পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఇష్రఫి ASAMAAA AAAA AAAASASASS প্রবাসী—পৌষ, ১৩৩৭ [ ৩eশ ভাগ, ২য় খণ্ড কালীমোহন সেই যে বিবাহের পর বাড়ী ছাড়িয়াছিল আর ঘরমুখে হয় নাই। স্ত্রীকে মাঝে মাঝে কৰ্ত্তব্যের খাতিরে এক একথান চিঠি লিখিত, কিন্তু তাহাতে রসকষ বেশী থাকিত না। লতিকার বন্ধুবান্ধবরা বরের চিঠি দেখিবার জন্য জুলুম করিলে সে মুখ ফুলাইয়া থাকিত । এমন নীরস চিঠি সে দেখাইবে কি করিয়া ? স্বামীকে এ লইয়া অকুযোগ দিতে তাহার অভিমানে বধিত, তবু মনের ঝাবট একটু-আধটু প্রকাশ পাইত মাঝে মাঝে । কালীমোহন দুঃখিত হইত বটে, কিন্তু চিঠির স্বর বদলাইত না। দুইটা বছর দেখিতে দেখিতে কাটিয়া গেল। ইহার ভিতর ভুবনের বিবাহ এবং তাহার মাতার মৃত্যু, এই দুইটি ঘটনাতে কালীমোহনদের :সংসার উলটপালট হইয়া গেল। কালীমোহন খুব ভাল ভাবেই পাশ হইয়াছিল, নানাস্থানে কাজের জন্য আবেদন৭ করিয়াছিল, কিন্তু মাতার মৃত্যু-সংবাদে সে সব ফেলিয়া তাড়াতাড়ি গ্রামে চলিয়া আসিল । রাধামোহন গ্রাম ছাড়িয়া নড়িতে চাহিলেন না। বুড় বয়সে কোথায় তিনি শহরে গিয়া মরিবেন ? ছেলের কাজ হয় ভালই, সে যেন বউ লইয়া গিয় ঘরসংসার করে, তাহার ছেলের সংসারে থাকিবার সখ নাই । শাশুড়ীর শ্রাদ্ধোপলক্ষে লতিকা না আসিয়া পারে নাই। শ্বশুরের কথার ইঙ্গিত সে বুঝিল, কিন্তু তখন সবাই শোকে ম্ৰিয়মাণ, কাহাকেও কথা শুনাইবার সুযোগ সে পাইল না । স্বামীর চাকরি হইবে এবং সে র্তাহার সঙ্গে শহরে গিয়া বাস করিতে পরিবে, এই সংবাদটায় অবখ তাহার মন খানিকট খুশী না হইয়া পারিল না। শ্রাদ্ধ হইয়া গেল। তাহার পর লতিকাকে আবার বাপের বাড়ী চালান করিয়া কালীমোহন কলিকাতায় ফিরিয়া আসিল । কপালগুণে তাহার একটা লেক্চারারের কাজ জুটিয় গেল। দুটি মানুষের সংসার এক রকম করিয়া চলিয়া যাইবে আশা করিয়া কালীমোহন বাড়ি ভাড়া করিয়া, স্ত্রীকে আনিবার জন্য এই প্রথমবার শ্বশুরালয়ে যাত্র কল্পিল । শ্বশুরবাড়ীতে আদরধত্ব অবত খুবই পাইল, কিন্তু চারিদিকে বড়মাকুষীর আতিশষ্য দেখিয় তাহার মন খুংখুৎ করিতে লাগিল । এত বিলাসের ভিতর পালিভ যে মেয়ে, সে কি স্বামীর অল্প আয়ের সংসারে থাকিতে পরিবে ? স্ত্রীর কাছে কথাটা কি ভাবে পাড়া যায় ভাবিতে ভাবিতে সে লতিকার ঘরে গিয়া ঢুকিল । সে তখন জিনিষ গুছাইতে মহা ব্যস্ত। একটু হাসিয়া বলিল, “জিনিষ যা গুছিয়ে তুললে তা ধরাতে একখানা মাৰ্ব্বল প্যালেস দরকার । আমার ত্রিশ টাকা ভাড়ার বাড়িতে ত কুলোবে না।” লতিকা বাক্স হইতে মুখ ন তুলিয়াই বলিল, “এই ক’ট। জিনিষও ধরবে না ? তfহ’লে বাড়ি বদল করতে হবে শীগগিরই দেখছি।” কালীমোহন বলিল, “বড় বাড়ির বড় ভাড়াটা আস্বে কোথা থেকে ?” লতিকা জাক করিয়া বলিল, “যতদিন বাবা-মা বেঁচে আছেন, ততদিন সে ভাবনা ভাবতে হবে না।” কালীমোহনের মুখের হাসি মিলায়া গেল, সে ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল । ভাল করিয়াই বুঝিল, তাহার ংসার শাস্তির হইবে না । যাহা কিছুর প্রতি তাহার বিরাগ, লতিকার সেইগুলির উপরেই অনুরাগ। কিন্তু ভাবিয়া আর হইবে কি ? এই স্ত্রী লইয়াই তাহাকে ঘর করিতে হইবে । বাপ মা জোর করিয়া বিবাহ দিয়াছেন বটে, কিন্তু মন্ত্র পড়িয়া পাণিগ্রহণ সে-ই করিয়াছে। সে নিজে ধৰ্ম্মত এবং আইনত দায়ী, এ বন্ধন হইতে মুক্তিলাভের উপায় তাহার নাই । ঘর-সংসার চলিতে লাগিল এক রকম । শাস্তি ইহার মধ্যে বিশেষ ছিল না বটে, কিন্তু স্বর্থ কিছু কিছু ছিল। লতিকার আর যতই দোষ থাক, স্বামীকে সে ভালবাসিত। কালীমোহনও একসঙ্গে বাসের ফলে তাহার প্রতি ক্রমেই আকৃষ্ট হইয়া পড়িতেছিল। কি স্তু লতিকার বড়মাচুৰী আর হিন্দুয়ানী ফলানোর ঘটাতে তাহাদের মিলনের পথ কণ্টকাকুল হইয়া উঠিয়াছিল। কালীমোহন হয়ত আসিয়া বলিল, “লতি, বায়স্কোপে যাবে f" লতিকা বলিল, “ষত সব বেহায় ছবি দেখতে কি