পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩৩৭ (গ) জমিদারের ও সরকারের সমানরূপে এবারকার খাজনা মাফ করা । এই সব প্রস্তাবামুযায়ী কাজ হইলে দুর্দশার কতকটা লাঘব হইবার কথা, কিন্তু ইহাতে উহার প্রতিকার হইবে না । ভাল বৰ্মণ হইলেও যখন ধানের দর লাভজনক হয় না, তখন যতই না বারণ করা যাউক, আমাদের চাষীরা নিশ্চয়ই পাট সমানভাবেই বুনিয়া চলিবে এবং প্রত্যেক বৎসরই পাটের উৎপাদন এইরূপ বেশী থাকিবে । হিসাব করিয়া দেথা যায় যে, যদি এবারকার সব শস্য কাটিয়া তোলা হয় তাহা হইলেই বৎসরাস্তে যাহা মজুত থাকিবে তাহাতে আগামী বৎসর ত চলিবেই, এমন কি তারপরের বংসরের চাহিদাও তাহাতে মিটিবে । চাষ-বরণ করিলেও কিছু হইবে না, এইরূপ বারণ কোনও দেশেই টিকে নাই। কফি, চা, রবার, কপূর Hennequen-এর উৎপাদন-খৰ্ব্বের চেষ্টায় কি ফল হইয়াছে তাহাই ইহার প্রত্যক্ষ প্রমাণ পাট অবশ্য আমাদের একচেটিয়া জিনিষ, সে হিসাবে উহার সহিত চা বা কফি চাষের তুলনা চলে না । কিন্তু একচেটিয়া জিনিষ লইয়াও এইরূপ উৎপাদন-খৰ্ব্ব করিলে কারবারী একচেটিয়া দেশেরই ক্ষতি হয়। আর যেখানে চাযী অশিক্ষিত, ক্ষেত চষিয়াই দুবেলা দুমুঠ আহার যোগাইবার চেষ্টা করিবে, সেখানে এইরূপ বারণসূচক আদেশ কাজে খাটানো খুব শক্ত কথা । পাট চায ত খুব বড় বড় যৌথ কারবার বা খুব বড় ধনীদের জী বকার উপায় নয় যে দু-এক বৎসর ঘরের টাকা থাইল্প উৎপাদকরা সুদিনের অপেক্ষায় বসিয়া থাকিতে পরিবে । শস্তের উৎপাদন হ্রাস সম্ভব হইলেও নিতান্তই সাময়িক ব্যবস্থা । পাটের ব্যাপারে উহা সম্ভবও নয় এবং উহা কোনও রূপ স্বব্যবস্থাও নয় । সদর খাজনা বা জমিদারের খাজনা মাফ করাও সাময়িক ব্যবস্থা মাত্ৰ—উহা প্রতিকার নয়। তাহা হইলে এই অবস্থার প্রতিকার হইবে কিরূপে ? পাটের বাজারে অস্বাভাবিক চড়া দর দেখা দিলেই আবার পাটের চাষ চলিবে, এইরূপ অধিকতর পরিমাণ জমিতে যদি সুবর্ষণ হয়, উৎপাদন বাড়িবে, এবং ভবিষ্যতে nitrates, [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড এইরূপ দুর্দশাই দেখা দিবে। আমরা কি তাহা হইলে চিরদিনই এমনিতর অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকিব ? এক বৎসর লাভ ও পর বৎসর সর্বনাশ ইহাই কি নিয়ম হইয়া দাড়াইবে ? শুনা যায়, হেনরি ফোর্ড নাকি স্থির করিয়াছেন, যে ব্যবসাক্ষেত্রে চড়া অস্বাভাবিক চাহিদা boom ) নিবারণ করিতে পারা যায়, এবং তাহা যদি সম্ভব হয় তবে অতিজোগানের ( siump ) ফলে বাজারে মন্দাও দেখা দিবে না । তাহার অভিমত এই যে, উৎপাদন, প্রয়োজন প্রভৃতি হিসাব বিভাগের বিভিন্ন শ্রেণীর হিসাবের অঙ্কগুলির সংযোগ সাধন করিয়া জাতির যতটা চাহিদা ততটা পরিমাণ শস্ত্য বা শিল্পজাত উৎপাদন করিতে হইবে। যদি এইরূপ দুঃসাধ্য হিসাব সম্ভবও হইত, তাহা হইলেও অন্যান্য দেশের চাহিদা ও জোগানের ধাক্কায় ইহার ওলট-পালট হইয়। ধাইত । কিন্তু, কোনও দেশ স্বাধিকার-সম্পন্ন হইলেও কার্য্যতঃ এই মতের দ্বারা ব্যবসাক্ষেত্র নিয়ন্ত্রিত করিতে পারে কি না সন্দেহ } আজকাল কণর শিল্পজগতের একটি সুপরিচিত কথা— ম্যাস প্রডাক্শান। হেনরি ফে ড-এর মত কায্যে পরিণত হইলে ঐকৃপ ম্যাস প্রডাকৃশান্‌ খৰ্ব্ব হইবে । যদি হিসাবের ফলে উৎপাদন খৰ্ব্ব করা যায় তাহা হইলে তাহা বেশ উৎপাদন হইবে না, খবিবত ( restricted ) উংপাদন হইবে । আমাদের কৃষিজাত ও কাচা মালে এমন কি আমাদের শ্রমজাত শিল্পদ্রব্যে পৰ্য্যস্ত আমরা ধে বরাবর অত্যধিক উৎপাদনের সমস্ত স্থষ্টি করিতেছি, তাহার প্রতিকার চিস্ত কর। কৰ্ত্তব্য । মাস প্রডাক্শান খৰ্ব্ব করা ব্যর্থ। তাহ। নী করিতে হইলে প্রতিকারের পথ ম্যাস ডিষ্ট্রিবিউশান ও ম্যাস্ সেল। প্রতিনিমেষে ভাবিতে হইবে কাচা মালকে নূতন কি কাজে লাগানো যাইতে পারে, নূতন কি দ্রব্য তাঙ্গতে প্রস্তুত সম্ভব, নূতন কি পন্থা অবলম্বন করিলে জনসাধারণ এই সব দ্রব্য বেশী কিনিবে । আমরা পাট উৎপাদন করি বেশী, কিন্তু কাজে লাগাই কম। আমরা কাচা পাট ও পাটের