পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌৰ চম্প্রদর্শন হবে। চোখের সামনে পূর্ণচন্ত্র দেখতে পাবে। ওপরে আকাশে পূর্ণচন্দ্র আর নীচে একটা গাছের তলায় ছুটি পরী। তুমি যা জানতে চাইবে, পরীরা তাই ব’লে দেবে। ভাল করে চন্দ্রদর্শন যে অভ্যেস করেছে, তার অজানা কিছু থাকে না । চন্দ্রদর্শন করি আর না করি, তারানাথের কাছে প্রায়ই যাইতাম। লোকটা এমন সব অস্তুত কথা বলে, যা পথেঘাটে বড় একটা শোনা ত স্বায়ই না, দৈনন্দিন খাটিয়া খাওয়ার জীবনের সঙ্গে তার কোন সম্পর্কও নাই। পৃথিবীতে যে আবার সে-সব ব্যাপার ঘটে, তাহা ত কোন füन छांनी हिल नौ । একদিন বর্ষার বিকাল বেলা তারানাথের ওখানে গিয়াছি। তারানাখ পুরাতন একখানা তুলেটি কাগজের পুথির পাতা উন্টাইতেছে, আমাকে দেখিয়া বলিল—চল বেলেঘাটাতে এক জন বড় সাধু এসেছেন। দেখা করে আসি। খুব ভাল তান্ত্ৰিক শুনেছি। তারানাথের স্বভাবই ভাল সাধু সন্ন্যাসীর সন্ধান করিয়া বেড়ানো—বিশেষ করিয়া সে সাধু যদি আবার তান্ত্রিক হয়, তবে তারানাথ সৰ্ব্ব কৰ্ম্ম ফেলিয়া তাহার পিছনে দিনরাত লাগিয়া থাকিবে । গেলাম বেলেঘাটা। সাধুর ক্ষমতার মধ্যে দেখিলাম তিনি আমাকে যে কোন একটা গন্ধের নাম করিতে বলিলেন, আমি বেলফুলের নাম করিতেই তিনি বলিলেন— পকেটে রুমাল আছে ? বার করে দেখ। রুমাল বার করিয়া দেখি তাহাতে বেলফুলের গন্ধ ভুর ভুর করিতেছে। আমি সাধুর নিকট হইতে পাচ-ছয় হাত দূরে বসিয়াছি এবং আমার পকেটে কেহ হাত দেয় নাই, ঘরে আমি, তারানাথ ও সাধু ছাড়া অন্ত কেহই নাই, ক্ষমালখানাতে আমার নামও লেখা—সুতরাং হাত-সাফাইয়ের সম্ভাবনা আীে নাই । কিছু যে আশ্চৰ্য্য ন হইলাম এমন নয়, কিন্তু যদি ধরিয়াই লই সাধুবাবাজী তান্ত্রিক শক্তির সাহায্যেই জাবার কমালে গন্ধের স্বটি করিয়াছেন, তবুও এত কষ্ট করিয়া তন্ত্রসাধনার ফল যদি দুই পয়সার আতর তৈরি করায় দাড়ায়, সে সাধনার আমি কোন মূল্য দিই না। আতর ত বাজারেও কিনিতে পাওয়া যায়। Be='R তারানাথ তান্ত্রিকের গল্প wevel ফিরিবার সময় তারানাখ বলিল—নাঃ লোকটা নিম্ন শ্রেণীর তন্ত্রসাধন করেছে, তারই ফলে দু-একটা সামান্ত শক্তি পেয়েছে। তাই বা পায় কি করিয়া ? বৈজ্ঞানিক উপায়ে কৃত্রিম আতর প্রস্তুত করিতেও ত অনেক তোড়জোড়ের দরকার হয়, মুহূর্তের মধ্যে এক জন লোক দূর হইতে আমার রুমালে যে বেলফুলের গন্ধ চালনা করিল—তাহার পিছনেও ত একটা প্রকাও বৈজ্ঞানিক অসম্ভাব্যতা রহিয়াছে, contact at a distance-এর গোটা সমস্যাটাই ওর মধ্যে জড়ানো। যদি ধরি হিপনটিজম, সাধুর ইচ্ছাশক্তি আমার উপর তত ক্ষণ কাৰ্য্যকরী হইতে পারে, যত ক্ষণ আমি তাহার নিকট আছি। তাহার সান্নিধ্য হইতে দুরেও আমার উপর যে হিপনটিজমের প্রভাব অক্ষুন্ন রহিস্থাছে সে প্রভাবের মূলে কি আছে, সেও ত আর এক গুরুতর সমস্ত হইয়া দাড়ায়। তারানাথের সঙ্গে তাহার বাড়ীতে গিয়া বসিলাম । তারানাথ বলিল—তুমি এই দেখেই দেখছি আশ্চর্ঘ্য হয়ে পড়লে, তবুও ত সত্যিকার তান্ত্রিক দেখ নি। নিম্ন শ্রেণীর তন্ত্র এক ধরণের ধান্ধ, যাকে তোমরা বলে ব্ল্যাক ম্যাজিক । এক সময়ে আমিও ও জিনিষের চর্চ যে না করেছি তা নয়। ও আতরের গন্ধ আর এমন একটা কি, এমন সব ভয়ানক ভয়ানক তান্ত্রিক দেখেছি শুনলে পরে বিশ্বাস করবে না। এক জনকে জানতুম সে বিষ খেয়ে হজম করত । কিছুদিন আগে কলকাতায় তোমরাও এধরণের লোক দেখেছ । সালফিউরিক এসিড, নাইটিক এসিড খেয়েও বেঁচে গেল, জিভে একটু দাগও লাগল না। এসব নিম্ন ধরণের তন্ত্রচর্চার শক্তি, ব্ল্যাক, ম্যাজিক ছাড়া কিছু নয়। এর চেয়েও অদ্ভুত শক্তির তান্ত্রিক দেখেছি। কি হ’ল জান ? ছেলেবেলায় আমাদের দেশ বাঁকুড়াতে এক নাম-করা সাধু ছিলেন। আমার এক খুড়ীমা র্তার কাছে দীক্ষা নিয়েছিলেন, আমাদের ছেলেবেলায় আমাদের বাড়ী প্রায়ই আসতেন। তিনি আমাদের খুব ভালবাসতেন, আমাদের বাড়ী এলেই আমাদের নিয়ে গল্প করতে বসতেন, আর আমাদের প্রায়ই বলতেন—দুই চোখের । মাঝখানে তুরুতে একটা জ্যোতি আছে, ভাল করে চেয়ে দেখিস, দেখতে পাবি। খুব একমনে চেয়ে দেখিল। মাস