পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] নাই—মুদ্রাহ্মুদ্র বিধি কি । তুমি অন্যায় কাৰ্য্য করিয়াছ । তুমি অপরাধ স্বীকার কর।” ইহাতে আনন্দ বলিলেন, “ভুলক্রমে আমি জিজ্ঞাসা করি নাই । ইহাতে আমার অপরাধ হইয়াছে আমি ইহা মনে করি না । তবে আপনাদিগকে শ্রদ্ধা করি, এইজন্য আপনাদিগের কথাতেই বলিতেছি আমার অপরাধ গুইয়াছে ” অপরাপর অভিযোগ এই – এক সময়ে আনন্দ বুদ্ধের জন্য বর্ষাকালের বস্ত্র সেলাই করিয়াছিলেন । কিন্তু সেলাই করিবার সময় কাপড়ের এক ধlর পায়ের নীচে রাখিয়া সেলাই করিতে হইয়াছিল । এই তাহার দ্বিতীয় অপরাধ । বুদ্ধের মৃত্যুর পরে স্ত্রীলোকদিগকে সর্বপ্রথমে বুদ্ধের দেহ দেখিতে দেওয়া হইয়াছিল । এই তৃতীয় অপরাধ । * এক সময়ে বুদ্ধ আনন্দকে বলিয়াছিলেন যে, সিদ্ধপুরুষগণ এবং তথাগত যদি ইচ্ছা করেন, তাহা হইলে এককল্প এই পৃথিবীতেই থাকিতে পারেন। এ সময়ে আনন্দ প্রার্থনা করেন নাই যে “ভগবান দেব-মানবের হিতাকাজক্ষায় এককল্প জীবন ধারণ করুন।” কিন্তু মৃত্যুর তিন মাস পূর্বে আনন্দ তিন বার তাহার নিকট ঐ প্রার্থনা করিয়াছিলেন । বুদ্ধ অবত এ প্রার্থনা পূর্ণ করেন নাই, প্রত্যুত বলিয়ছিলেন—“প্রথমে আমি যখন ঐ প্রকার বলিয়ছিলাম তখন যদি প্রার্থনা করিতে, তথাগত তোমার প্রার্থন পূর্ণ করিতেন।” এই ঘটনা উল্লেখ করিয়া ভিক্ষুগণ আনন্দকে বলিলেন—যথা সময়ে ঐ প্রকার প্রার্থনা কর। উচিত ছিল, তুমি তাহ কর নাই । ইহা আনন্দের চতুর্থ অপরাধ । আনন্দের অমুরোধে বুদ্ধদেব মাতৃজাতিকে প্রব্রজ্য অবলম্বন করিবার অনুমতি দিয়াছিলেন । ভিক্ষুগণের মতে আনন্দের পক্ষে এই প্রকার অতুরোধ করা অন্যায় ইষ্টয়াছিল । ইহা আনন্দের পঞ্চম অপরাধ । 始 এই সমুদয় ঘটনা এক একটি করিয়া উল্লেখ করিয়া ভিক্ষুগণ আনন্দকে বলিয়াছিলেন, “তুমি অপরাধ করিয়াছ, অপরাধ স্বীকার কর” । প্রত্যেক ঘটনার বিষয়েই আনন্দ এক একটি কারণ ভিক্ষু আনন্দ هو ج দেখাইয়া বলিয়াছিলেন——“আমি ইহাতে কোন অপরাধ দেখিতেছি না। তবে আপনাদিগকে শ্রদ্ধা করি, সেইজন্য আপনাদিগের কথাতে অপরাধ স্বীকার করিতেছি ।” আনন্দ ও মহাকশ্যপ গোতমের নির্বাণপ্রাপ্তির পরে মহাকশ্যপ ভিক্ষুসঙ্ঘের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন । র্তাহার অবশ্যই অনেক গুণ ছিল, গৌতম মিজে ও র্তাহার প্রশংসা করিতেন । কিন্তু তিনি আনন্দের সহিত যে প্রকার ব্যবহার করিতেন, তাহt প্রীতিকর নহে। নিম্নে তদ্বিষয়ক দুইটি ঘটনার উল্লেথ করা যাইতেছে । ( > ) এক সময়ে মহাকশ্বপ জেতবনে অবস্থিতি করিতেছিলেন। একদিন পূৰ্ব্বারে আনন্দ তাহার সমীপে উপস্থিত হইয়া বলিলেন, “ভদন্ত কশ্যপ ! আমুন, ভিক্ষুণীদিগের এক আশ্রমে গমন করা যাউক ।” কশ্যপ বলিলেন, “আৰুষ আনন্দ ! তুমিই যাও, তোমার বহু কাৰ্য্য, তোমার বহু করণীয়” । আনন্দ দ্বিতীয়বার অনুরোধ করিলেন, তাহাতেও কশ্বাপ ঐ উত্তরই দিলেন । তৃতীয়বার অনুরোধ করিবার পর কতাপ আর আপত্তি করিলেন না। কশ্যপ অগ্ৰে গমন করিতে লাগিলেন এবং আনন্দ তাহর পশ্চাতে অনুগমন করিলেন । ভিক্ষুণীদিগের আশ্রমে উপস্থিত হইয়। কস্তাপ তাহাদিগকে ধৰ্ম্মকথা শুনাইলেন এবং তাহার পরে উভয়েই প্রস্থান করিলেন । ‘খুল্লতিস্সা' নামিক একজন ভিক্ষুণী ইহাতে সন্তুষ্ট হইলেন না । তিনি কস্তাপ-বিষয়ে এই প্রকার সমালোচনা করিয়াছিলেন—“আৰ্য্য আনন্দ পণ্ডিত মুনি’ ; তাহার সম্মুখে আর্য্য কশ্যপ ধৰ্ম্মোপদেশ দেন ! সূচীবণিক সূচী বিক্রয় করেন স্থচীকারকে !” এই কথা কশ্যপের কর্ণগোচর হইল। তখন তিনি আনন্দকে ডাকিয়া বলিলেন— “আৰুষ আনন্দ ! আমি স্বচীবণিক, তুমি স্বচৗকার ; না, তুমি স্বচীবণিক, আমি স্থচীকার ?”