পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২২ e ং প্রবাসী ; | S5లిశు করিবার তিন চার মাস পরেই রাজা ভগবান দাস গোগুদায় মহারাণা প্রতাপের সহিত সাক্ষাৎ করিয়াছিলেন —এটুকু অস্বীকার করিবার জো নাই। তাহ হইলেই প্রমাণিত হয় প্রতাপের মানসিংহকে অপমানিত করিবার কথাটা কাল্পনিক । ২। দ্বিতীয় কথা—হলীঘাটের যুদ্ধের মাত্র চারি মাস পরে মানসিংহ দরবারে ফিরিয়া আসিবার পর প্রতাপের হিতৈষী বলিয়া সম্রাট তাহাকে সন্দেহ করিয়াছিলেন । আবুল-ফজল বলেন,— “Tricksters and time-servers suggested to the royal ear that there had been slackness in extirpating the wretch, and officers I among whom Man Singh was one I were nearly incurring the king's displeasure” [ Akbarnama, iii. 260. বদায়ুনী লিখিয়াছেন,— “And at this time, when news arrived of the distressed state of the army at Gogunda s not Hokandah I the Emperor sent for Man Singh, Asaf Khan, and Qazi Khan to come alone from that place, and on account of certain faults which they had committed, he earcluded Man Singh and Asaf Khan is who were associatated in treachery) for some time from the Court...”--Lowe’s translation of Muntakhab-ul-tawarikh, p. 247. নিজাম-উদ্দীন বলেন, মানসিংহ এবং আসফ থ রাণার রাজ্যে লুটতরাজ করিতে না দেওয়ায় মোগলসৈন্যদের কষ্ট ও অসুবিধা হইয়াছিল—এজন্যই সম্রাট উহাদের উপর অসন্তুষ্ট হইয়াছিলেন । বঙ্গবিজেতা মানসিংহ ঘরে বাহিরে লাথি খাওয়ার পাত্র ছিলেন না । যদি মহারাণা প্রতাপ সত্যই তাহাকে ভোজন-ব্যাপারে অপমানিত করিতেন তাহা হইলে মেবার-রাজ্যের উপর এতখানি দরদ মানসিংহের থাকিত কি ? ৩। দুই বৎসর পর্য্যস্ত কুমার মানসিংহ ও রাজা ভগবান দাসের দ্বারা কাৰ্য্যোদ্ধার না হওয়ায় ১৫৭৮ খৃষ্টাব্দে সম্রাট আকবর স্বচতুর সেনাপতি শাহ বাজ থাকে মহারাণ প্রতাপের বিরুদ্ধে প্রেরণ করিয়াছিলেন। শাহবাজ খ সেনাপতিত্ব গ্রহণ করিয়াই রাজা ভগবস্ত দাস ভ" দাস) ও কুমার মানসিংহকে সম্রাটের দরবারে পাঠাইয়া দিলেন, 蠶 প্রতাপের প্রতি উগ্ৰহাদের স্বাভাবিক সহানুভূতি কfধ্য বিঘ্ন ঘটায় “...lest from their feelings as landholders there might be delay in inflicting retribution on that vain disturber.” ৪ । উল্লিখিত ঘটনাবলী হইতে মনে হয় না মানসিংহ প্রতাপের অপমানিত শত্রু ; বরং ব্যাপারট আমূল আলোচনা করিলে মনে হয় তাহার রাণার হিতৈষী ছিলেন । প্রতাপের খেলাং-গ্রহণ, বশ্যতাস্বীকার, স্তোক-বাক্য ইত্যাদি সত্য না হইতে পারে। কিন্তু বাদশাহের দরবারে এগুলি না লিখিলে নিজেদের মুখ রক্ষা হয় না, প্রতাপকেও সম্রাটের কোপ হইতে বাচান যায় না, এই জন্য রাজা ভগবান দাস ও কুমার মানসিংহ এ সমস্ত কথা মোগল-দরবারে বলিয়াছিলেন । নিম্নলিখিত আভ্যন্তরীণ সাক্ষ্য দ্বারা এই গল্পের কাল্পনিকতা প্রমাণিত হয়,— ১ । ‘বংশভাস্করে’ লিখিত আছে, রাজা ভগবস্তু দাস ( ভগবান দাস ) মহারাণ উদয়সিংহের সহিত দেখা করিতে গিয়াছিলেন । ভোজন করিবার সময় কচ্ছবাহপতি মহারাণাকে বলিলেন—আপনিও আমুন ! মহারাণ বলিলেন, আজ আমার একশণ ব্ৰত ; আপনি অন্নগ্রহণ করুন। তবুও ভগবন্ত দাস মহারাণাকে ভোজন করিবার জন্য বিশেষ অনুরোধ করিতেছেন দেখিয়া নিজ স্কুলের দপাভিমানী শিশোদিয়া সামস্তের বলিয়া উঠিলেন, তুম সংগ ভোজন হমহু ন করছি দূর রাণ উদস্ত। দিল্লীস কেঁ দুহিতা বিবাহ হে বড়ে কুল হস্ত'। অর্থাৎ—তুমি বড়ই কুলম্ব ; দিল্লীশ্বরকে কন্যাদান করিয়াছ তুমি ; রাণী উদয়সিংহের কথা দূরে থাক আমরাও তোমার সহিত ভোজন করি না । ( বংশভাস্কর, পৃ ১২৪১ ) সুতরাং দেখা যাইতেছে এই বিষয়টি মামুলী গল্প। ২ । প্রকৃত ইতিহাসের অভাবে ভাটেরা এই গল্প স্বষ্টি করিয়া মোগলদের মেবার-আক্রমণের কারণ-স্বরূপ ইহা কখনও উদয়সিংহের নামে, কখনও-বা প্রতাপের নামে চালাইয়া দিয়াছে। মহারাণা উদয়সিংহের বিরুদ্ধে আকবরের অভিযানের কারণগুলি—অর্থাৎ মালবপতি বাজ বাহাদুরের মেবারে আশ্রয়গ্রহণ, কুমার শক্ত