পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$46 প্রবাসী $NరిgNరీ কাক নিৰ্ব্বাক বিস্ময়ে একটু তাকাইয়া রহিলেন, তাহার পর উৎসাহভঙ্গ স্বরে ডাক দিলেন—“মমুজ ?” মমুজ যেন আচমকা ঘুম হইতে জাগিয়া উঠিল । বায়তবলাখানা আলগা হাত হইতে খসিয়া বিশৃঙ্খলভাবে নীচে গড়াইয়া পড়িল ; বাদক কোন উত্তর না দিয়া ফ্যাল ফ্যাল করিয়া তাকাইয়া রহিল। কাকা বলিলেন—“এখন তো বায়াতবলাই বাজাচ্ছিলে স্পষ্টই দেখলাম, একটু আগের সম্বন্ধে আমার একটু খটকা রয়েছে, ঠিক বলবে তো?” মমুজ চক্ষু নামাইল । “আমি যখন ভাবছিলাম--তুমি বেদাস্তের বিচারে বিভোর হয়ে মাথা দোলাচ্ছ আর আমার সঙ্গে মেটিরিয়ালিষ্টদের ওপর চটে চৌকিতে মাঝে মাঝে ঘা দিচ্ছ, তখন তুমি আসলে কোন একটা গানে তাল দিচ্ছিলে কিনা বলতে বাপু ? অারে ছ্যাঃ, এই তোমার তপস্ত ...আমি কানের কাছে অমন একটা ইনটারেটিং জিনিষ নিয়ে ব'কে বকে বেদম হচ্ছি, গ্রাহই নেই, আর পার্কের একটেরেয় কে গানকে ভেংচি কাটছে তাই শুনে শুনে তুমি-ছিঃ—ছি:.*?” ফিরিয়া যাইতে যাইতে মনে হইল সব সন্দেহ মিটাহয়৷ লওয়াই ভাল। আবার ঘুরিলেন। ওভাবে কথা বাহির করা যাইবে না, স্বর কিঞ্চিৎ বদলাইয়া বলিলেন—“অবশু তোমার অতটা অন্যমনস্ক হওয়া ভাল হয় নি ; কিন্তু ছেলেটি গাইছে বেশ, তোমায় ততটা দোষও দেওয়া যায় না। তবে কথা হচ্ছে যতটা পারা যায় মনকে টেনে রাখাই ভাল । চেন নাকি ছেলেটিকে ?—এই পাড়াতেই থাকে ?” কাকার এমন দরদ-মাধান কথায় মমুজের মনের কপাট যেন হঠাৎ খুলিয়া গেল। একটু সলজ, অথচ উৎসাহদীপ্ত মুখে বলিল—“ছেলে নয় তো কাক, আমাদের প্রফেসার কাৰ্ত্তিকবাবুর মেয়ে আরতি সান্নাল, এবার মিউজিক কম্পিটিশনে সেকেও প্রাইজ পেয়েছেন । ওঁর বাবা নিজেও এক জন মন্তবড় গুণী লোক।” কাকা মনে মনে বলিলেন—“বটে—বটে। অথচ ছেলেটা এদিকে ‘ই’ ‘না’র বেশী জবাব দেয় না কথন । একেবারে আত্মহারা হয়ে গেল যে ” মঠুজকে বলিলেন--- “হ্যা, তাই ভাবছিলাম—ছেলের গলা এত মিষ্টি হয় কোখেকে ! তা কদিন ওঁর এসেছেন এ-পাড়ায় ?—ছিলেন না তো.--* “ঠিক একুশ দিন হ’ল আজ নিয়ে ; ফাষ্ট জুলাই উঠে এসেছেন কিনা ৷” কাকার মনে হইল প্রায় ঐ আন্দাজ সময় হইতেই ভ্রাতুপুত্রও পাঠের সময় মাথা দুলাইতে আরম্ভ করিয়াছে, গানের তালে । বলিলেন—“বেশ, তেমন আলাপ-পরিচয় থাকলে ওঁদের সঙ্গে, একদিন নেমস্তুল্ল ক'রে এলে হ’ত মেয়েটিকে । দেখছি, বেশ শোনবার মত গান ৷” • মমুজ একেবারে বর্ভাইয়া গেল। বলিল—“খুব জানাশোনা আছে ; প্রফেসার সান্ন্যাল আমায় খুব স্নেহ করেন কি না । তা ভিন্ন ওঁর ছেলে, আরতি দেবীর ভাই কিরণ সাম্যাল আমার সঙ্গে এক ক্লাসেই পড়ে,—আমার ক্লাস-ফ্রেও। আর মিস সামাল যে শুধু গানই গাইতে পারেন তা নয়, ব্যাঞ্জোতেও এমন চমৎকার হাত !-- ** কাক মনে মনে একটি “স্থ” বলিয়া প্রকাশ্যে বলিলেন“ছোট মেয়ে, যদি একলা না আসতে চায় তো তোমার ক্লাসফ্রেও কিরণকেও সঙ্গে সঙ্গে ব’লে এলে হয় ।” মতুজ বোধ হয় আহলাদের চোটে স্থানকালপাত্র ভুলিয়া গেল। বলিল—“ন, আরতি সান্ন্যাল তত ছেলেমানুষ নয় তো ; বয়েস পনর-ষো- - মানে সেকেণ্ড ক্লাসে পড়েন । ত৷ কিরণকে ব’ললে আরও ভালই হয় । বলেন তো পরশুই না হয় বলে আসি—রবিবার আছে---” সব বোঝা গেল, বয়সটি পৰ্য্যস্ত। কাক যাইতে যাহতে বলিলেন—“ষ্ঠাড়াও দেখি, পরশু আমায় বোধ হয় একবার হুগলী যেতে হবে ...তুমি কিন্তু বাপু পড়াশুনার দিকেও একটু মন রেখে যেও, বইগুলোকে তবলা ক'রে করে উচ্ছন্ন দিলে আর কি হবে ? (o) অপর কেহ হইলে তপস্যার নমুনা দেখিয়াই হাল ছাড়িয়া দিয়া বসিত , মচুজের কাকা অন্য ধাতের মানুষ । রবিবার দিন নিমন্ত্রণের কথা না তুলিয়া বলিলেন— “তোমার দেখছি রাত্তিরটায় গানবাজনার অত্যাচারে খুবই ব্যাঘাত হয়। পাড়াটাও হয়ে উঠেছে বডড খারাপ ; দেখছি কিনা—সকালবেলা সতের নম্বর বাড়িতে কৰ্ত্তার স-রে-গ-মা. দশটা পৰ্য্যস্ত সে যেই আঙুল ঘুরিয়ে স্বর ভজিতে ভাজতে