পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

و هوا S99శు. ভগবান তাড়না ভিন্ন পাপীকে অন্য উপায়ে সংশোধন করিতে পারেন না বলা ક્રાંત প্লাধারণ মনুষ্য যদি কাহাকেও পাপ কাজ ੋਮਾਂ করিতে দেখে তবে সেও তাহ সাধ্যমত নিবারণের চেষ্টা করে। আমরা সকলেই স্বীকার করি prevention is better than cure কিন্তু ভগবানে ক্ষমতাসত্ত্বেও পাপীকে পাপ হইতে নিরস্ত না করিয়া তাহাকে পাপ করিতে দিতেছেন ও পরে তাহার শাস্তি বিধান করিতেছেন। ইহার অপেক্ষ ক্রুর কৰ্ম্ম কি হইতে পারে ? অপরপক্ষে পুনর্জন্মবাদ মানিলে ও ভগবানকে ন্যায়বান বল। যায় না । সাধারণ মন্থম্য জাতিস্মর নহে। পূৰ্ব্বজন্মে কি ছিলাম এ জন্মে তাহ আমার মনে নাই । অতএব আমার নিকট এ জন্মের আমি ও পরজন্মের আমি রাম ও শ্বামের ন্যায় দুই সম্পূর্ণ বিভিন্ন ব্যক্তি। একের পাপে অন্যের শাস্তি নিতান্তই অশোভন । আমি যদি নাই জানিলাম আমি কি পাপের শাস্তি পাইতেছি,তবে সে শাস্তি সম্পূর্ণ নিরর্থক। এই সমস্ত বিচার করিলে বিজ্ঞানী বলিবেন, ভগবানকে সৰ্ব্বশক্তিমান মানিলে দ্যায়বান ও পরমকারুণিক বলা চলিবে না । ভগবদ্ভক্ত বলিবেন, এ সব তর্ক ছাড়িয়া দাও ? ভগবান লীলাময়, ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে আমরা তাহার লীলার কি বুঝিব ? বিজ্ঞানী উত্তরে বলিতে পারেন, তবে সেই ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে তাহাকে কারুণিক বল কি করিয়া ? তাহাকে কারুণিক ও শক্তিমান ইত্যাদি পরম্পরবিরোধী বিশেষণে অভিহিত না করিয়া তাহাকে আমরা কিছুই জানি না এ কথা বল ? পৃথিবীতে বৰ্ত্তমান অবস্থা যতদিন থাকিবে ততদিন তাহাকে কারুণিক বলিও না। করুণাময় ভগবানের উপর ভক্তের বিশ্বাস তর্কে অপনীত হইবার নহে। কিন্তু বিজ্ঞানীর কাছে এ বিশ্বাসের মুল্য নাই । দেখা গেল, যে-বিশ্বাসের উপর নির্ভর করিয়া জন্মান্তরবাদের ভিত্তি করা গিয়াছিল তাহ টিকিল না । ভগবানকে টানিয়া না আনিলেও জন্মান্তরবাদের বিচার হইতে পারে। পূৰ্ব্বজন্ম কৰ্ম্মফল মানিলে এজন্মের ব্যক্তিগত বিভিন্নভার ব্যাখ্যা হয় সত্য ; কিন্তু প্রশ্ন উঠিবে পূৰ্বৰলুই বা ভেদ হইল কেন ? অতএব কৰ্ম্মকে অনাদি ও তদুৎপন্ন ভেদও অনাদি যানিতে হইল। ভেদকে অনাদি বলিলে ব্যাখ্যা সন্তোষজনক হইল না ; এই জন্মেই ভেদের কারণ অাছে বলায় যে দোষ সেই দোষই রহিল । উহ হিসাবেও জন্মান্তরবাদ প্রতিষ্ঠিত হইল না। হিন্দুশাস্ত্রকারগণ পুনর্জন্ম প্রমাণ করিবার জন্য আরও কয়েক প্রকার যুক্তির অবতারণা করিয়াছেন। মৃত্যুকে আমরা সকলেই ভয় করিয়া থাকি, এমন কি সদ্যোজাত শিশুতেও মৃত্যুভয় লক্ষিত হয়। পূৰ্ব্বজন্মে মৃত্যুযাতনার অন্তভূতির সংস্কার মৃত্যুভয়ের কারণ বলিয়া মানিতে হয়, নচেং অজ্ঞাত ব্যাপারে ভয় কেন হইবে ? সদ্যোজাত প্রাণীর স্তন্যপান প্রভৃতির চেষ্টা দেখিলে পূৰ্ব্বজন্ম অসুমিত হয় । জননীর স্তনে দুগ্ধ আছে—শিশু তাহার পূর্বসংস্কার বলে জানিতে পারে । কাহারও কাহার ও কোনও বিষয়ে সহজাত জ্ঞান দেখা যায়, যথা— অতি সামান্য চেষ্টায় কে ছ অসামান্ত গণিতজ্ঞ হইল ; পূৰ্ব্বজন্মার্জিত জ্ঞান বর্তমান জন্মে প্রকাশিত হইয়াছে ইহাই অনুমান করিতে হয় । বৃদ্ধ ব্যক্তি নিজের শরীরের দিকে লক্ষ্য না করিলে নিজ বৃদ্ধত্ব অতু ভব করে না ; বালকও নিজের বালকত্ব অনুভব করে না । আত্মা আবিকারী বলিয়াই দেহের পরিবর্তন সত্ত্বেও নিজের পরিবর্তন অসুভব করে না। আত্মার অমরত্ব ও দেহের ক্ষরত্ব জন্মস্তিরবাদের পরোক্ষ প্রমাণ। হিন্দুশাস্ত্রকথিত এই সমস্ত যুক্তি অবিসংবাদী নহে। আধুনিক প্রাণিবিং পূৰ্ব্বজন্মের অর্থাৎ প্রাক্তন সংস্কার না মানিয়া । বংশগত সংস্কার ( heredity ) মানেন । শিশু যে মরণ ভয়ে ভীত হয়, জন্মিবামাত্র মাতৃ স্তনের সন্ধান করে, কেহ কেহ অল্পায়াসে অধিক জ্ঞানার্জন করে—এ সমস্ত বংশগত সংস্কার দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায়। জন্মান্তর মানিবার কোন আবশ্বকত থাকে না । বানর-শিশুর সংস্কার বানর জাতিরই উপযুক্ত ; মনুষ্য কোনও জন্মে বানরযোনিতে জন্মগ্রহণ করিলে তাহার মনুষ্য-শিশুর ন্যায় সংস্কার লক্ষিত হইত । বলা যাইতে পারে তাহার মনুষ্যযোনির সংস্কার অভিভূত অবস্থায় বওঁমান থাকে। কিন্তু বানরযোনিতে জন্মিব|মাত্র তাহার শাখাগ্ৰহণাদির ইচ্চা কোথা হইতে আসিল ।