পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] . আকাশ-বাসর ס\ ge\ নু্যায্য পাওনা-গণ্ডা বুঝাইয়া দিয়া উদ্বত্ত সবটুকুই সে কবিতা, কাব্য ও সাহিত্যচর্চাতে দিয়া আসিয়াছে। সেদিনও তাই সে কবিতার কমলবন পরিত্যাগ করিয়া কমলার রত্ন-সিংহাসনের পাশে আসিয়া জুটিতে পারিল না, কাব্য-সরস্বতী ও দারিদ্র্য দুইজনকেই একসঙ্গে বরণ করিয়া লইল । সে অবিশ্রাম কাব্যচর্চা করিতে লাগিল এবং মাসিকে সাপ্তাহিকে গল্প, উপন্যাস, কবিতাদি প্রকাশ করিয়া কোনো রকমে মনের আনন্দে পেটের খোরাক জোগাইতে লাগিল । আসলে, তাহার পেশ হইল সাহিত্য-সাধন । ইহাতে মুসড়িয়া পড়িবার কিছু ছিল না, কারণ, বন্ধন বলিতে যাহা বুঝায় আমাদের ললিতমোহনের তাহা একটিও ছিল না । অল্প বয়সেই তাহার বাবা মারা যান ; মাও অনেককাল গত হইয়াছেন। এক দূরসম্পৰ্কীয় বিধবা পিসীমা ছাড়া সম্প্রতি তিনকুলে তাহার আর কেহ নাই । তিনি দেশে থাকিয় ললিতমোহনের পৈতৃক ভিটাটুকু আগ লাইতেন ও তাহার পৈতৃক সম্পত্তির আয় ২১০/০ নিয়মিত ভাবে মাসে মাসে তাহাকে পাঠাইয়া দিতেন । সুতরাং, বন্ধন না হইয়া পিসীমা তাহার এই কাব্য-সাধনায় একটু মুক্তির আনন্দই দিতেন । এই ২১৮০র উপর লিখিয়া-টিথিয়াসে যাহা পাইত তাহাতেই তাহার কলিকাতায় বাস ও উদরের সংস্থান দুই-ই হইত, এমনকি মাসিক চার পাঁচ টাকার বই কিনিবার অভাবও তাহার কোনো দিন হয় নাই। ললিতমোহনের দৃঢ় ধারণা ছিল যে, সে এমনি করিয়া সাহিত্যের একনিষ্ঠ সাধনায় জীবন কাটাইবে বাধা পড়ির না। কিন্তু কেমন করিয়া যে সব গোলমাল হইয়া গেল সে ঠিক বুঝিতে পারিল না ; এম্-এ পাশ করার দুই বৎসরের মধ্যে সে অশোকাকে বিবাহ করিয়া দেলিল এবং সেইদিন হইতেই তাহার দুর্দশা স্বরু २ट्झांद्रष्टुं । সাহিত্য-রোগে আক্রান্ত হইলে সঙ্গে-সঙ্গে আরো একটি মস্ত উপসর্গ আসিয়া জোটে ; সেটি পাঠক বা শ্ৰোতা সংগ্রহ করা। রাত্রি জাগরণ করিয়া মনের আনন্দে লিখিয় গেলাম আর সেখানেই আনন্দের সমাপ্তি হইল, Գ ՊաՊ এমন মনোভাব লইয়া কোনো নিৰ্ব্বিকার সন্ন্যাসী সাহিত্যিক কোথায়ও জন্মিয়াছেন কি না জানি না, কিন্তু ললিতমোহন মনের সমস্ত রস দিয়া যাহা লিখিত মনের সমস্ত রস দিয়া যদি কেহ তাহা উপভোগ না করিত তারা হইলে তাহার সব আনন্দ মাটি হইল বলিয়। মনে হইত। তাই সে রাত্রের লেখ সকালে অতি সস্তপণে চায়ের দোকানে লইয়া গিয়া পরিচিত লোকের অপেক্ষায় থাকিত এবং অৰ্দ্ধ বা সিকি পরিচিত লোক দেখিলেও কথায় কথায় তাহার লেখার কথা পাড়িয়া তাহা শোনাইতে বসিত। এখানেই অশোকার মামাত ভাই অজিতের সঙ্গে তাহার পরিচয় হয় । অজিত ললিতের লেখার একজন ভক্ত ছিল ; অশোকাকেও ললিতের কাব্যসাহিত্যের পক্ষপাতী জানিয়া সে একদিন ললিতকে অশোকাদের বাড়ী লইয়া গিয়া তাহাদের সহিত পরিচয় করিয়া দিল। ললিত মধ্যে মধ্যে অশোকাদের বাড়ী গিয়া নূতন গল্প, কবিতা বা উপন্যাসের টুকুর-বিশেষ শোনাইয়। আসিত । অশোক ভালোমন্দ সমালোচনা করিয়া তাহাকে উৎসাহিত করিত। অশোকার সহিত এই পরিচয় ক্রমশঃ প্রণয়, প্রেম ও পরিণয়ে পৰ্য্যবসিত ट्झेल । $ অশোকার পিতা রাজাবলোচুলুকাবু সব ডেপুট হইতে পদোন্নতি করিয়া সম্প্রতি আলিপুরের ম্যাজিষ্ট্রেটু ও রায় বাহাদুর হইয়াছেন । ধৰ্ম্মতল অঞ্চলে একটি ত্রিতল বাড়ীতে সপরিবারে তাহার বাস। পরিবার বলিতে গৃহিণী, অবিবাহিত তিন কন্যা, অশোক, রেব ও ভায়োলেট এবং গৃহিণীর ভ্রাতু-পুত্রী স্থপ্রভা ও সুপ্রীতি । মেয়ের সবাই স্কুল কলেজে পড়ে। অশোকার বড় তিন বোন হরিমতি, গৌরী ও স্বশীলার বিবাহ হইয়। গিয়াছে ; তাহারা সিমুলা, ঝরিয়া ও বালীগঞ্জে স্ব স্ব স্বামীগৃহে বাস করিতেছে। অশোকা তখন বেথুন কলেজে বোটানি, হিী ও বাংলা লইয়া আই-এ পড়িতেছে ; স্বপ্রতি তাহার সহপাঠী। অশোকার বিবাহের কাণাঘুষ চলিতেছে ; বালীগঞ্জের ব্যারিষ্টার এম, সি, ঘোষের পুত্র অবনীমোহন ঘনঘন একাড়ীতে গতায়াত করেন । ইতিমধ্যে