পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] মৃত্যু-দূত ৪৭৯ এনেছি ; আমার কুৎসিৎ শিখিয়েছি ।” তারপর ডেভিডের মুখে হাত বুলাইয়া জর্জ বলিল, অভ্যাস গুলো তোমাকে “ হায় বন্ধু, আমার ভয় হচ্ছে পাপের পথে তুমি আমার ১াইতে ও বেশী এগিয়ে গিয়েছিলে ; তোমার মুখের শীর্ণত। ও কালিম। তারই সাক্ষী দিচ্ছে ।” রসিকতা ভাবিয়া নিশ্চিন্ত ছিল কিন্তু ক্রমশঃ তাহার ধৈর্য্যচ্যতি ঘটিতে লাগিল । সে বিরক্ত হইয়া বিড়-বিড় করিয়া বলিল, “ঢের হয়েছে জর্জ, তোমার গাডোয়ানী ইয়াক একটু রাপ দেখি বাপু । শীগ গীর ছুটে গিয়ে আর কাউকে ডেকে এনে তোমার গাড়ীতে তুলে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে চল দেখি ।” জর্জ বলিল, “ডেভিড, তুমি কি বুঝতে পাৰ্বছন সমস্ত বছরটা আমার কি পেশা ছিল ; কি ধরণের গাড়ী আর হইতেছে এতক্ষণ ডেভিড়, সাড়ায় চেপে আমি এখানে এসেছি, তা টের পা গুনি কি ? হাম ; বন্ধু, তোমাকেই এর পর কাস্তে আর লাগাম ধ’রে গাড়ী হঁকতে হবে । ডেভিড, বিশ্বাস করে, গত বছর থেকে এক মুহূর্বের জন্যেও আমার কোনে স্বাধীনতা ইচ্ছে ক’রে তোমাকে এই দুরবস্তায় ফেলছি না। নাই । অনিচ্ছাসত্ত্বেও এখানে তোমার কাছে আজ আমায় আসলেই হ’ত, নিজে দে শাস্তি আমি পেয়েছি তার হাত থেকে তোমাকে বঁচোবার উপায় থাকৃলে আমি নিশ্চয়ই বাচাতুম।” ডেভিড ঠিক করিল—জর্জের নিশ্চয় মাথা খারাপ ইয়। গিয়াছে, নতুবা এমন বক্তৃতায় সময় না কাটাইয় সে তাহার মরণাপন্ন বন্ধুকে বঁচিাইবার চেষ্টা করিত । জর্জ ডেভিডের দিকে চাহিয়া দুঃখিত মনে বলিল, “ডেভিড হাসপাতালে যাবার কথা ভেবে আর মন থারাপ করে। না। আমি যখন কোনো রোগীর পাশে হাজির হই তখন অন্য ডাক্তার ডাকার সময় পার হ’য়ে গেছে ।” হল্ম্ ভাবিল,“আজ দেখছি সমস্ত ভূতপ্রেতগুলো ছাড়া পয়ে চারদিকে তা গুব নাচতে স্বরু করেছে ; নইলে, এমন একটা লোক কাছে এল যে আমার কিছু উপকার করতে পারত, অথচ পাগলামী ক’রেই হোক আর সয়তানী ক’রেইহোক কিছু চেষ্টাই সে কবৃছে না কেন ? আমি মরি কি বঁচি তাতে ধেন ওর কিছু ধায় আসে না।” জর্জ বলিল, “শোন ডেভিড, গত গ্রীষ্মের সময়কার একটা কথা তোমায়ু মনে করিয়ে দিচ্ছি ; সেদিন রবিবার, পাহাড়তলীর সদর রাস্ত দিয়ে তুমি চলেছিলে । চাব দিকে বিস্তৃত সবুজ ক্ষেত্র, চমৎকার বাড়ী আর বাগান । সেদিন ভারি গুমোট করেছিল! চলতে চলতে হঠাৎ তোমার পেয়াল হ’ল যে তুমি এক, আর কেউ কোথায় ও নেই, চারদিক মরু ভূমির মত খ খ করছে ; মাঠে গাছের ছায়ায় গরুগুলো চুপচাপ দাড়িয়ে ঝিমোচ্ছে, জনমানবের চিহ্ন নাই ; সেই দারুণ গরম থেকে আত্মরক্ষা করবার জন্যে সবাই ঘরের কোণে আশ্রয় নিয়েছে। তোমার মনে পড়ছে কি ?” ডেভিড বলিল, “হ’তে পারে, শীত গ্রীষ্ম অগ্ৰাহ ক’রে এতবার আমি ঘরের বার হয়েছি যে সব কথা তাiমার মনে নেই ।” জজ বলিতে লাগিল, “চারদিক যখন খুব নিঝুম নিস্তব্ধ হ'য়ে এসেছে তথম তোমার পেছনে ঠিক আজকের মতে একট। একটান। কর্কশ আওয়াজ তুমি শুনতে পেয়েছিলে । পেছনে কেউ আসছে মনে ক’রে ঘাড় ফিরিয়ে তুমি কাউকেই দেখতে পেলে না। তুমি অবাক হ’য়ে এদিক ওদিক চেয়ে কি ভাবলে জানি না । শব্দট। তুমি শুনেছিলে ; সেট এল চতুদিকে এমন নিস্তদ্ধ ছিল যে ভুল শোনা অসম্ভব । কোনে গাড়ী নেই অথচ গাড়ীর চাকার শব্দ । অলৌকিক কিছু ঘটেছে ব’লে তুমি মনে মনে স্বীকার করনি । সমস্ত ব্যাপারট উড়িয়ে দিয়ে পথ চলতে লাগলে । তথন আমিই এই গাড়ী চালিয়ে তোমার পাছু নিয়েছিলুম ! তোমাব মল যদি এই শব্দের দিকে সেত তা’ঠলে আমাকে দে থ'তে পেতে, কিন্তু, দুৰ্ভাগ্য তোমার, ঘটেনি।” আহুপূর্দিক সমস্ত ঘটনাট ডেভিডের মনে পড়িয়া গেল । বাগানের বেড়ার ফাক দিয়া, এমন-কি থাদের নীচে পৰ্য্যন্থ তাকাষ্টয়া সে দেখিতে চেষ্টা করিয়াছিল শব্দটা কোথা হইতে আসিতেছে । শেষে সে ভয় পাইয়া উহা এড়াইবার জন্য এক গোলাবাড়ীতে আশ্রয় কোপেকে ?