পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Sఆ সেই যে মাগো, চিনি নাক কাদের ছেলে এসে, পান্ধী চড়ে চলুল নিয়ে আমায় তাদের দেশে ; সব অচেনী লোকের মাঝে কান্না কেবল আসে, তো’রি মাগো, মুখটি শুধু চোখের পরে ভাসে ! বললি সেদিন সেই ছেলেটি হঠাৎ গেছে মারা ; আছড়ে কি তাই পড়লি মাগো, কেঁদেই হলি সারা ! তার জন্যে কান্ন মা তোর বুঝতে পারি হায়! আমায় দেখে কাদিস কেন সেইটে বোঝা দায় ! প্রবাসী-আষাঢ়, HOGම් [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড সিথেয় সিঁদুর না দিলে মা তাই বিধবা হয় ? সিদুর যদি দিস মা গে৷ তুই, তা হলে ত নয় ? হাতের নোয়া ভাঙলে যদি অলুক্ষণে হই, পরলে আবার হাতের নোয় আর বিধবা নই ? অমন ক’রে র্কাদিস না মা, আমায় চেপে বুকে, আমন ক’রে চোখের জলে খাস্নি চুমু মুখে ; খেলতে আমায় ডাকৃছে কুটু পুতুল খেলায় তা’র, লক্ষ্মীটি মা অমন ক’রে কাদিস না ক আর ! ধ্রুবতারা গ্রী সীতা দেবী (>) গলির প্রায় সব শেষের বাড়ীর সম্মুখে আসিয়া সন্ধ্য হইতে তখনও কিছু দেরী আছে, তবে সে দাড়াইল । সদর দরজা বন্ধ। অন্যান্য দিন জীর্ণ রাজধানীর দুই একটি গলির মধ্যে এখনই যেন কপাটের অসংখ্য ছিদ্র দিয়া কয়েকটি আলোর ফোট৷ রাত্রির ছায়া আসিয়া নামিয়াছে। এই রকম একটি বাহিরের অন্ধকারের গায়ে জরীর বুটার মতন ঝিকৃমিক্‌ গলির ভিতর দিয়া একটি দীর্ঘকায় যুবক হনহন করিয়া চলিতেছিল। তাহার কাপড়, জামা, চাদর সবই মলিন ও ছিন্ন, কিন্তু তাহীর মুখশ্ৰী দেখিলে সে যে ভদ্রলোকের সস্তান, সেবিষয়ে কাহারও কোনো সন্দেহ থাকে না। মুখে ইহারই মধ্যে দারুণ দুশ্চিন্তার চিহ্ন এমন গভীর দাগ কাটিয়া গিয়াছে যে, একেবারে কাছে আসিয়া না দেখিলে বুঝিবার উপায় থাকে না যে, সে যুবক কি প্রৌঢ় । করে আজ কোথাও আলোর চিহ্নমাত্র নাই। যুবক কপাটে আঘাত করিয়া মৃদুকণ্ঠে ডাকিল—“চারু, চারু।” কোন সাড়া শব্দ নাই। যুবক গলার স্বর আর একটু উচ্চে তুলিল, দরজায় আঘাতও আর একটু জোরে করিয়া আবার ডাকিল—“ম, ওমা ।” এইবার ভিতর হইতে দরজাট হড়াৎ করিয়া খুলিয়া গেল। যুবক অতি সাবধানে ভিতরে ঢুকিতে ঢুকিতে বলিল, “আলো জালেনি কেন মা ? যা অন্ধকার!”