পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ն&o ইহা শার্দুল-বিক্রীড়িত ছন্দে স্বন্দর প্লোকে লেখা। দুঃখের বিষয় সময়াভাবে সমস্ত লিপি নকল করিয়া আনিতে পারি নাই। ইহা ছাড়া আর এক জায়গায় “আচাৰ্য্য শ্ৰীযোগানন্দঃ প্ৰণমতি সিদ্ধেশ্বরং”—উৎকীর্ণ আছে। ইহা খুব সম্ভব অষ্টম শতাব্দীর লিপি। ইহা হইতে জানা যায় যে বরাবর পাহাড়ে সিদ্ধেশ্বরনাথ শিব তখনও বর্তমান ছিলেন। কিছুদিন হইতে ইহা মুসলমানগণের দ্বারা দরগারূপে ব্যবহৃত হইতেছে । নাগাল্গুনী গুহা দেখিয়া ঐ পাহাড় বেষ্টন করিয়া আমরা আরও খানিক পূৰ্ব্ব দিকে গিয়া দুইটি গুহার সম্মুখে উপস্থিত হইলাম। ইহার রাস্ত কঁাট-জঙ্গলে সমাকীর্ণ। এই গুহা দুইটি এমন জায়গায় অবস্থিত যে পূৰ্ব্ব হইতে জানা না থাকিলে বা সঙ্গে পথপ্রদর্শক না থাকিলে খুজিয়া বাহির করা দুষ্কর। যে অধিত্যকার উপর গুহ্যদ্বয় অবস্থিত তাহার প্রায় চারি দিকেই পাহাড় । তাহার মধ্যে উত্তর দিকের পাহাড়ের দক্ষিণ গাত্রে দুইটি পাথর কাটিয়া গুহাদ্বয় নিৰ্ম্মিত । গুহা দুইটি আকারে ছোট। তন্মধ্যে পশ্চিমের গুহাটির নাম বাদিথি কুভ, অন্যটির নাম বাপিয়া কুভ ৷ গুহার প্রবেশদ্বারের উপরে লিখিত লিপি হইতে জানা যায় যে ঐ দুইটি গুহাই দশরথের দ্বারা নিৰ্ম্মিত। তাহা ছাড়া বাদিথি কুভাতে অনন্তবৰ্ম্মার লিপি আছে । অনস্তবৰ্ম্ম এই গুহাতে "বিম্বং ভূতপতে:” অর্থাৎ শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। বাদিথি কুভ ইটের প্রবাসী SNరితిని দেওয়াল দ্বারা দুই ভাগে বিভক্ত। কোন মুসলমান ফকির কর্তৃক প্রায় দুই শত বৎসর পূৰ্ব্বে উহা নির্মিত হইয়াছিল বলিয়া শুনা যায়। এই গুহাদ্বয়ের সম্মুখে অধিত্যকার উপরেই নয় ফুট চওড়া ইট দিয়া বাধান এক কূপ আছে। উহাও গুহানিৰ্ম্মাণের সময় নিৰ্ম্মিত বলিয়া অনুমিত হয় কারণ কুপের দেওয়ালের ইট নালন্দা, সারনাথ প্রভৃতির ইটের

  • उ !

গুহাগুলির মধ্যে ঢুকিলে প্রথমে অন্ধকারে কিছুই দেখা যায় না। পরে সেই অল্প আলোকে চক্ষু অভ্যস্ত হইলে তখন সব দৃষ্টিগোচর হয়। গুহাগুলির আর এক বিশেষত্ব এই যে উহার মধ্যে সামান্য শব্দ হইলেই তাহ চারিদিক হইতে অনেকক্ষণ ধরিয়া প্রতিধ্বনিত হইতে থাকে। গুহাগুলি বৰ্ত্তমানে গবর্ণমেণ্ট কর্তৃক প্রোটেকটেড মন্তমেণ্ট য়্যাক্ট অনুসারে রক্ষিত। এখন আর সেখানে কেহ বাস করে না । এই পাহাড়গুলিতে বাঘ আছে বলিয়া শুনিয়াছি। তাহ ছাড়া এখানে মাঝে মাঝে দস্থ্যরও ভয় আছে । অতএব এখানে আসিতে হইলে সকালের দিকে এবং লোকজন লইয়া আসাহ শ্রেয় । সিদ্ধেশ্বরনাথ শিবের জন্য এখানে ভাদ্রমাসে এক মেলা বসে। তখন অনেক লোক সমাগম হয় । সব দেখা সারিয়া আবার মোটরের ঝাকানি খাইতে খাইতে আমরা যখন গয়ায় ফিরিয়া আসিলাম তখন প্রায় বেলা তিনট । প্রথম শ্রীজগদীশ ভট্টাচাৰ্য্য তোমারে ভুলিতে হ’ল, সেকথা যে ভুলিবার নয় ; আমার জীবন হতে আজ তুমি চির-নির্বাসিত, কৈশোর-প্রাগুষ-লগ্নে শুকতারা সম বিকশিত অয়ি মোর প্রথমিক, ফুরায়েছে তোমার সময়। আমার আকাশে তুমি প্রেমময় প্রথম প্রভাত ; কৃষ্ণপক্ষ-নিশাস্তের স্নিগ্ধজ্যোতি তুমি গে কিশোরী, মধুর মধুর তুমি, তবু হায় গিয়াছি বিস্মরি ; আমার বসন্ত-বনে আসিবে না আর সেই রাত । তুমি এনেছিলে প্রেম, তব চোখে হেরেছি তাহারে স্বপ্নের স্বর্গের প্রেম—ম্পর্শ-ভীরু সে প্রেম তোমার, নিশীথ-স্বপন-সম মিলায়েছে রেশটুকু তার ; ক্ষীণায়ু প্রথম প্রেম-তারে বল কে বাচাতে পারে ? তবু তোমা ভুলি নাই, আজি তাই বাসর-শয্যায় বধূরে জড়ায়ে বুকে, ওষ্ঠ হতে নিঙাড়ি অমিয় স্মরণ করিচু এক বিস্মৃতির স্বপ্ন রমণীয়,— সে স্বপ্ন তোমারে নিয়ে রচিয়াছি মিলন-জ্যোৎস্নায়। অতিক্রান্ত লগ্ন তব, তবু তোমা ভুলিতে পারি নি ; দুলভ স্বপ্নের মাঝে বেঁচে আছ হে অভিসারিণী।