পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/১৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

vლ,4 ჯა দিতেছে "এককান। বলীখেল চাইতাম যাইর।" ইত্যাদি। দেখিতে দেখিতে স্থানটি লোকারণ্যে পরিণত হয়। বেল দশটার পর মল্পগণ আসরে অবতীর্ণ তইতে থাকে। তখন সজোরে ঢোলে কাঠি পড়িতে থাকে এবং আরো ঘন ঘন বোম ফুটিতে থাকে। শিক্ষিত ব্যক্তিগণের মধ্যে কেহ কেহ উপস্থিত থাকিয় মধ্যস্থত করিয়া থাকেন। বেল দশটার পর হইতে জনতার ভিড় এত বাড়িতে থাকে যে তথন রাস্ত দিয়া গাড়ী ঘোড়া চলাচলও প্রায় বন্ধ হইয়া যায়। খেলা আরম্ভ হইলে মল্পগণ রঙ্গস্থলে অবতীর্ণ হইয়া বাদ্যের তালে তালে নৃত্য করিতে থাকে এবং মালসাটে প্রতিপক্ষকে ক্রীড়ায় আহবানস্থচক সঙ্কেত করিতে থাকে। এখানকার খেলার নিয়ম এই যে ৮১০ জোড়া বলী বা পালোয়ান একসঙ্গে কুস্তী আরম্ভ করে। মল্পগণের মধ্যে একজন অন্যজনকে "চিৎপটুকন" দিতে পারিলেই তাহার জিত হইল। কোন বলী কাহাকেও হারাইতে পারিলে উপস্থিত জনতার মধ্য হইতে যে গভীর আনন্দধ্বনি উখিত হয় তাহাতে গগন বিদীর্ণ হইবার উপক্রম হয়। যে বলী জয়লাভ করে সে খেলাদাতার নিকট হইতে যথোপযুক্তরূপে বস্ত্র ও অর্থাদি পুরস্কার লাভ করিয়া থাকে। এরূপে অনেক জোড়া বলী যার যার কেরামং দেখাইয়। পুরস্কার লইয়া যায়। দুঃখের বিষয় ঢাকার, কলিকাতার ও পশ্চিমী পালোয়ানগণের খেলার প্রতিযোগিতায় প্রতিপক্ষগণ একে অন্যকে হারাইবার জন্য যে-সকল অপূৰ্ব্ব কৌশল (পাচ) দেখাইয়। থাকে, এক এক জোড়া ময়ের খেলায় যেরূপ ২৪ ঘণ্টা সময় অতিবাহিত হয়, এখানকার মল্পগণের পেলায় তাহার অহুরূপ বড় বেশী কিছু দেখিতে পাওয়া যায় না—এক এক জোড়ার খেলায় ১০১৫ মিনিটের বেশী সময় লাগে না। ইহার কারণ স্থানীয় বলীগণ অধিকাংশই “ভূ ইফেঁাড়", এগানে কুন্তী কসরং শিক্ষার তেমন কোন নিদিষ্ট "আখড়া" নাই ; নিজে নিজে যে যত দেহের শক্তি সঞ্চয় করিতে পারে সেই তত বড় বলী বলিয়া পরিগণিত হয়। এখানে বল খেলায় বেরূপ একাগ্রতা আছে, যেরূপ উন্মাদন আছে, তাহাতে যদি কসরৎ ও কৌশলাদি শিক্ষার তেমন কোন ব্যবস্থা থাকিত তবে সোনায় সোহাগা হইত সন্দেহ নাই। আশা প্রবাসী—আষাঢ় ১৩২২ [ ১৫শ ভাগ, ১ম খঞ্জ করি খেলার অনুষ্ঠানকারীগণ এ বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ হইবেন। এবং সময় সময় ঢাকা প্রভৃতি স্থান হইতে নামজাদ পালোয়ানদিগকে আনাইয়। বলীখেলার প্রকরণ ব্যবস্থা করিয়া ইহার উন্নতিসাধনে যত্নবান হইবেন। সন্ধ্যার প্রাক্কালে খেল ভাঙ্গিয়া যায়। তখন রুদ্ধ জন্ম °डि देि९ ५• श्७झात्र छाम्न छननख्न গৃহাভিমুখে প্রস্থান করে। বহুদূর হইতে আগত বলীগণ তাহলে ঐ পাথেয় ও খোরাকী ইত্যাদি পায়। এ উপলক্ষে অনুষ্ঠাতায় ***২, ৫ °২ টাকা ব্যয় হইয়া থাকে। চট্টগ্রাম মুসলমান প্রধান স্থান বলিয়। দর্শকগণের মধ্যে প্রায় পনর আলাঃ মুসলমান। পাঠকগণ চিত্রগুলি মন দিয়া দেখিলে ট্রক্ট বাহুল্যে এই তথ্য উপলব্ধি করিতে পরিবেন। চট্টগ্রামে বলীখেলার ভিতর যে চেতনাটুকু এখনও ক্ষী দীপালোকের মত জলিতেছে তাহাতে কিঞ্চিৎ উৎসাহের তৈলসেক করিয়৷ যদি ইহাকে সৰ্ব্বত্র এইরূপ সচেতন কর যায় এবং পূৰ্ব্ব কালের ব্যায়াম কৌশলপূৰ্ণ ক্রীড়াদি পুনর নিঃসঙ্কোচে গ্রহণ করিয়া আমাদের ভাবী বংশধরগণের ব্যায়ামের ব্যবস্থা করা যায়, তবে এই পোড়া বাঙ্গলা আবার স্বাস্থ্যের উজ্জ্বলতেজ প্রদীপ্ত হইয়া উঠিতে পারে। শাস্ত্রে আছে— "শরীমাদাম খলু ধৰ্ম্মসাধনম্। কোহিঙ্গুর প্রেস, চট্টগ্রাম । শ্ৰীমোহিনীমোহন দাস।। রজনী হইনবাৰ্ণ কৃত ইতালীয় কবিতার অনুবাদ) > দেখিছ না রজনীর রূপ–শাস্ত-সৌম্য-মধুর-সুন্দর নিদ্রায় মগন,–যেন ভাস্কর-গঠিত "র-যুৱতি ; কিন্তু চেতনা-পূরিত, ঘুমায় সে। বিশ্বাস কর না ? ডাক তারে, সে দিবে উত্তর। R নিদ্রা মোরে বাসে ভালে ; মোর কাছে চাহ পরিচয় আৰু *一 পাষাণ-প্রতিম। আমি । যাক লজ্জা, যাক দুখ, মোর ভাগ্য ভালো, দেখিতে হয়না কারো মুখ! শুন তবে, কথা কও ধীরে—ভাঙ্গিও না কুযুপ্তি আমার! শ্ৰীগিরিজানাথ মুখোপাধ্যা ৩য় সংখ্যা ] উত্তরবঙ্গের পীর-কাহিনী* উত্তরবঙ্গ সাহিত্যপরিষদের বিগত মালদহ-অধিবেশনে আমার লিখিত "উত্তরবঙ্গের পীর-কাহিনী" শীর্ষক একটি প্রবন্ধ পঠিত বলিয়া গৃহীত হইয়াছিল। প্রবন্ধটি পরে প্রবাসীপত্রে (১৩১৭ সনে) মুদ্রিত হইয়াছে। প্রবন্ধে আমি উত্তরবঙ্গের পীরস্থানগুলির তত্বাহসন্ধান করিতে সাহিত্যসেবী মহাশয়গণকে বিশেষভাবে অনুরোধ করিয়াছিলাম। পরে জানিতে পারিয়াছি উক্ত পরিষদের স্বযোগ্য সম্পাদক ত্রযুক্ত স্বরেন্দ্রচন্দ্র রায় চৌধুরী মহাশয় রঙ্গপুরের পীরস্থানগুলির বিবরণ-সংগ্রহে ব্ৰতী হইয়া পূৰ্ব্বেই একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করিয়াছেন। প্রবন্ধটি পড়িয়া দেখিবার সৌভাগ্য এপর্য্যন্ত আমার হয় নাই। যাহাই হউক পরিষদের একজন পরিচালকরূপে তিনি যে উক্ত কার্য্যে প্রবৃত্ত হইয়াছেন, বক্ষ্যমাণ প্রবন্ধে তজ্জন্য তাহাকে ধন্যবাদ না দিয়া কোন কথা আরম্ভ করিতে পারিতেছি না। দুঃখের বিষয় বঙ্গীয় মুসলমানসমাজ কথিত পীরকাহিনী উদ্ধারে ততটা মনোযোগ প্রদান করিতেছেন না । কেহ কেহ এসম্বন্ধে ভিন্ন মতও পোষণ করেন। যাহাদের অক্লান্ত চেষ্টা ও অমানুষিক ত্যাগস্বীকার-হেতু বঙ্গীয় অধিকাংশ মুসলমানের পূর্বপুরুষ ইসলামের আশ্রয়ে দণ্ডায়মান হইতে সক্ষম হইয়াছিলেন, খুব সম্ভব যাহাদের আগমন ন হইলে ভারতের এই পূৰ্ব্বোত্তর প্রান্তে মুসলমানের সংখ্যাধিক ঘটিত না, তাহদের জীবনচরিত আলোচনা বরং একটি সাম্প্রদায়িক কার্য বলিয়াই বিবেচিত হওয়া উচিত। কেবল ঐতিহাসিক তত্ত্ব হসন্ধান বলিয়া কোন কথা নহে, ইসলামের ভঙ্গি যোগ কি পরিমাণে পরিস্ফুট ও উজ্জল এই সমস্ত পীর বা সাধুচরিত তাহার প্রত্যক্ষ প্রমাণ। সংসঙ্গ ও সাধুচরিত আলোচনায় মাহুষ যতটা উপকৃত হইতে পাবে, শত বক্তৃতাতেও তাহ সম্ভবে না। সত্য বটে ইসলামের শিক্ষার বহির্ভূত আচরণ পীরগণের অনেকের জীবনচরিত ও সমাধিস্থানে প্রবিষ্ট ইয় রহিয়াছে ; কিন্তু ভজন্ত পীরগণ অশ্রদ্ধার পাত্র হইতে পারেন না। যিশুখ্ৰীষ্ট • বঙ্গীয় সাহিত্য-সম্মিলনের ৭ম অধিবেশনে পঠিত । & উত্তরবঙ্গের পীর-কাহিনী ঈশ) কোরানসরিফে একজন পয়গম্বর বলিল शैक्लउ ठ्हेब्राছেন, খ্ৰীষ্টানগণ তাহাকে যেভাবে পরিচিত করিয়া থাকেন, কোরানসরিকে তিনি সেভাবে বর্ণিত হন নাই। খ্ৰীষ্টানগণের বর্ণনা মনঃপূত নহে বলিয়া কি মুসলমানগণ খৃষ্টকে অগ্রাহ করিতে পারেন ? ঈশ্বরপরায়ণ সাধু হিন্দু মুসলমান যে-কোন বংশে জন্মগ্রহণ করুন না কেন তিনি জগতের মাননীয় ব্যক্তি এবং জনসমাজের কর্ণধারস্বরূপ। ॐांशzन्नद्र বাস্তব ও পুতচরিত্র অনুশীলনে চিন্তাশক্তি নিয়মিত হয় এবং অধ্যাত্মবিজ্ঞানে সাহিত্য সম্পদশালী হইয় উঠে। শিষ্যগণ অতিরিক্ত রং ফলাইতে গিয়া অনেক সময় তাহদের স্বাভাবিক চিত্র আচ্ছাদিত করিয়া ফেলেন, এজন্য তাহদের বর্ণিত বিবরণের প্রতি নির্ভর সর্বত্র নিরাপদ মনে করা যাইতে পারে না। যিনি বাহাই বলুন, ধৰ্ম্মের छौवरुभूठिं মহাজনগণ যে যুগে যুগে জনসমাজের শ্রদ্ধালাভ করিয়া আসিতেছেন তাহাই তাহাদের পরিচয়ের পক্ষে যথেষ্ট। মিথ্যা সত্যের ভীত্তি. হইতে পারে না, ধৰ্ম্মরাজ্যে মিথ্যার স্থায়িত্ব সম্ভবে না। পূৰ্ব্বপ্রকাশিত প্রবন্ধে সত্যপীর গাজী ও একদিল সাহের সংক্ষিপ্ত পরিচয় লিপিবদ্ধ করা গিয়াছে। বিস্তারিত ও প্রামাণিক পীরকাহিনী সঙ্কলনের প্রয়াসপথে বিস্তর বাধাবিঘ্ন বিদ্যমান রহিয়াছে। সত্যপীরের পুথিতে “যেই সত্যনারায়ণ সেই সত্যপীর’ দৃষ্ট হয়। পাঁচালীতে “সত্যপীর নামে পূজা করিবে যবনে" লিখিত আছে। এতদ্বারা সত্যপীর ও সত্যনারায়ণ অভিন্ন ব্যক্তি মনে করা যাইতে পারে। রাজসাহীর অন্তর্গত পোরসার জমিদার মহাশয়দের বদনগাছির কাছারীতে রক্ষিত চিন্তার স্থানবিশেষে ‘মৈদলন বাজার বাড়ী সত্যনারায়ণের জমি" লিখিত থাকায় ડે অনুমান বিশ্বাসে পরিণত হইতেছে। গৌড়ের ইতিহাসে প্রকাশ, "কথিত আছে গৌড়েশ্বর গণেশ বা কংসের চেষ্টায় সত্যপীর হিন্দুমুসলমান উভয় সমাজে মান্তাম্পদ হইয়াছেন।” প্রকৃত হইলে সত্যপীর রাজা গণেশের সময়ে অথবা তাহার পূৰ্ব্বে বিদ্যমান ছিলেন। - একদিল সাহের সময় ১৪শ শতাব্দী অতুমিস্ত হইতে পারে। তাহার শিক্ষাগুরু মৌলানা আতা ১৪শ শতাব্দীতে দিনাজপুরের নিকট দেবকোটে অবস্থান করিতেন । তাহার