পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] উপর কাজ হয়। কেমন করিয়া হয় বলিতেছি ; পায়ের মাংসপেশীগুলির সংকুঞ্চন কালে পেশীগুলির ধমনী সকলের মধ্যে অধিকতর পরিমাণে রক্ত প্রবেশ করে । আর পেশীগুলির চাপ লাগিয়া পায়ের শিরাগুলির রক্ত হৃৎপিণ্ডের অভিমুখে দ্রুততর বেগে গমন করে । হৃৎপিণ্ডে এইরূপে অধিক রক্ত যাওয়ায় হৃৎপিণ্ডের সংকুঞ্চন পুৰ্ব্বাপেক্ষ দ্রুততর ও প্রবলতর ভাবে সম্পাদিত হইতে থাকে। হৃৎপিণ্ডের যেমন ক্রিয়া গুলিরও ক্রিয়া বৃদ্ধি হয় । বৃদ্ধি হয় সেই সঙ্গে ফুসফুস সুতরাং দেথা যাইতেছে ভ্রমণের দ্বার হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস দুইয়েরই পুষ্টি ও পেটের মধ্যে যে সকল যন্ত্র অাছে ভ্রমণের সময় উক্তাদের মধ্যেও অধিক রক্ত চলাচল করে । হৃৎপিণ্ডের ক্রিয় বৃদ্ধি হইল শরীরের সর্বত্রই অধিক রক্ত গমনাগমন করে । ভ্রমণেব দ্বারা এইরূপে শরীরের প্রতি অংশ প্রতাংশের পুষ্টি ও উন্নতি সাধিত হয়। উন্নতি হয় । আমাদের দেহের মধ্যে, রক্ত ও শরীরের প্রত্যেক অংশ প্রত্যংশের নিয়ত যেন একটা অদলবদল চলিতেছে । ভ্রমণ সময়ে এই অদল বদলটা খুব শীঘ্র শাস্ত্ৰ হইতে থাকে। শরীরের অংশ প্রত্যংশ হইতে দূষিত পরিত্যজ্য পদার্থ-মিশ্রিত রস রক্তে গমন করে –আর পরিপোষক পদার্থ-মিশ্রিত রস রক্ত হইতে শরীরের অংশ প্রত্যংশে গমন করে । ভ্রমণকালে এক্ট পরিবর্তন শীঘ্ৰ শস্ত্র হয় বলিয়া শরীরের অপকারক পদার্থনিচয় সঙ্গে সঙ্গে শরীর হইতে বাহির হইয়া যায়, আর শরীরের ক্ষয়পূরণ ও পোষণকাৰ্য্যও দ্রুতবেগে সম্পাদিত হয়। ভ্রমণের দ্বারা শুধু যে পায়ের পেশীগুলি উন্নত ও দৃঢ় হয় তা নয় তাবৎ পেশীগুলিরই উন্নতি হইতে দেখা যায়। মাংসপেশীকে না খাটাইয়া যদি বসাইয় রাখা যায় তাহা হইলে অচিরকাল মধ্যেই ইতারা শুকাইয়া যায়। বাৰ্দ্ধক্যের প্রথম লক্ষণ মাংসপেশীগুলিতেই দেখিতে পাওয়া যায়। ইহার আগমনে সৰ্ব্বপ্রথমে মাংসপেশীর আয়তন ও কলেবর হ্রাস হয় । বাৰ্দ্ধক্য নিবারণ করিতে হইলে আমাদের সর্বপ্রথমে মাংসপেশীগুলিকে স্বস্থ ও উন্নত রাখিতে চেষ্টা করিতে হইবে । কেবল ভ্রমণ ও অন্তান্ত ব্যায়ামের দ্বারা এই অভিপ্রায়টি সিদ্ধ হওয়ার সম্ভব । এখন প্রশ্ন এই আমাদের প্রতিদিন কতখানি অকালবাৰ্দ্ধক্য নিবারণ ও দীর্ঘ জীবনলাভের উপায় ৬২৭ ভ্রমণ করা চাই ? এলিষয়ে কোন একটা সাধারণ নিয়ম নাই । ব্যক্তিবিশেষে ও অবস্থাবিশেষে ভ্রমণের হ্রাস বুদ্ধির আবশুক হয় । কাহার কাছার পক্ষে দৈনিক অৰ্দ্ধ ঘণ্টাকাল ভ্রমণেই যথেষ্ট পরিশ্রম হয়, কাহারও কাহারও বা ৩ ঘণ্টা ভ্রমণের আবগুক চয় । বৃদ্ধদিগের অপেক্ষ যুবকেরা অধিক ভ্রমণ করিতে সক্ষম । আবার অভ্যাস দ্বারা বৃদ্ধরাও বহুদিন ধরিয়া অনেক দূর ভ্রমণ করিতে পারে । ভ্রমণের বেগও আবার সকলের পক্ষে একরূপ হইলে চলিবে না, ব্যক্তিবিশেষে ও অবস্থাবিশেষে ইষ্ঠারও তারতম্য হওয়ার আবখ্যক । স্থূলকায় ব্যক্তিদিগের পক্ষে ঘণ্টায় দেড় মাষ্টলের অধিক ভ্রমণ সঙ্গত নয়। আবার কাহার কাহার পক্ষে ঘণ্টায় ৪ মাইল ভ্রমণ করিলেও অসঙ্গত হয় না। যে সকল ব্যক্তির রক্ত সঞ্চলন ও শ্বাসযন্ত্রগুলি সবল তাছাদের পক্ষে সব সময় সমতল ক্ষেত্রে বিচরণ করলে চলিবে না । উচু নীচু জমির উপর দিয়াও ভ্রমণ করা আবখ্যক । বাদলা বৃষ্টিতে অভ্যস্ত ভ্রমণ বন্ধ করিতে নাই । অবশু দুৰ্ব্বল রুগ্ন ব্যক্তিদিগের পক্ষে অন্ত কথা । অনেক সবল বাক্তিও এইরূপ অভিযোগ করেন যে ঠাণ্ডায় বাহির হইলেই তাঙ্গাদের সর্দি কিম্বা বাত হয় । এষ্ট ভয়ে ঠাও। দিনে তাঙ্গার ঘরের বাহির হুয়েন না । প্রথম প্রথম ঠাণ্ডায় বাহির হইলে এইরূপ হয় বটে, কিন্তু কিছুদিন অভ্যাসের পর আর তাঙ্গ হইতে দেখা যায় না, তখন সকল ঋতুতেই ভ্রমণ সম্ভব হয় ; আর তাঙ্কাতে শরীর এমন দৃঢ় ও মজবুত হয় যে, আবহাওয়ার পরিবর্তনে কোনরূপই অসুবিধা হয় না। প্রাত্যহিক ভ্রমণ ছাড়া সপ্তাহে একদিন দীর্ঘ ভ্রমণের অবিস্ত্যক । দুৰ্ব্বল ও জরাগ্রস্ত অথৰ্ব্ব ব্যক্তিদিগের পক্ষে অবশ্য ইহার আবশুক নাই। ব্যক্তিগত সামর্থ্যানুসারে এই ভ্রমণ ৩ ঘণ্টা হইতে ৬ ঘণ্টাকাল স্থায়ী হওয়ার আবশুক। এসময় মধ্যে কিছু আহার অথবা পান না করিলেই ভাল হয়। বড় জোর কিছু মুড়ি বা বিস্কুট আর একটা আধটা ফল খাওয়া যাইতে পারে । এই সময় শরীরের ওজন কতকটা হ্রাস হইতে দেখা যায়, কারণ ঘৰ্ম্মের আকারে শরীরের কতক জলীয় অংশ ও উহার সহিত কতকগুলি অপকারক পরিত্যজ্য পদার্থ নিষ্ক্রান্ত হইয়া যায়। শরীর হইতে জলীয় অংশ যেমন ৰাছির হয়