পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓ¢¢ প্রবাসী-ভাদ্র, ১৩৩৩ [ २७* छांनं, »ञ थ७ সুষমাকে সুন্দরী বলিতে অনিলের মৰ্ম্মাস্তিক আপত্তি ছিল, অন্তত তাহার সামনে । একেই মেয়ে-মামুষের জাতের জাক বেশী, তার উপর এই ধরণের কথা শুনিলে অfর রক্ষা থাকিবে না। কিন্তু এখন ত আর সুষমা উপস্থিত নাই, কাজেই কোনোরকমে ঢোক গিলিয়া সে বলিল, “এই রংটা ফরশ গোছের আর কি ” “ফবৃশ গোছের আবার কি রকম ? তোর চেয়ে ফর্শ না কালে ?” অনিল অগত্য স্বীকার করিল যে, স্বযম তাহার চেয়ে, বেশ কিছু ফরশাই হইবে। অপর বলিল, “তা হ’লে খুবই ফর্শা বল ? যা খুসি কেননা কেন, তাকে ভালই দেখাবে। মেয়ের জন্যে সোনালী রংএর ফ্রক কিনেছিস, বউয়ের জন্যেও ঐ রংএরই শাড়ী নে, খুব খুসি হবে এখন । কিন্তু আমি এখন চললুম, আমার জরুরী কাজ আছে ।" অধয় চলিয়া গেলে, অনিল বসিয়া শাড়ী বাছিতে আরম্ভ করিল। দোকানের লোকগুলি ক্রমাগত গাদ গাদা বেনারসী শাড়ী, ঢাকাই শাড়ী, মান্দ্রাজী শাড়ী আনিয়া হাজির করিতে লাগিল, এবং কয়েক মিনিটের মধ্যেই অনিল শাড়ীর স্তপের আড়ালে একেবারে অদৃশ্ব হইয়া গেল। কিন্তু তাহার আর কিছুতেই পছন্দ হয় না। কোনোটার বা রং পছন্দ হয় ত পাড় পছন্দ হয় না। কোনোটার বা খোল ভাল, কিন্তু রংটা একেবারে চোখে যেন হুল ফুটাইতে আসে । অবশেষে তাহার একটা কাপড় পছন্দ হইল। রংটা তাহার ময়ুরকষ্ঠী, পদ্মরাগ আর মরকতের আভ মিলাইয়৷ যেন তাহার চোখের সম্মুখে ঝিলিক হানিতে লাগিল। সুষমাকে ইহা পরিলে কেমন দেখাইবে, সে তাহ মনে মনে কল্পনা করিতে লাগিল। ঠিক রাণীর মতই দেখাইবে। রাণী হওয়াই তাহার উচিত ছিল, কিন্তু ভাগ্যদোষে হইয়াছে সে গরীব কেরাণীর স্ত্রী। রাণীগিরির বদলে দাসীগিরি করিয়াই তাহার দিন কাটে । শাড়ীখানার মন্থণ কোমল গায়ে সাদরে হাত বুলাইতে বুলাইতে অনিল জিজ্ঞাসা করিল, “এখানার দাম কত হবে হে ?”

  • একশ দশ টাকা ।” অনিলের কপাল চাপড়াইয়া কাদিতে ইচ্ছা হইতে লাগিল । শাড়ীখানায় সুষমাকে কি সুন্দরই না জানি দেখাইত, কিন্তু একশ দশ টাকা দেওয়া যে একেবারেই তাহার সাধ্যির অতীত। রাগটাগ তাহার এক নিমিষেই কাটিয়া যাইত । কিন্তু এত টাকা সে দিবে কি প্রকারে ? সে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া শাড়ীখানি সরাইয়া বসিল ।

সে জিজ্ঞাসা করিল, “অল্পদামী এইরকম রংএর কিছু আপনাদের কাছে নেই ?” যে ছোকৃরাটি তাহাকে কাপড় দেখাইতেছিল, তাহার ধৈৰ্য্যের আর সীমা নাই। “আচ্ছা, দাড়ান দেখছি,” বলিয়া সে পিছনের দিকে প্রস্থান করিল। অল্প পরেই সে কয়েকখান। শাড়ী লইয়া আসিল, কিন্তু সেগুলি দেখিবামাত্র অনিল ফিরাইয়া দিল । সে একরকম নিরাশ হইয়া ফিরিয়া যাইবার জোগাড় করিতেছে, এমন সময় দোকানের একজন কৰ্ম্মচারী আসিয়া নীচু গলায় বলিল, “একটু পিছনের দিকে আসবেন, মশায় ?” অনিল একটু অবাক হইয়া গেল, তবু লোকটির পিছন পিছন চলিল । ভিতরে গিয়া লোকটি একটি কাগজে মোড়া পুট লি বাহির করিল। উপরের কাগজের আচ্ছাদন খুলিয়া সে একখানি শাড়ী বাহির করিল। শাড়ীখানা পূর্বের সেই শাড়ীর মতই ময়ুরকষ্ঠ রংএর, দেখিলে আরো বেশী মূল্যের বলিয়া মনে হয়। অনিল কাপড়খানি হাতে লইয়া দেখিল, তাহার খোলও চমৎকার । সে জিজ্ঞাসা করিল, “এটা আমায় দেখাচ্ছেন কেন মশায়, এর দাম বোধ হয় আরো বেশী?” দোকানের লোকটি বলিল, “পঞ্চাশ টাকায় এটা পেতে পারেন ।” “কি রকম ?” অনিল বেশ খানিকট অবাক হইয়৷ গেল । “এ জিনিষটা একেবারে নূতন নয়। মাসখানেক আগে এক ভদ্রলোক এখান তার স্ত্রীর জন্ত কিনেছিলেন । কিন্তু তার স্ত্রীর এখন ভয়ানক অস্বথ, মারা যেতে বসেছেন ।