পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করিম ළ6? ইত। এবং শেষ পর্যান্ত সে আশা করিয়াছিল, যে, iামুরার বিলাতি জজ এ-সব সাজানো নালিশ ধরিয়া কলিবেন । কিন্তু, দায়রার জঙ্গ নৃতন পাশ-করা সাহেব এ দেশের নীতি-জ্ঞান যে নিতান্ত শোচনীয় তাহ। বলতে বসিয়! শুনিয়াছিলেন, এবং আমাদের নৈতিক উন্নতির জন্য বদ্ধ-পরিকর হইয়াই এদেশে পদার্পণ করিয়াছিলেন । তাই এই সুযোগ তিনি ছাড়িলেন না ; করিমকে তিনটি বংসর সশ্রম জেলের হুকুম দিয়া তিনি নিশ্চিন্ত চক্টলেন । এই নিদারুণ জেলের বিভীষিক এবং তার সঙ্গেকার জজ বের ইংরেজি কটু কথা সবই করিম বোধ হয় সহা করিতে পারিত, কিন্তু তার মনটা কঁদিতে লাগিল তার স্বী ও ছোট মেয়েটির জন্য । যে-দিন সে মাছ ধরিতে সাঈয়া ধরা পড়িল, সেদিন সাখিন। তার উপর বিরূপ হইয় উঠিয়াছিল। হাজী সাহেবের প্রচারিত মিথ্য কথাট। সে বিশ্বাস করিল, অনেক কঁাদিল, অনেক কেঁrদল করিল, এবং স্পষ্ট বলিল যে, করিমের এই দুৰ্ম্মতি অনেক দিম হইতেই সে লক্ষ্য করিয়াছিল। তার পর পুলিশ স্পন তাহাকে সহরের দিকে লইয়। চলিল তপন সাপিন তাহাকে বিদায় লইবার পূৰ্ব্বক্ষণে শুনাইল যে সে গরীব, অক্ষম, তার স্ত্রী এবং দেড় বৎসরের ছোট ময়েটিকে পাওয়াইবার, পরাইবার মত শক্তিটুকুও তার নষ্ট । ষ্টচ ছাড়া আবার সে পরের বাড়ীর আনাচেকানাচে ঘুরিয়া বেড়ায়—এমনি সে বেহায়, তাহার মুখ আর সে ইহজন্মে দেখিতে চায় ন! —করিম অনেক কথা বলিতে চাহিল ; কিন্তু সাখিন। তার কোনো কথা শুনিতে দাড়াইল না । চোখের জল মুছিতে-মুছিতে করিম সহরের দিকে চলিল। তার ফুফুর ছেলে কান্তু তাকে সেখানে দেখিতে আসিয়াছিল । সে তার কাছে শুনিল যে,সাখিনা তার ভাইয়ের বাড়ী চলিয়া গিয়াছে। করিম কাল্লুর হাত পূরিয়া অনেক মিনতি করিয়া বলিল যেন সে সাখিনাকে পাচট টাকা দিয়া আসে,—জেল হইতে ফিরিলেই করিম এ টাকা শোধ করিয়া দিবে। কাল্প চোখ মুছিয়া স্বীকার হইয়া গেল এবং পরে আবার দেখা করিতে আসিলে জানাইল যে সাখিনা টাকা লইয়াছে, তার রাগ চলিয়া গিয়াছে, আর সে এখন দিবরাজ করিমের জন্য কাদে। করিমের চোখ জলে ভরিয়া আসিল, কিন্তু সে কালুর মারফতে সাখিনাকে খুব ভরস দিয়া পাঠাইল । জেলের দুয়ার যখন তিন বৎসরের মত বন্ধ হইতেছিল তথন করিম ফটকের বাহিরে বিষন্ন কাল্লুর দিকে চাহিয়৷ শেষবার বলিল, যেন সে সাথিনার গাওয়া-পরার বন্দোবস্ত করিয়া দেয়, তাঙ্গর জমি-জম চাষ-বাস করে । কাল্প মাথ৷ নাড়িয়া স্বীকার হইয়া গেল । তিন বৎসর কাটিয়া গেল। রোদে পুড়িয়া বৃষ্টিতে ভিজিয়া করিম চাষ করিয়াছে, ফসল ফলাইয়াছে। তাহার কাছে জেলের কড়া শাসন, কড়া শাস্তি এবং . হাড়-ভাঙ পাটনি অল্পতেই অভ্যস্ত হইয়া গেল । डिन বৎসর সে কাটাইয়া দিল। তাহার কষ্ট হইল শুধু বাড়ীর কোনো খবর না পাইয়। সাখিনার নামে তাহার দাদার বাড়ীর ঠিকানায় ও কাল্পর নামে সে অনেক छिठिक्के निळ, কিন্তু কোনো খবরই আসিল না। বিশেষত এই শেষ বৎসরে যখন গান্ধীর দলের লোকে জেল ভরিয়া উঠিল, তখন তাহাদের অনেককে ধরাইয়া সে অনেক চিঠি দিয়াছে, সে-সব চিঠির কি হইল করিম ভাবিয়া পাইল না। আর-একটি জিনিস করিম দেখিয়া অবাক হইল যে, তাহাদের সহরের সেই বড় উকীল যিনি তাহার বিরুদ্ধে হাজী সাহেবের পক্ষ হইয়। মামলা চালাইয়াছিলেন, তিনি কলিকাতার এই বড় জেলে এক বৎসরের জন্য আসিয়াছেন। তাহার অবশ্ব খাটুনি নাই ; কিন্তু তবু এত বড় একট। লোক এখন জেলে । করিম একদিন তাহাকে সেলাম করিয়া এর কারণ জিজ্ঞাসা করিয়া বসিল । উকীল-বাৰু অনর্গল বকিয় গেলেন–যেন তখনো কোনে মামলায় তিনি বক্তৃত। করিতেছেন,—তিনি করিমকে বুঝাইলেন ইংরেজের আদালতে ন্যায়-ধৰ্ম্ম একেবারেই নাই । করিম আর-একবার সেলাম করিয়া তাঙ্গাকে জানাইল যে, এ কথার প্রমাণ সে স্বয়ং। উকীল-বর্ণি তাহার কথা ভালো করিয়া মনে পড়িল না। তবে তার মক্কেল হাজী সাহেব যে কোনো মিথ্যা কথা বলিবেন । কথা তিনি মানিলেন না ; কারণ দেখাইলেন, হাজী সাহেব R á%