পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] আমাদের কথা ు రిసె গঙ্গার মত শীতল হবে, পৃথিবীর মত ধৈৰ্য্য হবে। এই সব গুণই যদি প্রত্যেক মানুষের মধ্যে বৰ্ত্তমান থাকিত তবে স্বথের সীমাই থাকিত না, কিন্তু সে যদি কিছু পরিমাণেও এগুলি পাইয়া থাকে তবে তাহাও তাহার পক্ষে কম গৌরবের কথা নহে । আমার ভাগ্যে দু একটি ছাড়া সব ইচ্ছাই পূর্ণ হইয়াছিল। ধনে, মানে, যশে, ঐশ্বৰ্য্যে, চরিত্রে, রূপে, গুণে সৰ্ব্ববিষয়ে শ্রেষ্ঠতম বংশের মধ্যে আমি আসিয়া পড়িয়াছিলাম। কুন্তীর মত বহু পুত্রের জননী হই নাই বটে, কিন্তু যে পুত্রকে গর্ভে ধারণ করিয়াছিলাম তাহ শত পুত্রের অপেক্ষাও কিছু কম বলিয়া মনে করি নাই। এ শুধু জননীর নিকট পুত্রের প্রশংসা নহে, পরিবারের সকলে, এবং বাহিরের লোকেরা যাহারা তাহার সংস্পর্শে আসিয়াছিলেন র্তাহারা বুঝিতে পরিবেন কোন পুত্রের জননী হইবার সৌভাগ্য আমার ঘটিয়াছিল। পঞ্জাবের অধিবাসীরা, র্যাহারা তাহাকে প্রাণের মত ভালবাসিয়াছিলেন র্তাহারা বলিতে পারেন যে, অল্পদিনের মধ্যে কি বস্তুকে র্তাহার হারাইয়াছিলেন। অল্পদিনের জন্য তাহাকে পাইয়াছিলাম, কিন্তু তারই ভিতর তাহার ভালবাসার গুণে সে সকলকে আপনার করিয়া চলিয়া গিয়াছে। সমস্ত স্থখ ঈশ্বর আমাকে দিয়াছিলেন, কিন্তু আবার তিনিই ধীরে ধীরে সবই কাড়িয়া লইয়াছেন। সুখ-দুঃখের ভিতরই মানুষের জন্ম এবং মৃত্যুর লীলাখেলা চলিতেছে, আমার এই লেখার ভিতর স্বখ হইতে দুঃখের অংশ বেশী ৮ র্যাহারা আমার মতনই ভাগ্যের সহিত জড়িত, র্তাহারাই আমার এই ক্ষুদ্র লেখার ভিতর তাহাদের অবস্থাকে মিলাইয়া আমার মখদু:খের ভাগী হইয়া তৃপ্ত বোধ করিবেন। জীবনের শেষপ্রান্তে আসিয়া পৌছিয়াছি, যিনি এত বড় দুঃখ কষ্টকে সহ করিবার শক্তি আমার ভিতরে দিয়াছিলেন তাহারই চরণে আশ্রয় পাইবার জন্য অপেক্ষায় আছি, জানি না কবে তিনি আমার শেষ আশা পূর্ণ করিবেন। এই লেথার মধ্য দিয়া যদি কাহারও মনে একটুকুও শাস্তি . বা সাস্বনা আনিয়া দেয় তবেই এই লেখা সার্থক। 事 豪 桦 হুগলি জেলার অন্তর্গত বঁাশবেড়িয়া গ্রামে প্রাণকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়ের পুত্র আমার পিতা ছিলেন। পিতার দুই ভাই, হরদেব ও কালিপদ । আমার পিতার নাম হরদেব চট্টোপাধ্যায় ও মাতার নাম বামামুনারী । আমার পিতা প্রথমে সনাতন ধৰ্ম্ম প্রচার করেন। তার এই ধৰ্ম্মামুরাগ থাকার দরুণ আমার শ্বশুর দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহিত পিতার বন্ধুত্ব হইয়াছিল। আমার পিতাকে তিনি খুবই ভালবাসিতেন। আমার পিতামহের শ্রাদ্ধের পূৰ্ব্বে শ্বশুর একবার বঁাশবেড়িয়াতে বেড়াইতে গিয়াছিলেন, সেখানে যাইয় তাহার কৰ্ম্মচারী কিশোরী চট্টোপাধ্যায়, কৈলাস মুখোপাধ্যায় ও দেওয়ান চন্দ্রনাথ রায়ের নিকট পিতার অবস্থার কথা শুনিলেন, তারপর পিতাকে ডাকাইয় তাহার বেশ-পরিবর্তনের চিহ্ন দেখিয়া, নানারূপ সং বাক্যদ্বারা তাহাকে সাস্তুনা দিয়া বাড়ী ফিরিয়া আসেন । বাড়ী আসিয়া পিতামহের যাহাতে শ্রাদ্ধাদি কাৰ্য্য সফল, ভালরূপে সম্পন্ন হয় তাহারই জন্য পিতার নিকট অর্থ পাঠাইয়া দিলেন, পিতা সেই অর্থের সাহায্যে তাহার পিতার শ্রাদ্ধাদি সম্পন্ন করেন। পিতার সহিত র্তাহার এতদূর সৌহৃদ্য জন্মাইয়াছিল যে, দুইজনের মধ্যে স্থির ছিল যে, র্যাহার আগে মৃত্যু হইবে, র্তাহার বিধিমত সংকার যিনি জীবিত থাকিবেন তিনিই করিবেন। পিতার মৃত্যু পূৰ্ব্বেই হওয়াতে, আমার শ্বশুর স্বয়ং উপস্থিত থাকিয়া চন্দনকাষ্ঠে তাহার চিতাশঘ্য প্রস্তুত করিয়া সুচারুরূপে সংকারকার্য্য সম্পন্ন করেন । ইহাদের দুইজনের পরস্পরের মধ্যে এত ভালবাসা থাকার জন্য র্তাহার ইচ্ছা ছিল এই ঠাকুরপরিবারের সহিত বিবাহ দ্বারা আরও নিকটতর সম্বন্ধ স্থাপন করা। র্তাহার এই ইচ্ছা পূর্ণ হইয়াছিল। পিতা দয়াবান ও ধাৰ্ম্মিক পুরুষ ছিলেন, গ্রামের গরীব-দুঃখীদের বিপদ-আপদে নিজের শরীর ও অর্থ দ্বারা নানারূপে তাহাদিগকে সাহায্য করিতেন । ইহা ছাড়া গ্রামে দাতব্য চিকিৎসাও তিনি করিতেন । আমার পিতা তিনবার বিবাহ করেন। তিনি কুলীন ব্রাহ্মণ ছিলেন। প্রথম স্ত্রীর দুই কন্যা, দ্বিতীয়ার সস্তানাদি হয় নাই। - শেষে আমার মাকে বিবাহ করেন । মায়ের আট কন্যা এবং তিন পুত্র হয়। আমি ভাই