পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ গীত རྗེ་བ”།S বুদ্ধিতে কৰ্ম্ম করিলে বন্ধন হয় না তাহাই বুদ্ধিযোগ। কৰ্ম্মের ফল যখন আয়ত্ত নহে তখন ফলাফলে সমবুদ্ধি হইয়। অসঙ্গ চিত্তে কৰ্ম্ম করার নাম বুদ্ধিযোগ। বুদ্ধিযোগ স্ত্রীকৃষ্ণের ব্যাখ্যাত রাজবিদ্যার অন্তর্গত । শ্ৰীকৃষ্ণের মতে যে কাজই কর না কেন বুদ্ধিযুক্ত হইয়া করা উচিত। মাতু্য সাধারণত যে-কাজ করে তাহ ফললাভের আশায় করিয়া থাকে। ফললাভের অনিশ্চয়তা তাহার মনে উঠে না । যে-কাজে ফললাভ হইতেও পারে না-ও পারে এরূপ মনে হয় সেখানে কৰ্ম্মে অনেকট নির্লিপ্ত ভাব আসে ; মানুষ কৰ্ত্তব্যবোধেই এরূপ কাজে সাধারণতঃ প্রবৃত্ত হয়। এ ক্ষেত্রে নিরাশাজনিত কষ্ট ইত্যাদি মানুষকে পাড়িত করে না। কোন ব্যবসায়ীর বিল-সরকার টাকাআদায়ের জন্য তাগিদ করিয়া বিফলমনোরথ হইলে নিরাশ হয় না ; তাহার কৰ্ত্তব্য সে করিয়াছে, ফললাভ হয় নাই তাহাতে তাহার কোন দোষ স্পর্শ করে নাই । বিল-সরকার কষ্ট না পাইলেও টাকা আদায় না হইলে তাহার ব্যবসায়ী মনিব কষ্ট পাইয়া থাকে, কারণ টাকা তাহার পাওয়া উচিত এবং সে তাহ পাইবেই এই ধারণার বশে সে তাহার কৰ্ম্ম নিয়ন্ত্রিত করিয়াছে। টাকার উপর আসক্তিই তাহার মনে এই প্রকার ধারণা জন্মাইয়াছে। আসক্তি পরিত্যাগ করিয়া যদি আমরা বিল-সরকারের মত প্রকৃতির দ্বারা নিয়োজিত হইয়াছি এই বুদ্ধিতে ও কেবল কৰ্ত্তব্যবোধে কৰ্ম্ম করিতে পারি তবে আমাদের কৰ্ম্মের বন্ধন হয় না। ইহাই শ্রীকৃষ্ণের বুদ্ধিযোগ । আধুনিক Histą7 siffCSSH (theory of probability ) * T এই উপদেশই দেয়। কোন কাৰ্য্যেই পূর্ণ নিশ্চয়তা নাই ; কাল সূৰ্য্য উঠিবে ইহাও স্থিরনিশ্চয় বলিতে পারা যায় না, কেন-না কোন ব্যাপারেরই সমস্ত কারণগুলি আমরা জানিতে পারি না ; কতকগুলি কারণ wife (unknown factors ) থাকিয়াই যায়। গীতায় ১৮১৪ গ্লোকে এইরূপ কারণসমষ্টিকে দৈব বলা হইয়াছে। সম্ভাব্য গণিত বলিতে পারে কোন কার্ঘ্যের ফললাভের সম্ভাবনা বেশী, কোন কাৰ্য্যের কম । ফলাফলের নিশ্চয় জ্ঞান সম্ভব নহে, কারণ কার্ষ্যের সকল কারণ আমাদের আয়ত্ত নহে। যে বিজ্ঞান সম্ভাব্য গণিতের সিন্ধান্ত স্মরণ রাখিয়া জীবনযাত্রা নিৰ্ব্বাছ করেন তিনি বুদ্ধিযোগই অবলম্বন করেন। এরূপ ব্যক্তির কৰ্ম্মে নির্লিপ্তি বা অসঙ্গ জন্মে ও ফলাফল সম্বন্ধে তিনি ক্রমে উদাসীন হন। প্রাণায়াম ও অন্যান্ত যৌগিক সাধনী— মহাভারতের যুগে যোগসাধনা বহু অমুষ্ঠিত হইত। শ্রীকৃষ্ণ ষষ্ঠ অধ্যায়ে এই সাধনার বিচার করিয়াছেন। পাতঞ্জলযোগ এই মার্গের অন্তর্গত। গীতায় দুই প্রকার যোগের উল্লেখ আছে, এক শারীরিক ও অপরটি মানসিক । শ্রীকৃষ্ণের মতে এই দুই যোগের ফল একই প্রকার ; তিনি আরও বলেন যে যাহা সংন্যাস বস্তুতঃ তাহাই যোগ । শারীরিক যোগ সম্বন্ধে শ্ৰীকৃষ্ণের উপদেশ এই যে, যোগী নিৰ্ম্মল স্থানে স্থির অনতিউচ্চ, অনতিনীচ, কুশ, পশুচৰ্ম্ম ও বস্ত্র উপরি উপরি বিছাইয় আপনার আসন স্থাপন করিবেন। সেই আসনে উপবেশন করিয়৷ দেহ মস্তক গ্রীবা ঋজু ও স্থির রাখিয়া চতুর্দিকে অবলোকন না করিয়৷ স্বীয় নাসিকাগ্রে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাথিয় চিত্ত ও ইন্দ্রিয়ের ক্রিয়। সংযম করিয়া একাগ্রমনে আত্মবিশুদ্ধির জন্য যোগযুক্ত হইবেন । শ্বেতাশ্বতর উপনিষদে যোগসাধনার অনুরূপ পদ্ধতি উল্লিখিত হইয়াছে। গীতায় কোন কষ্টকর যোগাসনের উল্লেখ নাই। অনেক যোগী বহু আয়াসলব্ধ কষ্টকর আসনে যোগ অভ্যাস করেন ও নানা প্রকার কঠোর কৃচ্ছ, সাধন করেন। শ্রীকৃষ্ণ সকল প্রকার কঠোরতার বিরোধী। তিনি বলিয়াছেন অতিভোজী এবং একান্ত অনাহারীর যোগ সিদ্ধ হয় না, অতিনিদ্রাশীল ও অতি-জাগ্রতেরও নয়। উপযুক্ত আহারবিহারশীল, কৰ্ম্মে উপযুক্ত চেষ্টাসম্পন্ন ও উপযুক্ত নিদ্রাজাগরণশীল পুরুষের যোগ দুঃখনাশক হয়। শ্রীকৃষ্ণ যোগের যে-পদ্ধতি নির্দেশ করিয়াছেন তাহ৷ সকলেরই আয়ত্ত। মানসিক যোগ সম্বন্ধে শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ এই যে, কামনা পরিত্যাগ করিয়া ধতিযুক্ত বুদ্ধির দ্বারা মনকে আত্মস্থ করিবে ; যে-যে বিষয়ে মন ধাবিত হইবে সেই সেই বিষয় হইতে মনকে সংযত করিম্বা আপনার বশে আনিবে. এই উপায়ে সিদ্ধি হইবে। মানসিক যোগই ধ্যান। মানসিক যোগে কোন আসনের সুল্লখ নাই। এখনকার মত পুরাকালেও সাধারণের ধার ,,ே

  • ,