পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৪১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- ヘヘe、ヘヘヘ বিশেষ দৃষ্টি রাখিয়া চলা হয়। পুরুষশিক্ষক থাকেন বলিয়৷ পড়িবার সময় বালিকাদিগকে অবগুণ্ঠনের অন্তরালে থাকিতে হয়। বিদ্যালয়ে ধৰ্ম্মশিক্ষা সম্বন্ধে খুব কড়াকড়ি আছে। ছা দিগকে মুসলমান ধৰ্ম্মমত-অনুসারে প্রত্যহ পাচবার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রক্ষালণ ও নমাজ করিতে হয়। উপাসনা-গৃহে মক্কার দিকে মুখ করিয়া বসিবার জন্য বাকাভাবে সারি সারি কম্বল পাত থাকে । কোরানগুলি কারুকার্য্য-কর কালে কাপড়ে ঢাকা থাকে, পাশেই নানারূপ চিত্ৰখচিত কোরানাধারগুলি থাকে। এই প্রায় দেড়শত ছাত্রী প্রত্যহ ভোর হইবার পূৰ্ব্বে শয্যাত্যাগ করিয়া ও পরে আরও চারিবার নমাজের পূর্ববর্তী অঙ্গপ্রক্ষালণাদি করে কিনা তাহার পরিদর্শন এক বিরাট ব্যাপার , তাহার জন্য একজন রমণী বিশেষ করিয়া নিযুক্ত আছেন। এই দীর্ঘ ধৰ্ম্মাহুষ্ঠানের জন্য স্বশৃঙ্খলার সহিত কাৰ্য্যপরিচালন কিছু শক্ত হইয়৷ উঠিয়াছে। আজকালকার মানুষের জীবন -জটিল কৰ্ম্মজালে জড়িত, সময়ের একান্তই অভাব, কাজেই প্রত্যহ পাচবার আচমন ও পাচবার নমাজের ব্যাপারটি তাহদের নিকট গুরুতর সমস্যা হইয় দাড়াইয়াছে। বিদ্যালয়ের যে ছাত্রীরা মুসলমান নয় তাহাদিগকে এই ধৰ্ম্মানুষ্ঠানে যোগ দিতে ও ধৰ্ম্মশিক্ষা লাভ করিতে হয় না। কেবল বিদ্যার্জন ভিন্ন অন্যান্য কাৰ্য্য শিক্ষা দিবার ব্যবস্থাও গবর্ণমেণ্ট করিয়াছেন। এই শিক্ষালয় স্ত্রীলোকদিগকে সামাজিক কৰ্ত্তব্যসাধনে ও আপন আপন জীবিকাঅর্জনে পটু করিবার জন্য স্থাপিত ; ইহা একজন বেলজিয়ান মহিলা কর্তৃক পরিচালিত। এ দেশে এইরূপ শিক্ষার এত বেশী অাদর যে বিদ্যালয়টি অতি অল্পদিনমাত্র স্থাপিত হওয়া সত্বে ও প্রায় ছয়শত ছাত্রী পাইয়াছে, স্থানাভাববশতঃ আরও অনেকে অসিতে পারিতেছে না। এখানে তিন বৎসর শিক্ষার পর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইলে ডিপ্লোমা দেওয়া হয়। শিক্ষা সমাধা করিবার জন্য ইহার পর আর এক বৎসর এইরূপ কোনও বিদ্যালয়ে শিক্ষাদান করিতে श्न ! সেদিন পর্য্যন্ত গভর্ণমেণ্ট স্কুলের কাজ প্রকৃত পক্ষে তুরস্কের বাহিরের লোকের সাহায্যেই হইয়াছে বলিতে হইবে। কিন্তু অত্যন্ত স্বশ্বের বিষয় যে আজকাল তুরস্ক প্রাণী—মানি ১৩২২ গভর্ণমেণ্ট স্বদেশীয় মহিলাদিগের দ্বারা সেই কাৰ্য্য করাই বার জন্য র্তাহাদিগকে গড়িয়া তুলিতে চেষ্টা করিতেছেন। নিয়মতষশাসনপ্রণালী স্থাপনের অব্যবহিত পরেই কয়েকজন অমুসলমান তুর্কিমহিলাকে ইয়ুরোপে শিক্ষার জন্য পাঠান হইয়াছিল। তাহদের মধ্যে কেহ কেহ দেশে ফিরিয়া সেখানকার বিদ্যালয়সমূহে কাজ করিতেছেন। ইস্তাস্থলে বালিকাদিগের জন্য যে আমেরিকান কলেজ আছে, সেই কলেজে পাঠাস্তে কয়েক বৎসর দেশের বিদ্যালয়ে কাজ করিয়া দিবার সৰ্বে গভর্ণমেণ্ট আট জন বালিকাকে পড়াইতেছেন। শিখিবার জন্য সম্প্রতি কয়েকজন মুসলমানরমণীকে স্বইজারল্যাণ্ডে প্রেরণ করা হইয়াছে। ইহা দ্বারা বেশ বোঝা যাইতেছে যে, তুরস্ক আজকাল নিজকাৰ্য্য নিজহস্তেই সমাধা করিতে চেষ্টা করিতেছেন, পূৰ্ব্বের ন্যায় আর সম্পূর্ণরূপে পরমুখাপেক্ষী হইয় আপনার প্রকৃত উন্নতির পথে অন্তরায় হইতেছেন না ।” অতি অল্পদিন হইল ইস্তাম্বুলের রাজকীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্ত্রীলোকদিগকে তথায় প্রবেশের অধিকার দিয়াছেন। ইহা হইতে বুঝিতে পারা যায় যে স্ত্রীশিক্ষা ও স্ত্রীস্বাধীনতার বিরোধী কুসংস্কার-সকল অল্পে অল্পে ভাঙ্গিয়া যাইতেছে। ইহার মধ্যেই দুইশত ছাত্রী ইহাতে যোগ দিয়াছেন। তাহার শিক্ষাপ্রণালী, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান, পারিবারিক অর্থনীতি, ইতিহাসবিজ্ঞান ও স্ত্রীজাতির অধিকার প্রভৃতি বিষয়ের অধ্যাপনায় উপস্থিত থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাড়ী প্রত্যহ সন্ধ্যায় এই কার্য্যের জন্য ছাড়িয়া দেওয়া হয়, কারণ গৃহলক্ষ্মীরা গৃহকার্ধোর অনুরোধে সকালে পড়িতে আসিতে পারেন না। তাহদের ক্লাশ যে পুরুষদিগের ক্লাশ হইতে ভিন্ন সে কথা ত বলাই বাহুল্য । ইহাদিগকে চিকিৎসা, বিদ্যালয়ে যাইতে দিবার প্রতিশ্রুতিও করা হইয়াছে। তুর্কিরমণীরা এতদিন অর্থ ও সম্পত্তির,উত্তরাধিকারিণী হইলেও তাহাদের সেদিকে প্রকৃত স্বাধীনতা ছিল না। তাহাদের সম্পত্তি তাহাদের পুরুষ আত্মীয়দিগের হাতেই থাকিত। এতদিন অজ্ঞানতা ও অশিক্ষার ফলে তাহার। আপনার সম্পত্তি পরিদর্শন করিতে কিম্ব স্বার্থপর পিতা ভ্রাতা ও স্বামীদিগের ষড়যন্ত্রের কবল হইতে রক্ষা করিতে এতদ্ব্যতীত শিক্ষণপ্রণালী ও চিত্রবিদ্যা . [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড | A. | | ৬ষ্ঠ সংখ্যা ] পারিতেন না। স্বেপোজিত অর্থের কথা অবশ্য স্বতন্ত্র । কারণ সেটা প্রথম হইতেই রমণীর নিজস্ব। নিম্ন শ্রেণীর মুসলমানরমণীরা অনেকদিন হইতেই উপার্জন ও তাহ উপভোগ করিয়া আসিতেছে। ধাত্রীবিদ্যা তাহাদের প্রাচীন ব্যবসায়, আবার রেশম কাপেট ডুমুর প্রভৃতির কারখানায় অতি অল্পবেতনের অনেক কাজও তাহারা করিয়া থাকে। গ্রাম কৃষকবধূর কৃষিকার্ঘ্যে পুরুষদিগের যে সহায়তা করে সেটাও উপেক্ষার বিষয় নয়। তুরস্কে আজকাল ইহা অপেক্ষাও লক্ষ্য করিবার উপযুক্ত ঘটনা ঘটিতেছে। স্মীণীতে একদল রমণী সেখানকার উৎপন্ন দ্রব্যাদি বিক্রয়ের জন্য একটি দোকান ও মুসলমানবালিকাদিগের জন্য একটি দর্জির 'দোকান খুলিবার চেষ্ট৷ করিতেছেন। বিদ্যালয়ের কার্য্য হইতে আরম্ভ করিয়া এ5-সকল কৰ্ম্ম পৰ্য্যন্ত সব বিষয়েই তুর্কি রমণীর আগ্রহের সহিত যোগ দিতেছেন। কয়েকমাসের মধ্যে আর-একটি খুব বড় পরিবর্তন হইয়াছে, ‘সুলতানী বালিকাবিদ্যালয়ে এক মুসলমানশিক্ষয়িত্রী ব্যায়াম শিক্ষা দিতেছেন। সব দেশের মত তুরস্কের শিক্ষিত মহিলারাও শিক্ষাদানের কার্য্যটাই সৰ্ব্বপ্রথমে আরম্ভ করিয়াছেন। কাৰ্য্যক্ষেত্রের অন্যান্যবিভাগে প্রবেশলাভও যে স্থদুর ভবিষ্যতের গর্তে নিহিত তাহ বোধ হয় না। ইতিমধ্যেই কয়েকটি মহিলা গদ্য- ও পদ্যলেখিকারূপে স্বপরিচিত হইয়া উঠিয়াছেন। আদালতে সাক্ষী, বাদী ও প্রতিবাদীরূপে স্ত্রীলোকের উপস্থিতি দেখিয়া বোধ হয় তাহার কালে উকীলও হইতে পারেন। চিকিৎসা ও শুশ্রুষাক্ষেত্রে প্রবেশের জন্য ইহাদের খুব আগ্রহ দেখিতে পাওয়া যায়, ইহার প্রয়োজনও খুবই বেশী। তুরস্করমণী অন্তঃপুর-কারাগারের বন্দিনী, সেইজন্য অন্তিমকালেও অনেকসময় তাহাদের চিকিৎসা হয় না ; কেবলমাত্র স্ত্রীচিকিৎসকের অভাবে অনেক জীবন অকালেই ঝরিয়া পড়িয়াছে। ইহাদের অতিরিক্ত পদার বিষয়ে ইস্তাম্বুলের এক বিখ্যাত চিকিৎসক একটি গল্প বলিয়াছেন। এক মুসলমানরমণীকে দেখিতে গিয়া ডাক্তার পীড়িতার স্বামীর সঙ্গে অন্তঃপুরে চলিলেন ; সেখানে তাহাকে বসিবার ঘরে বসাইয়া বলা হইল-পাশের ঘরে রোগী আছেন, জিজ্ঞাসাবাদ > - মুসলমানদেশের নারীসমাজ ^へヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘ公ペペ করিবার জন্য মাঝের দরজাটি খুলিয়া দিতেছি। ডাক্তার রোগনির্ণয় করিবার জন্য রোগীকে পরীক্ষা করিবার ও তাহার নাড়ী দেখিবার জন্য পীড়াপীড়ি করাতে স্বামী মহাশয় এক মুহূৰ্ত্ত একটু ভাবিয়া লইলেন, তখনই তাহার । মাথায় এক চমৎকার উপায় আসিল । তিনি গম্ভীর ভাবে বলিলেন যে, তাহার স্ত্রী দরজার আড়ালে হাতে একটা তার বাধিয়া দাড়াইবেন এবং ডাক্তার সেই তারের সাহায্যে অন্যঘর হইতে র্তাহার নাড়ীর স্পন্দন। অনুভব করিবেন। আজকাল রাজধানীর অনেক লোকে পুরুষচিকিৎসক দ্বার অন্তঃপুরিকাদের চিকিৎসা করাইয়া থাকেন বটে, কিন্তু অন্য জায়গার অবস্থা প্রায় এ গল্পেরই মত। আজকাল তুরস্কের দৃষ্টি এদিকে বেশ পড়িয়াছে, দৈনিক ও অন্যান্য পত্রে ইহার খুব আলোচনা চলিতেছে। অদ্যাবধি মহিলাদিগকে নিয়মিত ভাবে কোনরূপ শিক্ষা দেওয়া হয় নাই বটে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিশ্রুতি অনুসারে শীঘ্রই তাহার ব্যবস্থা হইবে। আজকাল দুই-একজন অমুসলমানমহিলা ‘লাইসেন্স লা লইয়াই চিকিৎসা করিয়া থাকেন। তুরস্ক-বলকান সমরের সময় শিক্ষিতা শুশ্ৰুষাকারিণীর একান্তই অভাব হইয়াছিল। প্রথমে এই কাৰ্য্যের সাহায্যের জন্য একজনও তুর্কিরমণীকে পাওয়া যায় নাই; কিন্তু এই অভাবপূরণের জন্য হাসপাতালে ক্লাশ খোলা মাত্র সবধৰ্ম্মাবলম্বী তুর্কি বালিকা ও বয়স্থ রমণীর উৎসাহের সহিত যোগ দিতে আরম্ভ করিলেন। তুরস্কের ইতিহাসে ইহা এক অভূতপূৰ্ব্ব ব্যাপার। ইহা সত্য বটে যে এই শুশ্ৰুষাকারিণীর কাৰ্য্যোপযোগী শিক্ষা লাভ করেন নাই, কিন্তু তাহাদের অনুরাগ ও একাগ্রতা দেখিলেই বোঝা যাইত ষে পথ খোলা পাইলে ইহার এই কার্য্যের মধ্যে মহা উৎসাহের বন্য। আনিয়া ফেলিবেন । zrāṇatā fants" (Princess Nimet) nằza মুসলমানরমণীদের যে লোহিত-চন্দ্রকলা-সমিতি (Red Crescent Society) of Rod To as পীড়িত ও আহতের সেবা করিয়াছেন, সেই সমিতি স্ত্রীলোকদিগকে শুশ্ৰুষা শিক্ষা দিবার অভিপ্রায় করিয়াছেন। বন্ধানযুদ্ধ আরম্ভ হইবার পূৰ্ব্বে ইস্তাম্বুলের কাদির্গা হাসপাতালে এই সমিতি কর্তৃক একটি শিক্ষালয় প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল ; যুদ্ধের