পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন শশাঙ্কের কলঙ্ক—রাজ্যবৰ্দ্ধন-হত্য Գ86 স্থাচে ঢালা তখন সহজ অর্থ ছাড়িয়া শেষ পাদের অন্তরূপ অর্থ করা কৰ্ত্তব্য নহে । যে অরাতির ভবনে রাজ্যবৰ্দ্ধন প্রাণত্যাগ করিয়াছিলেন তাহার প্রতি হর্মের বা হষের অল্পমতি অনুসারে শ্লোক রচনাকারীর বাণের অপেক্ষ। কম বিদ্বেষ থাকার কথা নয় । তাহা সত্ত্বেও যখন শাসনের শ্লোককৰ্ত্তা রাজ্যবদ্ধনের শত্রু গৌড়াধিপকে রাজ্যবদ্ধনের মৃত্যুপ্রসঙ্গে সাক্ষাৎ সম্বন্ধে বিশ্বাসঘাতক বলেন নাই, তখন বিশেষ বিচার না করিয়া বাণের কথা অনুসারে তাহাকে বিশ্বাসঘাতক বলা যায় না। রাজ্যবৰ্দ্দনের মৃত্যু সম্বন্ধে চীনদেশীয় পরিব্রাজক যুয়ান চোয়াঙ যাহা লিখিয়াছেন তাহা বাণের কথা সমৰ্থন করে। যুয়ান চোয়াঙ, লিথিয়াছেন— “The latter (Rajyavardhama) soon after his aevession was treacherously murdered by Sasanka, the wicked King of Karnasuvarna in Eastern India, a persecutor of Buddhism” (Watters). “রাজ্যলাভের অনতিকাল পরেই প্রাচাভারতের অন্তগত কর্ণসুবর্ণের নিষ্ঠর রাজা বৌদ্ধনিমাতনকারী শশাঙ্ক রাজ্যবৰ্দ্ধনকে বিশ্বাসঘাতকত। করিয়া হত্যা করিয়াছিল।” যুয়ান চোয়াঙ হর্যের রাজত্বের প্রায় শেষভাগে ( আগষ্ণুমানিক ৬৪০ খ্ৰীষ্টাব্দের পরে ) তাহার এবং তাহার সভাসদগণের সঙ্গলাভ করিয়াছিলেন। রাজ্যবৰ্দ্ধনের মৃত্যু সম্বন্ধে তখন যে জনরব প্রচলিত তিনি তাঁহাই লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন । সেই জনরবের মূল খুব সম্ভব “হর্ষচরিত” । “হর্ষচরিতে”র তৃতীয় উচ্ছাস পাঠ করিলে মনে হয়, বাণ হর্যের দরবারে প্রবেশলাভের অনতিকাল পরে “হাঁচরিতে”র রচনা আরম্ভ করিয়াছিলেন । য়ুয়ান চোয়াঙ, হর্ষের দরবারে উপস্থিত হইবার পূর্বেই সম্ভবতঃ সভাপণ্ডিত বাণের বিবৃতি প্রচারলাভ করিয়াছিল। এখন জিজ্ঞাস্ত, বাণের কথা কতদূর বিশ্বাসযোগ্য ? পাশ্চাত্য হিসাবে যাহাকে জীবনচরিত (biography) বা ইতিহাস ( history ) বলে, বাণের “হর্ষচরিত” সেই শ্রেণীর গ্রন্থ নহে, “হর্ষচরিত’ একখানি কাব্য এবং আখ্যায়িক । “হর্ষচরিতে’র সূচনায় কয়েকটি শ্লোকে গ্রন্থকার তাহার আদর্শস্থানীয় কবিগণের মহিমা কীৰ্ত্তন করিয়া কি আদর্শ লইয়া তিনি এই আখ্যায়িকা রচনা করিতেছেন তাহা এইরূপে উল্লেখ করিয়াছেন— R te سس~8 ج? “সুখপ্রবোধললিতা সুবর্ণখটনৌজলৈঃ । শন্দৈরাথ্যায়িক ভাতি শযোব প্রতিপাদকৈঃ ॥ “স্বথে যেখান হইতে নিদ্রাভঙ্গ হয় এইরূপ বিছানার মত মুখবোধ অtখ্যায়িক। শোভন অক্ষরযুক্ত সার্থক ( প্রতিপাদক ) শব্দের দ্বারা শোভা পায় ।” এখানে আথ্যায়িকার আখ্যানবস্তুর বা ঘটনার সত্যাসত্যত সম্বন্ধে কোন কথা নাই । আখ্যায়িকার প্রধান উদ্দেশু বলা হইয়াছে শব্দযোজনাকৌশল দেখান। “হসঁচরিতে’র পত্রে পত্রে শব্দড়িম্বর দেখা যায়। এই গ্রন্থের চরিতাংশ আছিল৷ মাত্র ; এই অছিলায় গ্রন্থকার পদে পদে সমাসবদ্ধ এবং দ্বার্থ শব্দবোজনাকৌশলের এবং বর্ণনাশক্তির পরিচয় দিতে ব্যতিব্যস্ত। যদিও “হর্ষচরিতে’র চরিতভাগের বিষয় গ্রন্থকারের নিজের বংশের, নিজের, এবং স্থার্থীশ্বরের নৃপতিগণের চরিত কথন, তথাপি এই চরিতকথায় গ্রন্থকার বাস্তব ঘটনার সহিত কাল্পনিক ঘটনা মিলাইতে কিছুমাত্র সঙ্কোচবোধ করেন নাই । স্বীয় বংশে পাণ্ডিত্য স্বয়ং সরস্বতীর সাক্ষাৎ কৃপাজনিত এই কথা প্রতিপাদন করিবার জন্ত বাণ একটি অদ্ভুত কাহিনী সৃষ্টি করিয়া “হর্ষচরিতে"র প্রথম উচ্ছ্বাসে নিবদ্ধ করিয়াছেন । এক সময় দেবী সরস্বতী দুৰ্ব্বাস ঋষির শাপে ব্ৰহ্মলোক ছাড়িয়া মৰ্ত্ত্যে নামিতে বাধ্য হইয়াছিলেন, এবং সাবিত্রী দেবীকে সঙ্গে লইয়া আসিয়া শোণ নদের তীরে শিলাতলবিশিষ্ট এক লতামণ্ডপে আশ্রয় লইয়াছিলেন । এখানে চ্যবনের পুত্র দধীচের ঔরসে সারস্বত নামক এক পুত্র প্রসব করিয়া সরস্বতী পুনরায় ব্রহ্মলোকে আরোহণ করিয়াছিলেন। তারপর দধীচ ভ্রাতৃনামক ভৃগু গোত্রীয় ব্রাহ্মণের পত্নী অক্ষমালার করে সারস্বতকে অর্পণ করিয়া তপশ্চরণের জন্য বনে প্রবেশ করিয়াছিলেন। সারস্বতের ভূমিষ্ঠ হওয়ার সমসময়ে অক্ষমালার বংস নামক পুত্র ভূমিষ্ঠ হইয়াছিল। সারস্বত এবং বৎস যমজ ভ্রাতৃদ্বয়ের মত একত্র লালিতপালিত হইয়াছিলেন। যৌবনে পদার্পণ করিবামাত্রই মাতার বরে সারস্বতের বেদবেদাঙ্গাদি সকল শাস্ত্রের পূর্ণ জান ফুক্তিপ্রাপ্ত হইয়াছিল। সারস্বত সেই জ্ঞান বৎসকে দান করিয়া বানপ্রস্থ আশ্রম গ্রহণ করিয়াছিলেন । এই বংসের বংশধর বাণ। বাণের “কাদম্বরী’র স্বচনায় যে ും ':്.-് .