পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সেকালের কথা দ্বিজেন্দ্রনাথ চলে’ গেলেন । উত্তরায়ণ আরম্ভে সৌরমকরে শুভ মাঘমাসের চতুর্থ দিনে শুক পঞ্চমী তিথিতে বর্ষীয়ান, বিদ্যাবান, পুণ্যপুর্ণপ্রাণ, সংযমীশ্ৰেষ্ঠ বঙ্গদেশের সত্যব্রত ভীষ্মসম দ্বিজেন্দ্রনাথ দেহরক্ষা করেছেন । ভীষ্মের স্যায় দ্বিজেন্দ্রনাথের মৃত্যু ইচ্ছামৃত্যু বলে অনুমান হয় ; নইলে সরস্বতী পূজার দিনে এঘটনা ঘটবে কেন ? যিনি আজীবন সরস্বতীর সেবা করেছেন, যষ্ঠাধিক অশীতি মাঘ র্যার শিরে অনুরাগে বাণী-চরণ-চুম্বিত আশীৰ্ব্বাদী ফুল বর্ষণ করেছে, সেই সারস্বত-ব্রত-ধারী মহাপুরুষের জন্য সারস্বতোৎসবের দিন ভিন্ন বিষ্ণুলোক হতে পুষ্পরথ আর কোন দিন আসবে। পাৰ্ব্বশপ্রিয় সত্যেন্দ্রনাথ গেছেন পোষে, সৰ্ব্বসুন্দর জ্যোতিরিন্দ্রনাথ গেছেন ফাঙ্কনে, বাক্যাজিক দ্বিজেন্দ্রনাথ গেলেন মঘে । দ্বিজেন্দ্রনাথের কৌলিক উপাধি ঠাকুর । এই ঠাকুরবংশে ধনে মানে দীনে পুণে। পণ্ডিত্যে মহত্ত্বে কবিত্বে কলানৈপুণ্যে অনেক বরেণ্য পুরুষ জন্মগ্রহণ করেছেন ; কিন্তু দ্বিজেন্দ্রনাথ ছিলেন, আমরা যাকে ঠাকুর বলি, ঠাকুর-ঘরের সেই ঠাকুরটি-শাস্তৌচ্ছল খাম আচল শিলাখণ্ড, কিন্তু চক্রে চক্রে তেজ, চক্রে চক্রে শক্তি, চক্রে চক্রে মঙ্গলের দীপ্তি । গত শতাধিক বর্ষের মধো বঙ্গদেশে যত শুভমুষ্ঠান প্রবর্ধিত হয়েছে তার অনেকগুলির স্বত্রপাত বা সাহায্যপ্রাপ্তি হয়েছে জোড়াসকের ¢लtदनुग्न-उठसून श*८ॐ | বৃটিশ-বঙ্গে রামমোহন রায় যে মঙ্গল-প্রদীপ জেলেছিলেন, সেই প্রদীপ স্নেহদানে প্রোজ্জ্বল করেছিলেন প্রধানতঃ মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও উীর বংশধরগণ । রামমোহন রায়ের ব্রাহ্মধৰ্ম্মকে মন্দির গড়ে', এই কলিকাত নগরীতে প্রথমে প্রতিষ্ঠা করেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ; উরই আগ্রহ উদ্যোগ ও যত্নে সমাজে পূজামন্ত্র, উপাসনা-প্রণালী ও সঙ্গী গদির অভিব্যক্তি হয় । র্তার তত্ত্ববোধিনী' পত্রিক কেবল ধৰ্ম্মপ্রচার করে ক্ষণস্ত হয় নি, পরন্তু ংস্কৃতের রত্নাগীর হতে হাস্ক হাস্ক মনানসই গহনা বেছে নিয়ে বাংলা ভাষাকে প্রথম ক’নে দেখার সাজে সাজিয়েছিল " তত্ত্ববোধিনী ।” অধিক-কি বাঙলার গদ্য-জনকদের মধ্যে যিনি মাতৃভাষীর জীবনে একটা উদ্দীপন প্রথমে দিয়ে গেছেন সেই চিরপূজ্য অক্ষয়কুমার দত্তের হাতে তৈরী ঐ তত্ত্ববোধিনী । আজ জাতীয়তার সঙ্গে মৌখিক আত্মীয়ত নেই এমন ছেলে মেয়ে এদেশে দেখাই যায় না ; কিন্তু একদিন দেশানুরাগ বৃত্তির ঐ শুভ নামকরণ-সংস্কার প্রথমে সম্পন্ন হয় পবিত্র দেবেন্দ্রভবনে। আজ দেশের রাজনৈতিক গগনে বড় বড় স্বৰ্য্যপ্রকাশে অনেক নক্ষত্রেরই দীপ্তি লুপ্ত হয়েছে। সেই লুপ্ত-দীপ্তি নক্ষত্ররাজির মধ্যে আত্মহারা তার নবগোপাল মিত্র বোধ হয় ১৮৬৮ অব্দে দুটি ভাব বুকের ভেতর নিয়ে, মার-একখানি কাগজ হাতে করে মহর্বির চরণতলে উপস্থিত হন। BBBBBD DD SKKBB BBBS DD BBBBBS BBS BDDD ও মিলন—একতা । তখনকার ছোকরার ল্যাঙট পরে মাটি মেখে পালোয়ানী কুস্তি করতে বড় প্রস্তুত নয়, তাই যুবকদের ব্যায়াম-চর্চার জন্য নবগোপালের উদ্যোগে জিমন্ত্যাষ্টিক বন্দোবস্ত হ’ল, আর মিলনের বর্ণ-পরিচয় শিক্ষার পাঠশালাস্বরূপ জাতীয় মেলা বা চৈত্রমেল বলে একটি বার্ষিক প্রদর্শনী খোলা হয় । বাঙালীর বীরোমাসে তের পাৰ্ব্বণের ভেতর ইংরেজ গবর্ণমেণ্টের করণীয় চড়কের বাণফোট সম্প্রতি উঠে গিয়ে চৈত্রসংক্রান্তিটা কেমন ফীক ঠেকে, সেইজন্য ঐ দিনটি বেছে নবগোপাল মিত্র একটি নুতন পাৰ্ব্বণ প্রতিষ্ঠা করবার চেষ্টা কবেন । ঐ মেল প্রথমে বেলগেছে ডল্‌কিন্‌ সাহেবের বাগানে হয়। ছোট বড় সকলেরই প্রবেশ অধিকার, প্রবেশদ্বারে কিছু দি১েও হ’ত ন । হয়, আজ বলতে লজ্জা হয়, শেষাশেষি ঐ প্রতিষ্ঠানের নাম হিন্দুমেল দিয়ে যৎকিঞ্চিৎ খরচের সাহায্যের জন্য কর্তৃপক্ষের যখন দ্বার-প্রবেশের জম্বা এক আন টিকিট ধার্য্য করেন, তখন অনেক সেয়ান ভদ্রলোক চটে গেলেন—বজে খরচের কথা শুনে, মেলাটি বন্ধ হ’য়ে গেল অাল আজ কিং কীর্ণিভ্যাল দেখতে বাবু, বিবি, বাবালোকের কি ভিড় ! ঐ মেলাতে কিছু কিছু কৃষিপ্রদর্শনী থাকৃত, মহিলাশিল্পের অনেক বিচিত্র নমুনা প্রদর্শিত হ’ত আমাদের স্যায় যুবকের জিমন্যষ্টিক ও এাক্রোব্যাটিক কৌশল দেখাত, আর বর্ধমান অঞ্চল থেকে রায়বেশে নামক বাঙালী কস্র২ খেলোয়াড়ের দল ঢাক ঢোল বাজিয়ে এসে যে শরীরের বল ও ক্রীড়া-কৌশল দেখাত ভ। আজ পর্য্যন্ত কোনে যুরোপীয় সার্কসের দলে দেখিলি । উদ্যোগ ছিল নবগোপাল ও তার সহকারীগণের, কিন্তু শক্তির সঞ্চার করতেন প্রধানতঃ দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর, গুণেন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রভৃতি জোড়াস"কোর জ্যোত্তিঞ্চগণ । "মিলে সবে ভারতসন্তান, একতন, মনপ্রণ গাও ভারতের যশোগান ;—” ভারত-মাতার এই আদি বন্দন-কবিতার উদ্দীপনপূর্ণ করুণ আবৃত্তি ঐ মেলাতেই প্রথমে আমরা সুপাঠক গুণেন্দ্রনাথ ঠাকুর মশায়ের মুখে শুনি । এদেশে নাট্যসাহিত্য ও অভিনয়কলার ঠিক প্ৰবৰ্ত্তক না হ’লেও, শোনা গেছে বহুদিন পূৰ্ব্ব হ’তেই জোড়দ কোর বাড়ীতে পারিবারিক প্রমোদচ্ছলে সামাজিক বাঙ্গলীলাদি রচিত ও অভিনীত হ’ত । পরে— সেও বোধ হয় ১৮৬৮ অব্দে ঐ স্থানে ‘নবনাটক’ নামে একখানি সমসাময়িক চরিত্রাবণী-সংযুক্ত সামাজিক নাটক অতি উৎকৃষ্টভাবে অভিনীত হয়েছিল। ঐ নাটকে নট-নটা ছিল এবং নটী সেজেছিলেন স্বগীয় জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় । আহ। কি রূপ! কি রূপ! বঙ্গদেশের রঙ্গমঞ্চের এমন সৌভাগ্য কবে হবে যে সেই সৌন্দর্য্যের রাশি বিকসিত কবে কোনে রমণী দর্শ* ন্দ:ক অভিবাদন করবে। আর কণ্ঠ—গানটি “জয়দেবী" সংস্কৃতে রচিৎ, আল বীণার ঝঙ্কারে গীত। যার সঙ্গে একমঞ্চে অভিনয় করে’ একদিন গৌরবস্থিত হয়েছি, সেই প্রবীণ নট vঅক্ষয়চন্দ্র মজুমদার মহাশয় সেজেছিলেন কৰ্ত্ত—গবেশ বাবু; প্রিয়হহদ অৰ্দ্ধেন্দু মুস্তফী বরাবর বলন্ত যে, অক্ষয়বাবুর ঐ অভিনয় দেখেই সে তার নিজের অননুকরণীয় বৃদ্ধ কৰ্ত্তীর ভূমিকা-অভিনয়-প্রণালী হুষ্টি করে ।