পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՊՆ প্রবাসী ১৩৪৪ জাপানী কনের সাজ বার করে দেওয়া ছাড়া অন্য কোন কাজ আমাকে করতে হয়নি, কাজেই নিয়মগুলো সব ঠিক বুঝতে পারলাম না। কুলির মহা কোলাহল করে হাতব্যাগ ছাতা টুপি যা পাচ্ছে তাই এক-একজন এক-একটা তুলে নিতে লাগল । তাহলে প্রত্যেকটার জন্য কিছু কিছু মজুরী আদায় করা যায়। তাদের হাত থেকে কোনওরকমে নিষ্কৃতি পেয়ে জাহাজে গিয়ে ওঠা গেল। জিনিষপত্র যথাস্থানে রেখে ও কেবিনে তালাবদ্ধ ক'রে ডেকে দাড়িয়ে দেখতে লাগলাম জাহাজঘাটের কাগুকারখানা। এক জাপানী ভদ্রলোক সন্ত্রীক দেশে ফিরে যাচ্ছেন, তাদের বিদায় দিতে ঘাটে মহ-ভিড় লেগে গিয়েছে। জাপানী পুরুষ ত একপাল, জাপানী মেয়েও পচিশ-ত্রিশজনের কম হবে না। তা ছাড়া পার্শি ও গুজরাটি পুরুষে ঘাটট। ভৰ্ত্তি। অন্ত লোকের চলাচল করা শক্ত। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই গোটা দশ-বারে করে ফুলের মালা পরেছেন, বন্ধুদের উপহার। মালায় ধুই রজনীগন্ধ, গোলাপ, জরির -ফিতা রিবন—কত কি গাখী । ছোট বড় ফুলের তোড়া ও ফুলের ডালিরও অভাব নেই। ফুলের গর্ভে মনে হচ্ছে জাহাজ-ঘাট থেকে অকস্মাঃ বুঝি নদন-কাননে এসে পড়েছি । জাপানীরা হাটুতে হাত রেখে নমাজ পড়ার মত নীচু হয়ে হয়ে এক-একজন পাচ-সাতবার একজনকেই নমস্কার করছিল । তার সঙ্গে বিদায়বাৰ্ত্তা ব’লেও যাচ্ছিল । আমাদের মত সংক্ষেপে একটা নমস্কার ক'রে ওদের কাজ সারা হয় না। ওরা সহিষ্ণু জাত নিশ্চয়, আমার ত দেখেই মন ছটফট করছিল। বিশেষতঃ বেচারী স্বদেশগামী দম্পতির অবস্থা দেখে ত কাল্পী পাচ্ছিল। ওই শ'দুই লোককে অতবার ক’রে প্রত্যভিবাদন ক'রে ওঁদের কেন মে ঘাড়ে পিঠে বাত ধ’রে যায়নি এই আশ্চর্য । আর একটা জায়গাতেও মন্দ ভিড় হয়নি। সেটা একটা টিনের চালা । দুধারে ক্যানভাসের পরদার মধ্যে সেখানে একদল ভারতীয় স্ত্রীলোক মাটিতে সতরঞ্চি পেতে বসে আছে বোধ হয় তারা মুসলমান । তাদের সঙ্গে কুচেকাচা ছেলে বুড়ে অনেক । এতগুলো লোক এই জাহাজে চড়ে কোথায় স্বাবে ভেবে আমি অবাক হচ্ছিলাম। চারিধারের বিদায়-পৰ্ব্ব দেখছি, আমরা ত ওদেশের মানুষ নয়, আমাদের কেউ বিদায় দিতে বিশেষ আসেনি। একটিমাত্র ভদ্রলোক আমাদের তুলে দিতে এবং সকল কাজে সাহায্য করতে এসেছিলেন, তিনি মজুমদার মহাশয়ের সহকৰ্ম্ম । এমন সময় একজন বললে, “যাও, তোমাদের àÌ5 gfaeta, afy <f\*i (health examination) &c« . কাজেই আবার ডাঙ্গায় নেমে পড়তে হ’ল। টিনের ছাউনির তলায় দুটো পর্দাঘেরা ভাগে দুই ডাক্তার, একজন গুরুষ ও একজন মহিলা । মহিলাটির চেহারা দেখে মনে হ’ল মারাঠি । তার কাছে নাড়ী টেপাতে গেলাম, একট চাপরাশি বললে, “এখন নয়, আগে "ক্র"-দের।” ‘ক্র"-র দল এল সব ছড়মুড়িয়ে জাহাজ থেকে নেমে নোংরা কাপড় পরেই। ডাক্তার তাদের লাইন ক’রে • দাড় করিয়ে নাড়ী টিপে চোখ দেখে, দুই একজনের গলাও দেখে এক একজন ক'রে ধাক্কা দিয়ে পার ক’রে দিলেন : তারপর আমরা আবার গেলাম, কিন্তু ফিরিয়ে দিল । এখন নাকি ডেক প্যাসেঞ্জারদের পালা । শেষকালে হুকুম হ’ল—‘এইবার ওদিকে মেয়েদের ঘরে যাও ' ' মেয়েদের ঘরে গিয়ে দেখি একটা টেবিলে একগাদ পাসপোর্ট সামনে নিয়ে লেডি ডাক্তার ব’সে আছেন। দেশ