পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२२७ ভারতবর্ষের মধ্যে বাংল। দেশে শতকরা যত লোক গ্রামে বাস করে, অন্য কোন প্রদেশে শতকরা.তত লোক গ্রামে বাস করে না । মোট গ্রাম্য জনসংখ্যাও বঙ্গে সৰ্ব্বাধিক,–৪,৩৫,৪৯,২৩৬ । তাহার নীচেই আগ্রাঅযোধ্যায় গ্রাম্য লোক বেশী,—৪,০৫,৭০,৩২২ । কৃষিকমিশন স্বফলপ্রদ হইলে বাংলা দেশের উপকার অন্য কোন অঞ্চল অপেক্ষা কম হইবে না। অতএব এই স্বযোগে বংলার কি দরকার তাহা কমিশনকে প্রমাণসহ জানাইবার স্ববন্দোবস্ত দেশনায়কদের অবিলম্বে করা উচিত । রেলওয়ে কৰ্ম্মচারীদের প্রতি অমনোযোগ । পণ্ডিত চন্দ্রিক প্রসাদ তেওয়ারী এপ্রিল মাসের মডার্ণ রিভিউ কাগজে রেলওয়ে বোড কর্তৃক প্রকাশিড সৰ্ব্বাধুনিক যে সংখ্যা উদ্ধত করিয়াছেন, তাহা হইতে দেখা যায় যে, ভারতে রেলওয়ে কৰ্ম্মীর মোট সংখ্যা ৭,২৭,০৯৩ । সেন্সস রিপোর্ট হইতে জানা যায় যে, সৈন্যদল ও পুলিস্ বাদ দিয়া সরকারী চাকরী করে ব্রিটিশ ভারতে ১০,০৮,০৬১ জন। নানারকম সরকারী চাকরীতে দেশী লোকদের দাবী দাওয়া অভাব অভিযোগের কথা খবরের কাগজে যত লেখা হয়, রেলওয়ের দেশী চাকর্যেদের দাবী দাওয়া অভাব অভিযোগ সম্বন্ধে তাহার দশ ভাগের এক ভাগও লেখা হয় না । পুলিশের চাকী করে ৬,৭৯,৭৭১ জন । ইহাদিগকে ধরিলেও সরকারী চাকর্যেদের সংখ্যা সতের লাখ হয় না। এই ১৭ লাখের জন্য যত লেখা হয়, রেলের সাত লাখের জন্য অন্ততঃ তাহার সিকিও ত লেখা উচিত । কিন্তু তাহ করা হয় না। রেলে বেশী বেণী মাহিনার চাকরী অনেক আছে । অন্য সরকারী বড় বড় চাকরীতে দেশী লোক যতটুকু চুকিতে পারিয়াছে, রেলের বড় চাকরীতে ততটুকুও পারে নাই। অতএব এসব দিকে খুব দৃষ্টি রাখা দরকার। রেলওয়ে কৰ্ম্মচারীরা যদি সাংবাদিকদিগকে ঠিক্ ঠক্‌ খবর ও তথ্য জানান, তাহ হইলে ক্রমশঃ তাহদের বিষয়ে আরও অনেক বেশী লেখা খবরের কাগজে বাহির হইতে পারে । প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড ভারতীয় রাজনৈতিক নানা দল। বোম্বাইয়ে রাজনৈতিক নেতাদের একটি মন্ত্রণাসভা ডাকিয়া, স্বরাজ্যদল ও পুরা অসহযোগী গান্ধীর দল ছাড়া, আর সব রাজনৈতিকদলকে সম্মিলিত করিবার যে-চেষ্টা হইয়াছে, কাৰ্য্যতঃ তাহ সফল হইলে ভাল । ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মধ্যে থাকিয়া আভ্যন্তরিক বিষয়ে জাতীয় আত্মকর্তৃত্ব পাইলে আপাততঃ গান্ধীজির দল পৰ্য্যন্ত সন্তুষ্ট হন। এইরূপ ক্ষমতা পাইবার নিমিত্ত সকল দলকে লইয়া সম্মিলিত চেষ্টা হওয়া কি অসম্ভব ? নিজের দলের মত প্রচার করিয়া তাহ স্বপ্রতিষ্ঠিত করিতে হইলে অন্যান্য দলের কিছু সমালোচনা করা অপরিহার্য্য । কিন্তু দলাদলি এবং ব্যক্তিগত নিন্দ অপরিহার্য্য নহে । কলিকাতার উদারনৈতিকদের সভায় স্তার মোরোপন্ত জোশী সভাপতিরূপে যে বক্তৃতা করিয়াছিলেন, তাহার মধ্যে দলাদলির ভাব, পরনিন্দা ছিল না ; অথচ তিনি উদারনৈতিকদের মত বেশ ভাল করিয়া বুঝাইতে ও তাহার সপক্ষে স্বযুক্তি দেখাইতে সমর্থ হইয়াছিলেন । মহারাজা হোলকারের সিংহাসনত্যাগ ব্রিটিশ গবর্ণমেণ্টের সহিত হোলকার-বংশের যে সন্ধি আছে, তদনুসারে ভারত-সরকার ইন্দোরের মহারাজার ৰিচারের জন্য কমিশন বসাইতে পারেন কিনা, জানি না । কারণ আমরা ঐ-সব সন্ধি পড়ি নাই। কিন্তু ইহা ঠিক যে, ভারত-সরকার দেশী রাজাদের গতি-বিধির স্বাধীনতা, কৰ্ম্মচারী-নিয়োগের স্বাধীনতা এবং আরও অনেক বিষয়ে র্তাহাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বরাবর করিয়া আসিতেছেন। তাহাতে হোলকার বা অন্ত কোন রাজা সিংহাসনত্যাগান্ত গুরুতর প্রতিবাদ করেন নাই, মৃদুতর কোন প্রতিবাদ গোপনে করিয়াছিলেন কিনা বলিতে পারি না । সেইজন্য, এখন কমিশন বসাইলে হোলকারের সহিত সন্ধির সর্ত ভঙ্গ করা হইত বা তাহার অপমান হইত, মহারাজের সিংহাসনত্যাগ যুক্তিসঙ্গত হইলেও, উহাই যে তাহার রাজপদ ত্যাগের এক মাত্র বা প্রধান কারণ, লোকের এই বিশ্বাস জন্মিবে না।