লাটাই, দুইটা বড় ধামাভর; তুলার পাজ এবং তিনটা আলমারিতে বিবিধ প্রকারের কাটা স্বতা ও অন্যান্য সামগ্ৰী সজ্জিত । o ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিয়া সুরেশ্বর কহিল, “খুব মিহি স্থত চাই মাধবী, রুমালের জন্য ।” “কটা রুমালের মত ?” . “অন্ততঃ তিনটে ।” এক মুহূৰ্ত্ত চিন্তা করিয়া মাধবী কহিল, “ত বোধ হয় হবে ।” স্বরেশ্বর কহিল, “না হলে কালকের মধ্যে কেটে দিতে হবে, যত মিহি পারিস।” মাধবী সকৌতুকে জিজ্ঞাসা করিল, “অত মিহি স্থত কার দরকার দাদা ? এত সৌখীন লোক কে ?” সম্মিতমুখে সুরেশ্বর বলিল, “শুধু সৌধীন নয় রে, ভারি কঠিন! ছুচের মত মিহি ন হ'লে সেখানে বিধবে না। প্রমদা-বাবুর মেয়ে সুমিত্রীকে দিতে হবে।” মাধবী স্থত। অন্বেষণ করিতে করিতে সুরেশ্বরের সহিত কথা কহিতেছিল ; সুরেশ্বরের কথা শুনিয়া ফিরিয়৷ দাড়াইয়া সকৌতুহলে জিজ্ঞাস করিল, "স্বমিত্রীকে হঠাৎ রুমাল দিচ্ছ যে দাদ। f” স্বরেশ্বর মৃদু হাসিয়া বলিল, “হঠাৎ নয় ; তার জন্মদিন উপলক্ষে এইমাত্র প্রমদা-বাবু নিমন্ত্রণ করে গেলেন। ভাবছি তিনখান। রুমাল উপহার দেবে। কিন্তু ভারি কঠিন কথা,—আইরিশ, লিনেনের সঙ্গে দেশী খন্দরের প্রতিযোগিতা!—পেরে উঠ ব বলে’ ত ভরসা হয় না।” মাধবী একটা টিনের বাক্স হইতে খানিকট। স্থত। বাহির করিয়া সুরেশ্বরের হস্তে দিল । স্বত দেখিয়া সুরেশ্বরের মুখ উৎফুল্প হইয়া উঠিল । সে সামন্দে মাধবীর পুষ্ঠে করাঘাত করিয়া কহিল, "বাঃ মাধবী রাজপথ 8© AASAASAASAASAASAASAASAASAASAAMAMM MeAeSAASAASAASAASAASAASAASAAAS বা: ! দুশে বৎসর আগে তুই নিশ্চয়ই ঢাকাতে স্বতে কাট তিস। এত মিহি স্বতে কবে কাটলি রে?” মাধবী হাসিয়া কহিল, “এ সূতো ব্যবহারের জন্যে ত কাটিনি দাদা, কত মিহি স্বতে কাটা যায় দেখবার জন্তে মাঝে মাঝে এই স্থতে কেটে জমিয়েছি । এতে তোমার তিনখন রুমাল অনায়াসে হবে ।” “বেশী হবে,” বলিয়া স্থতা লইয়। সুরেশ্বর প্রস্থানেদ্যত হইল ; তাহার পর পুনরায় ফিরিয়া আসিয়া কহিল, “এ স্বতে কার্টুতে তোর যেমন কষ্ট হয়েছে মাধবী, পুণ্যও তেমনি বে। বাংলা দেশের একটি কঠিন পরিবারের সঙ্গে প্রথম এই দিয়ে যুদ্ধ পোষণ করুব ঠিক করেছি।” মাধবী সহাস্যমুখে কহিল, “বেশ ভ।” স্থতা লইয়। সুরেশ্বর মাণিকতলা ষ্ট্রীটে একটি জীর্ণ পুরাতন গৃহে উপস্থিত হইল । তাহাকে দেখিয়া এক ব্যক্তি তাড়াতাড়ি অগ্রসর হইয়া আসিয়| অবনত হইয়া যুক্ত করে প্রণাম করিয়া দাড়াইল । নুরেশ্বর জিজ্ঞাস কবিল, “আজি কখান। তাত চলেছে অতুল ?” অতুল নমুস্বরে কঠিল, "আজ্ঞে পাচখানা।” “দুখন বন্ধ রয়েছে কেন ?" অতুল একবার নতদুষ্ট হইয়। তারপর মুরেশ্বরের দিকে চাহিয়| কহিল, “টান দেওয়ার লোকের অভাবে ; আর দুজন লোক না হলে কিছুতেই চলছে না বাপু ।” "লোকের জন্যে তোমার বাড়ীতে লিখতে বলেছিলাম ত ? লেখ নি ?” অতুল কহিল, “আঞ্জে সেই দিনই লিখে দিয়েছি, কিন্তু এ পূজো মুখে করে কেউ বাড়ী ছেড়ে আসবে বলেও বোধ হয় না। আর দশ-পনের দিন পরে এসে পড়বে।” “কিন্তু পূজোর মুথেই যে কাজের চাপাচাপি অতুল ?” “আঙ্গে তাত বটেই,” বলিয় অতুল নীরবে নতনেত্রে দাড়াইয়া রহিল । একটু চিন্তা করিয়া সুরেশ্বর স্ততার বাণ্ডিলট অতুলের হস্তে দিয়া বলিল, “দেখ বৃহস্পতিবfব সন্ধ্যfর মধ্যে এই স্বতোয় তিনখন রুমাল আমাকে বুনে দিতে হবে। পাড়ের চারিদিকে একটু ঘোর তসবেব স্বতোর অক্ষরে