পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>Qb" মাছুষকে তলিয়ে - রেখে, আমাহষ করে রেখে তবেই সভ্যতা সমুচ্চ থাকবে একথা অনিবাৰ্য্য বলে মেনে নিতে গেলে মনে ধিক্কার আসে। ভেবে দেখ না, নিরন্ন ভারতবর্ষের অন্নে ইংলণ্ড পরিপুষ্ট হয়েছে । ইংলণ্ডের অনেক লোকেরই মনের ভাব এই যে ইংলণ্ডকে চির দিন পোষণ করাই ভারতবর্ষের সার্থকতা । ইংলণ্ড বড় হয়ে উঠে মানব-সমাজে বড় কাজ করচে এই উদ্দেশ্য সাধনের জন্যে চিরকালের জন্যে একটা জাতিকে দাসত্বে বদ্ধ করে রেখে দিলে দোষ নেই। এই জাতি যদি কম থায় কম পরে তাতে কি যায় আসে, তবুও দয়া করে তাদের অবস্থার কিছু উন্নতি করা উচিত এমন কথা তাদের মনে আসে । কিন্তু একশো বছর হয়ে গেল না পেলুম শিক্ষা, না পেলুম স্বাস্থ্য, না পেলুম সম্পদ। প্রত্যেক সমাজের নিজের ভিতরেও এই একই কথা । যে-মানুষকে মানুষ সম্মান করতে পারে না সেমাচুষকে মাতুষ উপকার করতে অক্ষম । অন্তত যখনই নিজের স্বার্থে এসে ঠেকে তখনই মারামারি কাটাকাটি বেধে যায়। রাশিয়ায় একেবারে গোড়া ঘেষে এই সমস্ত সমাধান করবার চেষ্টা চলচে। তার শেব ফলের কথা এখনও বিচার করবার সময় হয় নি, কিন্তু আপাতত যা চোখে পড়চে তা দেখে আশ্চর্য হচ্চি । আমাদের সকল সমস্যার সবচেয়ে বড় রাস্ত হচ্চে শিক্ষা। এতকাল সমাজের অধিকাংশ লোক শিক্ষার পূর্ণ স্বযোগ থেকে বঞ্চিত—ভারতবর্ষ ত প্রায় সম্পূর্ণই বঞ্চিত। এখানে সেই শিক্ষা কি আশ্চৰ্য্য উদ্যমে সমাজের সর্বত্র ব্যাপ্ত হচ্চে তা দেখলে বিস্মিত হতে হয় । শিক্ষার পরিমাণ শুধু সংখ্যায় নয়, তার সম্পূর্ণতায় তার প্রবলতায় । কোনো মামুষই যাতে নিঃসহায় ও নিষ্কৰ্ম্ম হয়ে না থাকে এ জন্তে কি প্রচুর আয়োজন ও কি বিপুল উদ্যম। শুধু শ্বেত রাশিয়ার জন্তে নয়—মধ্য এসিয়ার অৰ্দ্ধ-সভ্য জাতের মধ্যেও এর বন্যার মতো বেগে শিক্ষা বিস্তার করে চলেচে—সায়ন্সের শেষ ফসল পর্য্যস্ত যাতে তারা পায়, এইজন্যে প্রয়াসের অস্ত নেই। এখানে থিয়েটারে অভিনয়ে বিষম ভিড়, কিন্তু যারা দেখচে তারা কৃষি ও কৰ্ম্মীগের; দলের । কোথাও এদের অপমান নেই। প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড بسادسی باس-------------------------------سیدهای -- ইতিমধ্যে এদের যে দুই একটা প্রতিষ্ঠান দেখলুম সৰ্ব্বত্রই লক্ষ্য করেচি এদের চিত্তের জাগরণ এবং আত্মমর্য্যাদার আনন্দ । আমাদের দেশের জনসাধারণের ত কথাই নেই—ইংলণ্ডে মজুর-শ্রেণীর সঙ্গে তুলনা করলে আকাশ-পাতাল তফাৎ দেখা যায় । আমরা শ্রীনিকেতনে যা করতে চেয়েচি এর সমস্ত দেশ জুড়ে প্রক্লষ্টভাবে তাই করচে। আমাদের কৰ্ম্মীরা যদি কিছুদিন এখানে এসে শিক্ষা করে যেতে পারত তাহ’লে ভারি উপকার হত । প্রতিদিনই আমি ভারতবর্ষের সঙ্গে এখানকার তুলনা করে দেখি আর ভাবি কি হয়েচে আর কি হতে পারত। হারি টিম্বস এখানকার স্বাস্থ্যবিধানের ব্যবস্থা আলোচন। করচে-তার প্রকৃষ্টত দেখলে চমক লাগে—আর কোথায় পড়ে আছে রোগতপ্ত অভূক্ত হতভাগ্য নিরুপায় ভারতবর্ষ। কয়েক বৎসর পূর্বে ভারতবর্ষের অবস্থার সঙ্গে এদের জনসাধারণের অবস্থার সম্পূর্ণ সাদৃশু ছিল— এই অল্পকালের মধ্যে দ্রুতবেগে বদলে গেছে— আমরা পড়ে আছি জড়তার পাকের মধ্যে আকণ্ঠ নিমগ্ন । এর মধ্যে যে গলদ কিছুই নেই তা বলিনে – গুরুতর গলদ আছে । সেজন্যে একদিন এদের বিপদ ঘটবে। ংক্ষেপে সে গলদ হচ্চে শিক্ষাবিধি দিয়ে এরা ছাচ বানিয়েচে–কিন্তু ছাচে ঢাল। মঙ্গুষ্যত্ব কখনো টেকে ন— সজীব মনের তত্ত্বর সঙ্গে বিদ্যার তত্ত্ব যদি না মেলে ত৷ হলে হয় একদিন ছাচ হবে ফেটে চুরমার, নয়, মানুষের মন যাবে মরে আড়ষ্ট হয়ে, কিম্ব কলের পুতুল হয়ে দাড়াবে । আমাদের সত্যিকার কাজের ক্ষেত্র হচ্চে. শ্ৰীনিকেতন এই কথা আমাদের মনে রাখা চাই । শিক্ষাসত্রকে সকল দিকে পরিপূর্ণ করে তুলতে হবে। একটুখানি ছিটেফোটা শেখানো না-গোড়া থেকেই বিজ্ঞান ধরিয়ে দেওয়া দরকার—বিশেষত ফলিত বিজ্ঞান । ম্যাডাম দিনা আমাদের ইলেক্ট সিটি ও জল দেবেন কথা আছে, এরই কলঘরের কাজে ছেলেদের হাত পাকাতে হবে । আমাদের ওখানে যে ছাপাখানা আছে তাতেও পাল করে ছেলেদের শিক্ষানবিশি করা উচিত, তা ছাড়া মোটরের কাজ—শুধু গাড়ি চালানো নয়, ওর যন্ত্রতত্ত্ব।