পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] বিবিধ প্রসঙ্গ—হিন্দু মহাসভা ও রাষ্ট্ৰীয় প্রতিনিধি নির্বাচন \లిసిసి কোন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হইলে তাহা সহ করা ব্যতীত অপর উপায় নাই । কিন্তু আমাদের উচিত জাতিধৰ্ম্মনিৰ্ব্বিশেষে বাল্যকাল হইতে একত্র বাস করিয়া পরস্পরের সহিত সখ্যে ও সৌহার্দ্যে জীবন যাপন করিতে শিখা ৷ সঙ্কীর্ণ সাম্প্রদায়িকতা ও উন্নত জাতীয়তা কখন একত্র থাকিতে পারে না । মুসলমান ছাত্রদিগের যদি প্রয়োজন হয়, তাহা হইলে তাহাদিগকে উপযুক্ত বৃত্তি দানের ব্যবস্থা করা উচিত । বিনা বেতনে পাঠের ব্যবস্থাও করা প্রয়োজন । কিন্তু একটি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়িয়া তুলিয়া অর্থ নষ্ট করা কদাপি বাঞ্ছনীয় নহে। মুসলমানগণ অনায়াসে সকল কলেজে উপযুক্ততা দেখাইয়া প্রবেশ করিতে পারেন । মুসলমান পার্টি চান যে “মুসলমান ছাত্রগণ মুসলমান সমাজের জনসংখ্যার অনুপাতে শিক্ষার সুবিধা লাভ করেন।” উত্তম কথা, কিন্তু সুবিধার কি তাহীদের কোন অভাব আছে ? এবং অনেকগুলি ( অৰ্দ্ধেকেরও অধিক ) স্থান স্কুল কলেজে মুসলমানদিগের জন্য খালি রাখিলেই কি সেই সকল স্থান মুসলমান ছাত্রে ভৰ্ত্তি হইয়া উঠিবে? সম্ভবত স্থানগুলির অধিকাংশই খালি থাকিবে । কারণ মুসলমানের যে নিরক্ষরতা, তাহ৷ স্কুল কলেজের অভাবে নহে— অর্থনৈতিক, মানসিক ও জীবনের আদশের দারিদ্র্যের জন্যই । • আমরা জ্ঞাত হইলাম, যে, মুসলমানগণের ইচ্ছা যে গভর্ণমেণ্টের যে পরিমাণ অর্থ শিক্ষার জন্য ব্যয়িত হয়, তাহার অন্তত শতকরা ৫৪ টাকা যেন মুসলমানের শিক্ষার জন্য ব্যয় করা হয়। ইহা প্রথমতঃ হইতে পারে না এই জন্য যে এই অর্থ প্রাথমিক হইতে আরম্ভ করিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা অবধি নানা প্রকার শিক্ষার জন্য ব্যয় করা হয়। মুসলমানগণ ইহার মধ্যে উচ্চ অঙ্গের শিক্ষার জন্য যাহা ব্যয়িত হয় তাহার শতকরা ৪ টাকা পরিমাণ পাইতে হইলে যতগুলি উচ্চশিক্ষিত মুসলমান ছাত্র সরবরাহ করিতে হইবে তাহা করিতে এখন অক্ষম। সুতরাং তাহাদিগকে শিক্ষার জন্য ব্যয়িত সকল অর্থের শতকরা ৫৪ টাকা দিতে হইলে উচ্চ শিক্ষা তুলিয়া দিয়া প্রায় সকল অর্থই প্রাথমিক শিক্ষার জন্য খরচ করিতে হইবে। ফলে বহুসংখ্যক উপযুক্ত হিন্দু উচ্চ শিক্ষালাভে বঞ্চিত হইবে। দ্বিতীয়তঃ, গভর্ণমেণ্ট বহু হিন্দু কর্তৃক স্থাপিত স্কুলকলেজকে আংশিক সাহায্য করিয়া থাকেন । এই সকল প্রতিষ্ঠানের শতকরা ৫৪টি (অথবা শতকর। দুই চারিটিও ) মুসলমানস্থাপিত নহে । স্বতরাং এক্ষেত্রেও মুসলমানের আবদার রক্ষা করিতে হইলে উপযুক্ততর ও দীর্ঘকাল স্থাপিত হিন্দু প্রতিষ্ঠানগুলিকে বঞ্চিত করিতে হইবে । তৃতীয়তঃ, শিক্ষার জন্য ব্যয়িত রাজস্বের শতকরা ৫৪ টাকার উপর মুসলমানগণের কোন ন্যায্য দাবী আছে কিনা দেখা দরকার। র্তাহারা কি সমুদয় রাজস্বের শতকরা ৫৪ টাকা দিয়া থাকেন ? তাহা যদি না দেন, তাহ হইলে কোন অধিকারে তাহারা এরূপ দাবী করিতেছেন ? হিন্দু দিবে টাকা এবং তাহার। লুটিবেন, এই প্রকার বন্দোবস্ত করিতে হইলে সৰ্ব্বাগ্রে সেকালের সর্বাপেক্ষা অন্যায়কারী কোন রাজা বাদশাহকে মৃতসঞ্জীবনী সেবন করাইয়া ভারতসম্রাট খাড় করা প্রয়োজন। ' বাংলার শিক্ষাকাৰ্য্যের অল্পাংশই গভর্ণমেণ্টের অর্থে সাধিত হয়। অধিকাংশ অর্থ আইসে ছাত্রদিগের ও দেশের সদাশয় ব্যক্তিদিগের নিকট হইতে । শতকর। ৫৪ টাক মুসলমানের ভাগে ফেলিতে হইলে বাংলার শতকরা ৫৪ জন ছাত্র ও শিক্ষার জন্য অর্থদাতা মুসলমান হওয়া দরকার। তাহা হইবে কি ? হিন্দু মহাসভা ও রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি নির্বাচন হিন্দু মহাসভার পক্ষে রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি খাড় করা কখনও উচিত হইবে না। নানা প্রকার রাষ্ট্রীয় মতামতের লোক হিন্দু মহাসভার সভ্য রহিয়াছেন। এ ক্ষেত্রে যদি মহাসভা কোন বিশেষ রাষ্ট্রীয় মতের কোন সভ্যকে প্রতিনিধিরূপে খাড়া করেন, তাহা হইলে এই লইয়া সভার সভ্যদের মধ্যে কলহের সূচনা হইতে পারে । রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা কোন ধৰ্ম্মসভার উচিত নহে। যদি কোন ধৰ্ম্মসংক্রান্ত ব্যাপার রাষ্ট্রীয় প্রশ্ন হইয়া দাড়ায়, তখন অবহু ধৰ্ম্মসভা হইতে সে