পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] আত্মদর্শন As অস্তিত্ব বা সত্তা বৰ্ত্তমান ও পরিবর্তনশীল ইন্দ্রিয়-চেতনা আমায় বুঝাইয় দিল যে, একটি “সত্তা”কে আশ্রয় করিয়া সমস্ত হইতেছে। যে ইন্দ্রিয়-চেতনার স্রোত বহিয়া চলিয়াছে, ধাহাকে দেশে কালে স্থনির্দিষ্ট করা যায় না, তাহাকে সত্ত বলা চলে না। সমস্ত চেতনার মধ্য হইতে এক অসীম নিৰ্ব্বিকল্প অস্তিত্ব প্রকট হইতেছে ; সমস্তই যেন এক আস্তিত্বকে প্রমাণ করিবার জন্য । একবার প্রতিষ্ঠিত হইলে আর অস্তিত্বকে উড়াইবার জো নাই । যখন বলি, “কিছু শুকুভব করি, সুতরাং আছি” তখন কিছু বস্তুটার উপর জোর দিই না, আসল জোর পড়ে “আছি’র উপর । এই অস্তিত্ব একটি নিৰ্ব্বধ সহজ সত্য । যখন বেদন পাই, তখনই আমার চৈতন্য বুঝাইয়া দেয় যে, “আছি” ; পরে অনুসন্ধান করিয়া বিশ্লেষণ করিয়া ক্রমশঃ ( হয়ত তাড়াতাড়িই বুঝি, কিন্তু তখনি বুঝি না) বুঝি কী আছে ; ‘আছি’ এই বোধ কিন্তু প্রথমেই থাকে। যে আমি আছি, তা’র বিশেষক চিহ্নগুলি লইয়৷ সৰ্ব্বদাই নানা প্রশ্নসন্দেহাদি উঠিতে পারে, কিন্তু অস্তিত্ববোধটি কোন ক্রম বা পৰ্য্যায় মানিয়া জাগে না । অস্তিত্বের রূপ ও গুণ বিচিত্র আকার ধারণ করে, কিন্তু তার পরিমাণ বদলায় না । শারীরিক যন্ত্রণ ও রসবোধের আনন্দ দুই সমানভাবে বর্তমান। অস্তিত্বটা চেতনার সমষ্টি—যে-কোন চেতনাই অস্তিত্বের অংশ, অথচ কোন চেতনাই অস্তিত্বের নামান্তর হইতে পারে না । কারণ চেতনার জাতি-কুল লইয়া নানা সন্দেহ জাগিতে পারে। এমন-কি এটাও বলা চলে যে, সমস্ত চেতনাই হইতেছে’ ( being ) এমন নয়, ‘হইয়াছিল’ ( had been ) বলিয়া স্বীকার করি। শীত বা উষ্ণ, শাদা অথবা কালে যাহা-কিছু বিশিষ্ট ( particular ) ও আপেক্ষিক ( relative ), সেই সমস্তকেই অবাস্তব বলিয়া তর্ক তোলা যাইতে পারে। কিন্তু অস্তিত্ব-সম্বন্ধে বলা চলে না যে, সে এটা বা ওটা—সে যাহাই হোক অস্তিত্ব অস্তিত্ব ; ইহার চেতনার উপাদান-বস্তু কি, এ-প্রশ্ন অপ্রয়োজনীয়; একটা উপাদান আছে,এটা স্বীকার করিতে سیاسی-مم-سسه হইবে ; শূন্য নিরবলম্ব চেতনা নিছক কল্পনামাত্র। অস্তিত্বের উপাদান-সম্বন্ধে আমরা মনোযোগ না দিতেও পারি, কিন্তু উপাদান যে আছে তাহা স্বীকার করিতে হইবে ; সেই উপাদানের অংশ-বিশেষ ও অস্তিত্বের ক্রমবিশেষ এক্ষেত্রে উপেক্ষণীয়, কারণ ইহাদের সকলকে সমানভাবে পরিব্যাপ্ত করিয়া রহিয়াছে অস্তিত্বের চেতন । অথচ কেন যে এই চেতনাই সৰ্ব্বেসৰ্ব্ব হইতে পারে না, ইহা ও একটা সমস্য; হয়ত ইহা বাস্তবের সংজ্ঞা নির্দেশেরই ফল। পূর্বেই দেখিয়াছি যে, কিছু-একটা হইবার চেতনা নিশ্চয়তামূলক নহে, কিন্তু অস্তিত্বের চেতন তাহ বটে ; ইহাই একমাত্র আচঞ্চল, অন্য সকলই অস্থির অস্থায়ী । সুতরাং অস্তিত্ব-চেতনার বিশেষ-বিশেষ অংশ অসীম অখণ্ড অস্তিত্বের মধ্যেই চরম পরিণতি লাভ করে। কিছুএকটা হুইবার বোধ অনবরত অতীতের মধ্যে গিয়া পড়িতেছে, তেমনি একটা-কিছু হইবে এ-বোধও ভবিষ্যতের দিকে ছুটিতেছে—দুটি ধারাই সমানবেগে ছুটিতেছে, দুটিই জীবনের উপর সমান দাবী রাখে । কিন্তু যে-সত্তা মাত্র অতীত বা ভবিষ্যৎ নয়, যাহা শাশ্বত—যাহা সৰ্ব্বব্যাপী সৰ্ব্বভূঃ, সেই নিখিল-চৈতন্যই ভূমা বা ভগবান ; সেই চিরন্তন বর্তমানের বুকে অতীত ও ভবিষ্যৎ-ধারা নিজেদের হারাইতেছে ; যেন কোটি-কোটি চেতনা-বুদ্বুদ ভাসিয়া উঠিতেছে, মিলাইতেছে, আবার নূতন করিয়া ভাসিতেছে ঐ বিরাট সত্ত-সাগরের বুকে । সাগর ত বুদ্ধদে পূর্ণ, কিন্তু বুদ্বুদ সাগরকে পূর্ণ করিতে পারে না ; তাহারা শুধু ভূম-সমুদ্রের অগুণ্য উচ্ছ্বাসমাত্র । আমি সেই বিরাটু সমুদ্রের ধীর গম্ভীর স্পন্দন আমার হৃদয়ের মধ্যে অনুভব করিতেছি । *

  • চেতনার যে সঙ্কীর্ণ সংজ্ঞা সাধারণতঃ দেওয়া হইয় থাকে, আমি সে অর্থে চেতন sেensation) ব্যবহার করি নাই ; আমি ইহার মধ্যে যুক্তি-বৃত্তি (reason), ইচ্ছা-বৃত্তি (volition), আকাঙ্গা, ঝোক (tondoncies) পৰ্য্যন্ত টানিয়া লইয়াছি। যাহা অতীতের উত্তরাধিকার নহে, যাহা বৰ্ত্তমান-রাজ্যের আদিম অধিবাসী (autochthon), যাহা প্রত্যক্ষ (immediate) তাঁহাই একমাত্র সত্য চেতন । ভাৰ ও ইচ্ছাকৃত্তি পৰ্য্যন্তকেও আমি চেতনা বলিয়া মনে করি ; ত্রিকোণ অথবা সমত ཤི་ཕཱ་ཡཱ་རཱ་ཝཱ་ལཱྀ།། | আমার কাছে হাত তোলা অথবা কোন কাজ

রবার ইচ্ছার প্রত্যক্ষ অনুভূতিগম্য এবং আমি বোধ করি যেন তাহাদের স্পর্শ করিতেছি.