পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা | মছলিপত্তন-প্রবাসী শিল্পাচাৰ্য্য ক্রযুক্ত প্রমোদকুমার চট্টোপাধ্যায় (t:ՏԳ উন্নতি ও স্থিতির জন্য তিনি ধনপ্রাণ ও দেহ সম্পূর্ণভাবে উৎসর্গ করিয়া দিয়াছিলেন, এবং কঠোর শারীরিক পরিশ্রমের ফলেই অকালমরণ বরণ করিলেন। মৃত্যুশয্যায় তিনি র্তাহার অন্তরঙ্গ বন্ধু গবৰ্ণিং বডির সভ্যগণকে র্তাহার সংকল্পিত ভারতীয় ললিতকলা বিভাগ খুলিবার জন্য সনিৰ্ব্বন্ধ অনুরোধ করেন এবং তাহারা যে বঙ্গদেশ *ইতে শিক্ষক আনাইয়। এই বিভাগ প্রতিষ্ঠিত করিবেন এরূপ প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করিয়| শাস্তির সহিত শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এই মহাপ্রাণ আন্ধু কুলদীপক মৃত্নাকাল পর্য্যন্ত প্রায় তিন লক্ষ দশ হাজার টাকা অ{য় প্রদ সম্পত্তি কলাশালার জন্য সংগ্ৰহ করিয়৷ দিয়া যান। প্রতিষ্ঠাতার এই অন্তিম অঙ্গুরোধের ফলে, একজন উপযুক্ত শিল্পশিক্ষক পাঠাইবার জন্য তাহার শিল্পগুরু অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে পত্র লেখেন । তদন্তসারে ১৯২২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে হগুমন্ত রাও দেহত্যাগ করিবার তিন মাস পরে, প্রমোদকুমার চট্টোপুtধ্যায় মহাশয় কলাশালার শিল্পাচাৰ্য্য হইয়া মছলিপত্তনপ্রবাসী হন। এখানে আসিয়া প্রমোদবাবু নব্যবঙ্গীয় চিত্রকল| বিভাগ গঠন করিয়া প্রথমে দুইটি ছাত্র লইয়া কাৰ্য্য আরম্ভ করেন । কিন্তু এই বিভাগের পক্ষে এবং এই শিল্পের শকুকুলে তখনও কেহই ছিলেন না । সুতরাং প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে, এমন কি, বিদ্রপাত্মক বিরুদ্ধ সমালোচনার বাধা ঠেলিয়া চট্টোপাধ্যায় ও র্তাহার ছাত্রগণ নারবে কাৰ্য্য করিয়া কলাশালার এই বিভাগটি পুষ্ট করিতে থাকেন। হঠাৎ একদিন একটা অভাবনীয় ঘটনা ঈতে প্রমোদবাবুর প্রতি আন্ধ, জনসাধারণের দৃষ্টি পতিত ২য় এবং নব্যবঙ্গীয় চিত্রকলার মিন্দা, বিদ্রুপ, প্রচার-নিষেধ বিরুদ্ধ সমালোচনার স্রোত রোধ করিয়া অনুকূল বায়ু প্রবাহিত হইতে থাকে। এদেশে “শারদা” নামে একখানি তেলেগু মাসিক পত্রিক আছে। প্রমোদবাবুর অঙ্কিত সরস্বতী মূৰ্ত্তি এই পত্রিকার প্রচ্ছদপট শোভিত করিয়া যখন বাহির হয়, তখন অন্ধ দেশের এক শ্রেণীর রসজ্ঞের দৃষ্টিতে তাহ অশ্লীল বলিয়া বিবেচিত হয়। ডাক-বিভাগের উত্তারা পর্য্যন্ত “শারদা”কে এমন ছবি বুকে করিয়া বাহির হইলে, গ্রহণ করিতে অস্বীকার করিয়া প্রচ্ছদপট হইতে Ğzi “indecent or obscene photograph” ( vienai চিত্র ) বলিয়া তুলিয়া দিবার প্রস্তাব করেন। পোষ্টমাষ্টার জেনারেল লিখিয়া বলেন :– “The title page conveys an expression of not mere nudity but an exaggerated grossness which cannot come within the purview of true art at all.” তাৎপৰ্য্য—প্রচ্ছদপটটি কেবল নগ্নতার ভাব মাত্রই প্রকাশ করিতেছে না, তদুপরি ইহাতে যে অতিরঞ্জিত স্থূল অমার্জিত রচি প্রকাশ পাইয়াছে তাহা কখনই প্রকৃত আর্টের সীমার ভিতর আসিতে পারে না । এমন সময় একখণ্ড “শারদা” মাদ্রাজ আদায়ার ব্রহ্মবিদ্যাশ্রমের অধ্যক্ষ কলারসজ্ঞ ডাক্তার জে, এইচ-, কজিনস্ সাহেবের হাতে পড়ে এবং সেইসঙ্গে ডাক-বিভাগীয় নিষেধাজ্ঞারও সংবাদ আসে। তিনি বিষয়টিকে লঘু ভাবে না দেখিয় তাহতে নব্য ভারতীয় শিল্পকলারই দক্ষিণ ভারতে প্রবেশনিষেধরূপ বিভীষিকার আভাস পাইয়৷ চিত্ৰখানির শিল্পশৈলী, ভারতীয় সংস্কারের সহিত তাহার সঙ্গতি এবং অন্তৰ্দ্দ ষ্টিপরায়ণ শিল্পীর তুলিকা-মুখে ভাবক্ষুরণের সজীবতা দেখিতে পান এবং তাহার সহিত উক্ত নিষেধ-বিধির শোচনীয় অসামঞ্জস্য র্তাহার হৃদয়বেদন উৎপাদন করে । তিনি ১৯২৩ সেপ্টেম্বরের ১১ তারিথের “New India’ পত্রে চিত্রটির বিশদ সমালোচনা করিয়া তাহার সৌন্দৰ্য্য, পবিত্রতা এবং প্রতিকুল মন্তব্যের অসারতা প্রতিপন্ন করেন । কজিনস্ সাহেব অক্ষেপ করিয়া বলেন – “It is had enough that an ancient and most worthy phase of the cultural life of India should he subject to the censorship of a single individual Eastern or Western. But it is something more than deplorable that censorship should he of such a quality that it can see only obscenity where nothing is either expressed or implied save Divine purity ; and soe exaggerated grossness where there is only sinencss and reserve carried to the point of introspection.” তাৎপৰ্য্য-ভারতীর সভ্যতার একটি প্রাচীন ও বিশেষ উল্লেখযোগ্য ক্রম যে প্রাচ্য কি পাশ্চাত্য কোনো একজন ব্যক্তি বিশেষের নিন্দাত্মক সমালোচনার বিষয়ীভূত হইয়াছে ইহা বাস্তবিকই পরিতাপের বিষয় ; কিন্তু পরিতাপের অপেক্ষাও গুরুতর কথা এই যে, যেখানে স্বৰ্গীয় পবিত্রত। ছাড়া অন্য কিছু প্রকাশ করিবার প্রয়াস নাই সেখানে সে সমালোচককেবল অশ্লীলতাই দেখিতে পান ; এবং যেখানে স্বমার্জিত রচি ও সংযম-দৃষ্টি