পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] শ্ৰীযুক্ত অজিত ঘোষের প্রাচীন চিত্র-সংগ্ৰহ D পুথির কাঠাবরকের উপরকার চিত্র ( বাংল৷ দেশ ) সেগুলি থেকে শিল্প ও ঐতিহাসিক মূল্য হিসাবে এগুলির স্থান অত্যন্ত উচুতে, তা একটু তুলনা ক’রে দেখলেই বুঝতে পারা যায় । এই সংগ্রহের কতকগুলি ছবি আগে মুঘল বাদশাহদের নিজেদের সংগ্রহে স্থান পেয়েছিল, কারণ ঔরঙ্গ জীব, শাহ আলম ও ফরকৃশিয়ার প্রভৃতি সম্রাটুদের মোহর তাতে অঙ্কিত আছে। একটি ছবির কথা একটু বিশেষ ভাবে না বললে ঠিক হবে না। এখান আকবরের সভার চিত্রকর রামের দ্বারা অঙ্কিত সুলতান রাজিয়ার চিত্র, এটি কবি ও বাদশাজাদী জেবুন্নিসা বেগমের সম্পত্তি ছিল, কারণ, এতে র্তার নিজের মোহর দেওয়া রয়েছে। এই সংগ্রহের এই বিভাগে রাম, চতরমন বা চিতরূমম্বালচন্দ, *মোহন, নাস্থ ও আরও অনেকের নাম-মই-করা চিত্র জোগাড় করা হয়েছে । রাজপুত চিত্রের অনেক গুলি পদ্ধতি আছে—এইসব পদ্ধতির প্রায় সমস্তগুলির খুব ভাল ছবি এই সংগ্রহে দেখতে পাওয়া যায়। পূৰ্ব্বতন রাজপুতীয় পদ্ধতির ছবির মধ্যে সব-চেয়ে প্রাচীন রাগিণী চিত্রাবলী বিশেষ উল্লেখযোগ্য । পাহাড়ী পদ্ধতিগুলির অনেক নিদর্শন আছে, "তার মধ্যে লঙ্কা-আক্রমণের চিত্র-পৰ্যায়টি অতি কলা-কৌশল পূর্ণ। কাংড়ার চিত্রাবলীর মুদ্রিত নমুনা অনেকেই দেখেছেন বটে, কিন্তু সেগুলি প্রায়ই পরবর্তী কালের । কাংড়ার প্রাচীন চিত্র বর্ণ-ফলানর সৌন্দর্ষ্য ও ক্ষমতায় এবং অঙ্কন-কলার মুম্পষ্টতায় প্রাচীন চিত্র-সম্বন্ধে আমাদের ধারণ অনেকটা বদলে দেয়, কিন্তু এরূপ প্রাচীন নিদর্শন দেখবার স্ববিধ সাধারণের বড় একটা হ’য়ে ওঠে না—এই ঘোষ-সংগ্রহে ওরূপ অনেক প্রাচীন কাংড়ার চিত্র একত্র করা হয়েছে। একথা সকলেরই জানা আছে যে, তখনকার রাজা-রাজড়ার রাজপুত ও পাহাড়ী শিল্পীদের চিত্রাঙ্কনে নিযুক্ত করতেন। ইহার প্রায়ই কোনো প্রাচীন মহাকাব্য বা আখ্যায়িকার নানা ঘটনা গুলি ধ’রে অসংখ্য চিত্র একে ফেলতেন । এই চিত্র-পৰ্য্যায়গুলির খুব বিশেষত্ব সবাই স্বীকার ক’রে থাকেন। সৌভাগ্যক্রমে শ্ৰীযুত অজিত ঘোষ মহাশয় এই চিত্র-পৰ্য্যায়ের অনেকগুলি সংগ্রহ করতে পেরেছেন। রাজপুত শিল্পের সর্বপ্রধান বিশেষজ্ঞ ডাঃ কুমারস্বামী ছাড়া আর কেউ এই শিল্পসম্পদের অধিকারী নন । এই চিত্র-পর্য্যায়গুলির বিষয়— লঙ্ক-আক্রমণ, প্রাচীন রাজপুতীয় রাগিণীমালা, নল ও দময়ন্তী, ও গীত-গোবিন্দ । এই সংগ্রহের রাজপুত চিত্রাবলী দেখে আলোচনা ক’রে আমরা শ্ৰীযুত ঘোষের মতোই মনে করি যে, এতদিন ভারতীয় চিত্রবিদ্যাকে (যেসব পদ্ধতিতে ভাগ করা হ’ত এখন আর সেরূপ করা চলতে পারে না । এমন সব বিশিষ্ট পদ্ধতির কথা জানা যাচ্ছে যাতে চিত্রগুলিকে আলাদা আলাদা ব'লেই ধরা উচিত, কিন্তু এতদিন “পুiহাড়ী” এই নামটির মধ্যেই ফেলা হত। এরূপ একটি পদ্ধতিকে তার বিকাশভূমির নাম থেকে বাসোনী পদ্ধতি বলা যেতে পারে—কারণ, এই পদ্ধতির