পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] কারক ভেবে অসীম লজ্জায় ঘৃণায় ভরে উঠে আমার মন নিজেকে ছি ছি করতে লাগল ! মাকড়সার জালে পড়ে' মাছি নিজেকে জাল থেকে মুক্ত করতে গিয়ে যেমন আরো বেশী করে নিজেকে জালের সঙ্গে জড়িয়ে ফেলে, আমিও তেমনি এদের সংস্পর্শ হ’তে মুক্ত হ’তে গিয়ে আরো বেশী করে জড়িয়ে পড়ছিলাম—স্থখ দুঃখ সব দি দিয়েই । সেই নিস্তব্ধতাকে ব্যঙ্গ করবার জন্যেই যেন ঘড়ীতে টং টং করে দুটো বেজে উঠল । রমেশ-বাৰু আমাদের ঘরে যেতে বললেন। আমরাও র্তার আদেশ-মত ঘরে ফিরে গেলাম । - সকলের মনের মধ্যেই যে একটা অশান্তির ঝড় ব’য়ে যাচ্ছিল তার ঝাপটায় সকলকেই ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হ’তে হচ্ছিল। ঝড়ের স্বভাবই হচ্ছে তাই। ঝড় যখন আসে তখন একট প্রবল বেগে শান্ত পৃথিবীর বুকের উপর কিছুক্ষণের জন্তে প্রচণ্ড তাণ্ডব নৃত্য করে সমস্ত ওলোটপালোট করে দিয়ে যায়। তার পর তার ক্ষতিগ্রস্ত সারা জীবন সেই দুঃখ-বেদনার স্মৃতি বুকের ভিতর পোষণ করতে থাকে। শেষ ফল দাড়ায় এই রকমই। এক মুহূৰ্ত্তের একটি সামান্য ঘটনাই যে মাতুষকে কতখানি অনুশোচনার তীব্র দাহনে দগ্ধ করতে পারে তা' ধারণা করতে পারা যায় না। আমার সারা মনটা একটা মানিতে পূর্ণ হ’য়ে রইল। রমেশ-বাৰু যদি আমার চরিত্রকে সরলভাবে ভাল বিশ্বাস না করে যদি কিছু জিজ্ঞাসা করতেন বা তিরস্কার করতেন তা হ’লে বোধ হয় মনটা কথঞ্চিৎ স্থস্থ হ’ত। তার এই নীরব সাম্বন কিন্তু আমার মনের মানি দূর করতে পারলে না । সমস্ত রাত বিনিদ্র অবস্থায় নানা চিন্তার মধ্যে দিয়ে কাটিয়ে ভোরের দিকে একটু তন্দ্রা এসেছিল। এমন সময় রমেশ-বাবুর ব্যগ্র ডাকে ঘুম ভেঙে গেল। দোর খুলে বাইরে আসতেই তিনি আমার হাতে একটা টেলিগ্রাম দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন—তোমার বাড়ী হতে এসেছে ?—বলে’ই আমার মুখের দিকে ব্যাকুল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। টেলিগ্রামটা হাতে পেয়েই মনে হ’ল যে বাঙালীর টেলি স্বরের রেশ 8ፃፃ میھا-یہ*حمے ॐांभ उ फूःनश्वांन छ्फ़ वांग्न किडूझे यश्न कब्राउ छांटन না। একটু ভয় হ’ল খুলতে। না জানি এর ভিতর কি দুঃসংবাদ অাছে। এত দুঃখের মধ্যেও মনে মনে হাসি এল, জীবনের উপর দিয়ে আরও কত অদৃষ্টের নির্থম পরিহাস বধিত হতে পারে এই ভেবে। আমি তাড়াতাড়ি সেটা খুলে ফেললাম, ভিতরে লেখা ছিল—ম ভয়ানক অস্বস্থ, আমায় দেখতে চান। সমস্ত দেহটা ঝিম্ঝিম্ করে উঠল। লেখাগুলো যেন চোখের সামনে ঝাপসা হ’য়ে উঠল। আমি আর দাড়িয়ে থাকৃতে পারলাম না। সেইখানেই বসে পড়লাম। _ ( t ) পল্লী-জননীর কোলে এসে যখন নামূলাম তখন সবে মাত্র ফর্সা হ’তে আরম্ভ হয়েছে। উষা দেবীর মাথায়, নূতন বধুর মাথায় কুশণ্ডিকার দিনে সিদূর দেওয়ার মতই, কে যেন একথান সিঁদুর ঢেলে দিয়ে গেছে। নববধূর লজ্জা-রক্তিম আভা তার সারা দেহকে জড়িয়ে ধরেছে । চারিদিকেই জড়তা কাটিয়ে চেতনার রাজ্যে আসবার জন্তে সাড়া পড়ে গেছে । সেই আবাল্যপরিচিত পথ দিয়ে অগ্রসর হতে লাগ লাম। রাস্তাঘাটগুলো পৰ্য্যস্ত ধেন সজীব হয়ে আমাকে তাদের কোলে তুলে’ নেবার জন্তে ব্যগ্র আবেগে রোমাঞ্চিত হতে লাগল। ঘোষেদের নূতন পুকুরের ধার দিয়ে, হারাণ ছুলের ধানের ক্ষেতের পাশ দিয়ে, অভয় মোড়লের বাড়ীর কাছে এসে পৌঁছলাম। দূরে আমাদের বাড়ীর চিলের ছাদের কার্লিসটায় রোদ পড়ে চোখের সামনে বেশ পরিস্ফুট হ'য়ে উঠল। পল্পীজননীর নীরব শোভায় মনটা যতটুকু খুসি হ’য়ে উঠল তার দ্বিগুণ দুঃখে ভরে গেল বাড়ীর কথা মনে হতেই ; না জানি মাকে গিয়ে কি অবস্থায় দেখব । যখন পিতৃহীন হই তখন স্নেহময়ী জননীর অঞ্চলের আড়ালেই পার্থিব কোনো দুঃখের আভাস জানতে পারিনি। প্রভাত-বায়ু যেন দুঃখের মৰ্ম্মবেদনায় গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে’ হা হা করে কানের কাছ দিয়ে বয়ে" যেতে লাগল। দূরে দেখলাম আমাদের পাড়ার ময়র-পিলী আসছে।